জেজে। কাল এএফসি-তে সনির বাজি।
টাম্পাইন্স রোভার্সের খেলার কিছু ভিডিও দেখে নিজের স্ট্র্যাটেজি তৈরি করছেন সঞ্জয় সেন। এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে যোগ্যতা অর্জনের উদ্বোধনী ম্যাচ খেলতে নামার আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে আপাতত সিঙ্গাপুরের দলকে সরেজমিন বুঝে নেওয়ার এটাই একমাত্র পথ বাগান কোচের।
ডার্বির পরপরই বাগানের ফোকাসে আন্তর্জাতিক টুনার্মেন্টে। বুধবার খেলা। সোমবার রাতে শহরে এসে পৌঁছল সনি-প্রণয়-গ্লেনদের চ্যালেঞ্জাররা। কলকাতায় নেমে প্রথমেই যুবভারতীর মাঠ সম্পর্কে খোঁজ খবর নেয় সিঙ্গাপুরের দলটি। এ দিকে ইউটিউবে টাম্পাইন্স রোভার্সের খেলা দেখার পর তাদের বেশ কয়েক জন ফুটবলারের দিকে বাড়তি নজর দিচ্ছেন সঞ্জয়। উইং হাফে খেলা কানাডার জর্ডন ওয়েব, সিঙ্গাপুর লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা ফজরুল নওয়াজ, দক্ষিণ কোরিয়ান সেন্টার ব্যাক কুয়ান জুন এবং টাম্পাইন্স অধিনায়ক ফারুদ্দিন মুস্তাফির নাম নিজের নোটবুকে টুকে নিয়েছেন বাগান কোচ। সঞ্জয় বলছিলেন, ‘‘ইউটিউবে ওদের খেলা দেখছি বটে, তবে গোটা খেলা তো দেখা যাচ্ছে না। ম্যাচের কিছু কিছু অংশ খুঁজে বের করে দেখছি। একদম অচেনা প্রতিপক্ষ। কী স্টাইলে খেলে বা কোন পজিশনে ওদের শক্তি বেশি, সেটা বোঝার চেষ্টা করছি। অন্য জায়গা থেকেও খোঁজ খবর নিচ্ছি। সেই মতো আমার ছেলেদেরও বোঝাচ্ছি।’’
আই লিগের ভাবনা আপাতত তুলে রেখে এএফসি-কে পাখির চোখ করছেন সঞ্জয় এবং তাঁর ছেলেরা। কিন্তু তা সত্ত্বেও বাগান কোচের মুখে এখনও ইস্টবেঙ্গল ম্যাচের কথা। প্রথম একাদশের দুই ফুটবলার বলবন্ত সিংহ এবং প্রণয় হালদারকে চোটের জন্য বুধবার পাবে না মোহনবাগান। এর জন্য সঞ্জয় দায়ী করছেন ডার্বিতে ইস্টবেঙ্গলের ‘গা-জোয়ারি’ এবং ‘মারকুটে’ ফুটবলকে। সকালে প্র্যাকটিসের পর বললেন, ‘‘ইস্টবেঙ্গল ও রকম খারাপ ট্যাকল না করলে এবং রাফ ফুটবল না খেললে বলবন্ত আর প্রণয়ের চোট হত না। এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ কোয়ালিফাইংয়ের মতো ম্যাচে নিজের প্রথম দলের গুরুত্বপূর্ণ দুই ফুটবলারের মোহনবাগানের পাশে না থাকা ক্ষতি তো বটেই।’’
বলবন্তের না থাকাকে অবশ্য টিমের তারকা ফুটবলার সনি নর্ডি আলাদা গুরুত্ব দিতে নারাজ। বরং তিনি বলছেন, ‘‘বলবন্ত না থাকলেও জেজে তো আছে। আশা করি, ও বলবন্তের জায়গা পূরণ করে দেবে।’’ এ দিকে ডার্বিতে নিজের একশো শতাংশ দিতে পারেননি বলে এখনও আফসোস করে চলেছেন হাইতি স্ট্রাইকার। এ দিনও বলছিলেন, ‘‘আমি জেট ল্যাগে ক্লান্ত ছিলাম বলেই হয়তো ডার্বিতে নিজের সেরাটা দিতে পারিনি।’’ সঙ্গে অবশ্য যোগ করেন, ‘‘এখন অবশ্য ক্লান্তি নেই। আশা করছি, বুধবার একশো শতাংশ দিতে পারব।’’
এএফসির ম্যাচে মোহনবাগানের পাশে থাকার জন্য ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদেরও থাকার অনুরোধ জানাচ্ছেন সনি। ‘‘মোহনবাগান ভারতের ক্লাব হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করবে। এই ম্যাচের সঙ্গে দেশের সম্মান জড়িয়ে আছে। তাই বুধবার ইস্টবেঙ্গলের সমর্থনও আমাদের পাশে থাকা উচিত।’’ এ দিকে সোমবার থেকে বল নিয়ে অনুশীলন শুরু করলেন সদ্য চোট সারিয়ে ওঠা সুভাষ সিংহ এবং রাজু গায়কোয়াড়।
জিতলেও দাগ কাটতে পারল না ভারতের যুব দল: লড়াই করেও শেষ রক্ষা হল না বাংলার। সোমবার মোহনবাগান মাঠে দাপটের সঙ্গে খেলেও ফেডারেশনের অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের জন্য নির্বাচিত টিমের কাছে ০-২ হারল আইএফএ একাদশ। মূলত আইএফএ অ্যাকাডেমীর জন্য যে ফুটবলারদের বাছা হয়েছিল, তাদের মধ্যে থেকে কিছু ফুটবলার বেছে আইএফএ একাদশ তৈরি করেছিলেন কোচ অনন্ত ঘোষ। তাদের নিয়ে পৈলানে তিন সপ্তাহের শিবিরও হয়। এ দিন মূলত অভিজ্ঞতার অভাবেই ম্যাচটি হারতে হল বাংলার টিমকে। তা সত্ত্বেও বাংলা অন্তত তিনটি গোলের নিশ্চিত সুযোগ পেয়েছিল। একটি বল পোস্টেও লাগে। বিরতির আগে পর্যন্ত খেলার ফল ছিল গোলশূন্য। দ্বিতীয়ার্ধে ভারতের হয়ে প্রথম গোল করে অনিকেত বার্স্ট। দ্বিতীয় গোলটি করে সঞ্জীব। তবে অনূর্ধ্ব-১৬ বাংলার ছেলেদের বিরুদ্ধে নিকোলাই অ্যাডামের ভারত যে সহজ জয় পেয়েছে এমনটা বলা যাবে না। বরং আইএফএ-র দলটি যে ভাবে সুযোগ তৈরি করেছিল, সেগুলো কাজে লাগাতে পারলে খেলার ফল অন্য রকম হতেই পারত। এ দিন মোহনবাগান মাঠে খেলা দেখতে এসেছিলেন ভাইচুং ভুটিয়া এবং দীপেন্দু বিশ্বাস। দীপেন্দু বলছিলেন, ‘‘শারীরীক সক্ষমতার দিক থেকে ভারতের দলটি বেশ ভাল জায়গাতে রয়েছে। তবে টেকনিক্যালি এখনও অনেক উন্নতি দরকার। এক বছর অবশ্য সময় আছে।’’ এ দিকে জুনিয়র জাতীয় দলের কোচ নিকোলাই অ্যাডাম ছেলেদের প্রত্যাশিত পারফরম্যান্স না দেখাতে পারার জন্য মোহনবাগান মাঠকেই দুষেছেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘‘মাঠের জন্যই আমার ছেলেরা এ দিন নিজেদের সেরাটা দিতে পারেনি।’’
অন্য খেলায়
নিউ ব্যারাকপুর থানার উদ্যোগে চারদলীয় ফুটবল টুনার্মেন্ট আজ প্রজাতন্ত্র দিবসে পুলিশ লাইন মাঠে।
মঙ্গলবার
আই লিগ— ইস্টবেঙ্গল: ডিএসকে শিবাজিয়ান্স (বারাসত, ৭-০৫)।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy