অবশ্যম্ভাবী ফল এখন অপেক্ষা মাত্র। নিউজিল্যান্ডের আর ছ’টা উইকেট দরকার ভারতের। প্রথম টেস্ট ম্যাচের শেষ দিন, মানে সোমবার যে কাজের জন্য ওরা নব্বই ওভার হাতে পাচ্ছে। যদি না আবহাওয়া বাধ সাধে বা নিউজিল্যান্ডের লোয়ার অর্ডার মরিয়া লড়াই করে, ভারতীয় জয় মনে হচ্ছে স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। চারশো প্লাস রানের লিড নিয়ে ভারত নিশ্চিত করে ফেলেছিল, এই ম্যাচ একটা টিম শুধু জিততে পারে।
দ্বিতীয় ইনিংসেও ভারতীয় ব্যাটিং ম্যাচের নিয়ন্ত্রণে ছিল। দারুণ ব্যাট করার পরে আরও এক বার মুরলী বিজয় আর চেতেশ্বর পূজারা তিন অঙ্কের স্কোর হাতছাড়া করল। কিন্তু রোহিত শর্মা রান পেয়ে যাওয়ায় ও নিজে তো বটেই, টিম ম্যানেজমেন্টও নিশ্চয়ই স্বস্তি পেয়েছে। রোহিত প্রতিভাবান। নিজের ক্ষমতা দেখানোর সুযোগ দিয়ে ম্যানেজমেন্ট ওর উপর যে আস্থা রাখছে, সেটা খুব ভাল।
চারশো রান তাড়া করতে নেমে নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা ভালই জানত, বেঁচে থাকার লড়াইটা ওদের পক্ষে খুব কঠিন হতে চলেছে। কিন্তু ওরা যেটা চায়নি সেটা হল শুরুতেই তিন-তিনটে উইকেট পড়ে যাওয়া। অশ্বিন ওদের টপ অর্ডার রীতিমতো ছিঁড়েখুঁড়ে দিল। যার পর থেকে ব্ল্যাক ক্যাপসকে রান তাড়ায় ক্রমশ নড়বড়ে দেখিয়েছে। পঞ্চম দিন ওরা কতক্ষণ টিকে থাকতে পারবে, বলা মুশকিল।
অশ্বিনের অনেক কিছুর জন্য প্রশংসা প্রাপ্য। শুধু দুর্দান্ত বোলিংয়ের জন্য নয়। প্রথম ইনিংসে ‘বল অফ দ্য টেস্ট ম্যাচে’ উইলিয়ামসনকে আউট করার জন্য। আর অবশ্যই নিজের ৩৭তম টেস্টে দুশো উইকেটের মাইলফলক ছোঁয়ার জন্য। টেস্টের ইতিহাসে এই কীর্তি ছোঁয়ার ব্যাপারে ও দ্বিতীয় দ্রুততম। ভারতীয়দের মধ্যে দ্রুততম। অশ্বিনের পরে আছে ডেনিস লিলি আর ওয়াকার ইউনিস, যারা ৩৮ ম্যাচে দুশো উইকেট নিয়েছিল। আর তালিকায় এক নম্বরে রয়েছেন অস্ট্রেলিয়ান লেগ-স্পিনার ক্ল্যারি গ্রিমেট, যিনি ৩৬ টেস্টে এই নজির গড়েছিলেন।
আমার দৃঢ় বিশ্বাস, অশ্বিন প্রচণ্ড দ্রুত গতিতে প্রচণ্ড উন্নতি করছে। ওর বোলিংয়ে প্রচুর বৈচিত্র যোগ হয়েছে। ব্যাটসম্যানের ভুলের জন্য অপেক্ষা করে থাকার ধৈর্যটাও অশ্বিনের আছে। আর একটা ব্যাপার মনে হয়। অনিল কুম্বলের মধ্যে ও একজন সঠিক গাইড পেয়েছে। যে একটা কঠিন দিনে অশ্বিনের পাশে দাঁড়াতে পারবে। আর ওকে তৈরি করতে পারবে, যাতে তার পরের দিন ও ব্যাটসম্যানদের মহড়ায় ফের নামতে পারে।