.
ভারতীয় ক্রিকেটার মানেই কোটি কোটি টাকার স্পনসরশিপ, বড় অঙ্কের পুরস্কার অর্থ, বিলাসবহুল জীবনযাপন।
কিন্তু কিপটে ক্রিকেটার? এমনও হয় নাকি!
ভারতীয় ক্রিকেটটাই যাঁর পরিবার, সেই যুবরাজ সিংহ বলছেন আলবাত হয়। শুধু হয়ই না, উপার্জনে ইদানীং যিনি টেক্কা দিয়েছেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকেও, তিনিই নাকি সেরা কঞ্জুস!
‘‘ঠিকই ধরেছেন। আমাদের টিমের সেরা কিপটের নাম বিরাট কোহালি,’’ বলেছেন যুবরাজ। যোগ করেছেন, ‘‘ওর হাত থেকে জলও গলে না। আমরা একসঙ্গে খেতে বেরোলে বা কেনাকাটা করলে সব সময় আমিই টাকা দিই। ওর পকেট থেকে পয়সা খসাতে প্রবল চাপ দিতে হয়। সরাসরি বলতে হয়, টাকাটা দে।’’
কিপটে-কাহিনী অবশ্য এখানেই শেষ নয়। এক দুষ্টু-মিষ্টি রেডিও সাক্ষাৎকারে যুবরাজ জানান, তাঁর তালিকায় ক’জন সিনিয়রের নামও আছে। ‘‘তবে ওদের কথা বলা যাবে না। নেহরাজি-র কথা বলতে পারি। বিয়ের পর টাকা বের করতে হলেই বলত, বুঝতেই তো পারছিস, আমার নতুন বিয়ে, এর পর বাচ্চা হবে...।’’ যুবরাজের কাছে সবচেয়ে ‘দিলদরিয়া’ অবশ্য জাভাগল শ্রীনাথ। তাঁর কথায়, ‘‘পনেরো বছর একসঙ্গে খেলার পর অবশেষে এক দিন হোটেলে নিয়ে গিয়ে ডাল-চাওল খাইয়েছিল। আমরা সেই দাওয়াতের ছবি তুলে তলায় লিখেছিলাম, পনেরো বছর পর ট্রিটের জন্য ধন্যবাদ শ্রীনাথজি।’’
সাক্ষাৎকারে যুবরাজ ক্রিকেটের পাশে নিজের জিলিপি-প্রেম থেকে সবচেয়ে বড় ভয়, খোলামেলা সব নিয়েই। সঙ্গে নানা জানা-অজানা কিস্সা। টুকরো ঝলকে যা এই রকম:
ভারতীয় টিমে অ্যাংরি ইয়াং ম্যান
‘‘এক নম্বরে বিরাট। দুইয়ে অনিল কুম্বলে। চমকাবেন না, মাঠের ভিতর অনিল ভাইয়ের চেয়ে রাগী মানুষ কমই আছে। আর হরভজন সিংহকে কী করে ভুলব। আমিও আছি, তবে আমি ওদের থেকে রাগ বেশি নিয়ন্ত্রণ করতে পারি।’’
ভারতীয় টিমের সেরা দিলওয়ালা
‘‘আশিস নেহরা, রোহিত শর্মা। দু’টো নাম হুট করে মনে আসছে।’’
সচিন, সৌরভ, রাহুল...
‘‘ইয়ে, মানে নেক্সট কোয়েশ্চেন প্লিজ।...এক বার সচিনকে ঠাকুরদা বলে আমরা খ্যাপাতে গিয়েছিলাম। মানে ওর তখন বাইশ বছর হয়ে গিয়েছে ক্রিকেটে। তার জবাবে ও টানা কিছু দিন যে ভাবে আমাদের পিছনে লেগেছিল...উফ! পাজি অসম্ভব দুষ্টু।
আর সৌরভ আমার দেখা সেরা ক্যাপ্টেন। ভারতীয় টিমকে তো ও-ই ঘুরে দাঁড়িয়ে টক্কর দিতে শিখিয়েছে।’’
স্টুয়ার্ট ব্রডকে ছয় ছক্কা
‘‘সে বার ম্যাচ রেফারি ছিলেন ওর বাবা ক্রিস ব্রড। সটান এসে বলেছিলেন, আমার ছেলের কেরিয়ার নিয়ে ছেলেখেলা করার জন্য ধন্যবাদ। অপ্রস্তুত হয়ে আমি মৃদু সুরে বলি, আমিও ওভারে পাঁচটা ছয় খেয়েছি। কেমন লাগে আমি জানি। ক্রিস তখন বলেন, তোমার শার্টটা সই করে দাও স্টুয়ার্টের জন্য। শার্টে লিখেছিলাম, ওভারে পাঁচটা ছয় আমিও খেয়েছি। তোমার মনের অবস্থা বুঝি।ভবিষ্যতের জন্য আমার সমস্ত শুভকামনা রইল।
স্টুয়ার্ট দারুণ ভাল বোলার হয়ে উঠেছে দেখে ভাল লাগে।’’
ক্যানসারের পর জীবন
‘‘বিশাল কোনও পরিবর্তন কি না জানি না। তবে জীবনের ছোট ছোট জিনিস উপভোগ করতে শিখেছি। অসুস্থ হওয়ার আগে ক্রিকেটই আমার সব কিছু ছিল। ক্যানসার হওয়ায় বুঝলাম, সবার আগে পরিবার। সেই সময় নিঃশ্বাস নিতেও কষ্ট হত। আজকাল টাটকা বাতাস, পেট ভরে খাওয়া, প্রাণ খুলে হাসার সুযোগ পেলে নিজেকে তৃপ্ত লাগে। আর যত মানুষ আমার জন্য প্রার্থনা করেছিলেন, তাঁদের কিছু ফিরিয়ে দিতে চাই। তাই চ্যারিটি গড়েছি।’’
বিয়ে এবং একরোখা যুবরাজের শান্ত হয়ে ওঠা
‘‘আরে বিয়ে করার আগে এটা দেখাতে হয় যে, আমি পরিণত হয়ে উঠেছি!’’
সবচেয়ে পছন্দের খাবার
‘‘জিলিপি! তবে চকোলেট আর আইসক্রিমও দারুণ ভালবাসি।’’
সবচেয়ে বড় ভয়
‘‘শরীরে আবার ক্যানসার ফিরে আসা। এটা আমার আতঙ্ক। তবে চারটে বছর রোগমুক্ত আছি। আরও এক বছর কাটিয়ে দিতে পারলে ক্যানসারকে হয়তো হারাতে পারব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy