Advertisement
E-Paper

সেপারেশনে এগিয়ে হিন্দুরা, মুসলিমরা ডিভোর্সে

স্বামীর থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর ভারতীয় মেয়েদের স্টেটাস ঠিক কী হয়? তাঁরা কী আইনি পথে হাঁটেন নাকি সামাজিক ভাবে বিচ্ছিন্ন থেকেই কাটিয়ে দেন বাকি জীবনটা? কতজন দ্বিতীয় বার বিয়ের করার সিদ্ধান্ত নেন?

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০১৬ ১৫:৫৭

স্বামীর থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর ভারতীয় মেয়েদের স্টেটাস ঠিক কী হয়? তাঁরা কী আইনি পথে হাঁটেন নাকি সামাজিক ভাবে বিচ্ছিন্ন থেকেই কাটিয়ে দেন বাকি জীবনটা? কতজন দ্বিতীয় বার বিয়ের করার সিদ্ধান্ত নেন? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে দেখা গিয়েছে আইনি বিচ্ছেদ ও সামাজিক বিচ্ছেদ বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে মহিলাদের ধর্মীয় ও সামাজিক অবস্থান অনেকটাই প্রভাব ফেলে। ২০১১ সালে প্রকাশিত জনগণনার রিপোর্ট অনুযায়ী, আইনি ও সামাজিক বিচ্ছেদের হার সবচেয়ে বেশি খ্রিস্টান ও বৌদ্ধদের মধ্যে। সবচেয়ে কম জৈনদের মধ্যে। হিন্দু ও মুসলিমদের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, হিন্দুরা সামাজিক ভাবে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর বেশির ভাগ সময়ই আইনি বিচ্ছেদের সাহায্য নেন না। অপরদিকে মুসলিমরা বিবাহবন্ধন থেকে বেরিয়ে আসার পর আইনি বিচ্ছেদের মাধ্যমে নিষ্পত্তি ঘটাতেই বেশি স্বচ্ছন্দ। অন্য দিকে, স্বামী বা স্ত্রীর মৃত্যুর কারণে বিধবা বা বিপত্নীক হয়ে জীবন কাটানোর তালিকায় সবচেয়ে উপরে রয়েছেন বৌদ্ধরা। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে খ্রিস্টান এবং হিন্দুরা। শিখ ও মুসলিমদের এই প্রবণতা অপেক্ষাকৃত কম।

হিন্দুদের মধ্যে ডিভোর্স আইনত বৈধ হলেও অনেক ক্ষেত্রে সামাজিক কারণে অনেক মহিলা আলাদা থাকার পরও ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত নেন না। সেই কারণেই এ দেশে প্রতি হাজার জন বিবাহিত হিন্দু মহিলার মধ্যে আলাদা থাকার মহিলার সংখ্যা যেখানে ৫.৫, সেখানে ডিভোর্স করেন মাত্র ১.৮ জন। বিচ্ছিন্ন থাকাদের মধ্যে স্বামী পরিত্যক্তারাও রয়েছেন। অবশ্য মুসলিমদের ক্ষেত্রে আইনি বিচ্ছেদের প্রক্রিয়া অনেকটাই শিথিল। স্বামীর দেওয়া মৌখিক ‘তিন তালাক’-কেই আইনত বৈধ হিসেবে ধরা হয়ে থাকে। ফলে ভারতের প্রতি হাজার জন মুসলিম মহিলার মধ্যে ৫ জন ডিভোর্সি। শিখ, জৈনদের ক্ষেত্রে এই সংখ্যা ঘোরাফেরা করছে দুই থেকে তিনের মধ্যে। তবে ডিভোর্সি মহিলার সংখ্যায় মুসলিমদের কাছাকাছি রয়েছেন খ্রিস্টান ও বৌদ্ধরা।

বৈধব্যের হিসেব করতে গিয়ে বরাবরাই দেখা গিয়েছে ভারতের সব ধর্মের মধ্যেই বিপত্নীকদের থেকে বিধবাদের সংখ্যা বেশি। গড় আয়ুর নিরিখে পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের আয়ু বেশি হওয়াকেই এর কারণ বলে ব্যাখ্যা করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে ধর্মের ভিত্তিতে হিসেব করলে দেখা যায় ভারতে মুসলিমদের গড় আয়ু অন্যান্য ধর্মের তুলনায় বেশ কম। ফলে মুসলিম বিধবার সংখ্যাও তুলনামূলক ভাবে কম। প্রতি হাজার জন বিবাহিত মহিলার মধ্যে ৭৩ জন বিধবা। হিন্দু ও শিখদের ক্ষেত্রে এই সংখ্যা ৮৮। খ্রিস্টানদের ক্ষেত্রে ৯৭ ও বৌদ্ধদের মধ্য প্রতি ১০০০ জন বিবাহিত মহিলার ১০০ জন বিধবা।

এই রিপোর্টের সঙ্গেই প্রতি গোষ্ঠীর অবিবাহিতদেরও একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয় ২০১১ সালের জনগণনায়। দেখা যায় বিবাহযোগ্য পুরুষ ও মহিলাদের মধ্যে (২১ বছরের উর্ধ্বে পুরুষ ও ১৮ বছরের উর্ধ্বে মহিলা) অবিবাহিতদের সংখ্যা হিন্দুদের ক্ষেত্রে সবচেয়ে কম। হিন্দুদের মধ্যে ১৬ শতাংশ পুরুষ ও ১০ শতাংশ মহিলা অবিবাহিত। যা থেকে হিন্দুদের মধ্যে অল্পবয়সে বিয়ের প্রবণতাও সামনে চলে আসে। অনেক ক্ষেত্রেই যা আইনত বিয়ের বয়সের আগেই সম্পন্ন হয়। অবিবাহিতদের মধ্যে খ্রিস্টানদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এই ধর্মের ২১ শতাংশ পুরুষ ও ১৮ শতাংশ মহিলা অবিবাহিত। তবে সব ধর্মের ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে অবিবাহিত মহিলাদের তুলনায় অবিবাহিত পুরুষের সংখ্যা বেশি। অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, মহিলাদের উপর বিয়ে করে সংসারী হওয়ার সামাজিক এবং পারিবারিক চাপ অনেক বেশি হওয়াই এর কারণ।

আরও পড়ুন: ‘যে ছেলেটাকে সপাটে চড় মেরেছিলাম, তার মুখটা মনে পড়ছিল’


Divorce Women census
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy