Advertisement
E-Paper

চলো পাল্টাই বনাম উল্টাই, আজ ত্রিপুরায় লড়াই

পাঁচ বছর আগের বিধানসভা, তার পরে পঞ্চায়েত ও পুরভোট, লোকসভা এবং উপজাতি এলাকায় স্বশাসিত জেলা পরিষদ (এডিসি)— সাম্প্রতিক সব নির্বাচনেই বিরোধীদের ছত্রখান করে জিতেছে সিপিএম।

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:৫০
বুথের পথে: আজ ভোট ত্রিপুরায়। রাজ্যে মোট ৪৭টি বুথের দায়িত্বে আছেন মহিলারা। সেখানে মোতায়েন করা হয়েছে মহিলা জওয়ানদেরই। শনিবার আগরতলায়। ছবি: বাপি রায়চৌধুরী

বুথের পথে: আজ ভোট ত্রিপুরায়। রাজ্যে মোট ৪৭টি বুথের দায়িত্বে আছেন মহিলারা। সেখানে মোতায়েন করা হয়েছে মহিলা জওয়ানদেরই। শনিবার আগরতলায়। ছবি: বাপি রায়চৌধুরী

টানা ২৫ বছরের বাম সরকার! আরও এক বার ক্ষমতায় ফিরে তারা কি বাংলার ৩৪-এর রেকর্ডের দিকে এগিয়ে যাবে? নাকি ‘চলো পাল্টাই’ স্লোগানে ভর করে পরিবর্তন এনে ফেলবে বিজেপি?

এই প্রশ্নের জবাব দিতেই কাল, রবিবার সকাল ৭টা থেকে ভোটের লাইনে দাঁড়়াবেন ত্রিপুরার মানুষ। রাজ্যের ৫৯টি বিধানসভা আসনের ৩ হাজার ২১৪টি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ২৫ লক্ষ ৩৬ হাজার ৫৮৯ জন ভোটারের হাতে রয়েছে ত্রিপুরার মসনদ নির্ধারণ করার চাবি। সিপিএম প্রার্থীর মৃত্যুতে চড়়িলাম বিধানসভা কেন্দ্রে ভোট স্থগিত থাকছে। আগামী ৩ মার্চ মেঘালয় ও নাগাল্যান্ডের সঙ্গে ত্রিপুরারও ভোট-গণনা। তার পরে ১২ মার্চ চড়়িলামে উপনির্বাচন।

পাঁচ বছর আগের বিধানসভা, তার পরে পঞ্চায়েত ও পুরভোট, লোকসভা এবং উপজাতি এলাকায় স্বশাসিত জেলা পরিষদ (এডিসি)— সাম্প্রতিক সব নির্বাচনেই বিরোধীদের ছত্রখান করে জিতেছে সিপিএম। কিন্তু তার পরেও এ বার উত্তর-পূর্বের এই ছোট্ট রাজ্যের বিধানসভা ভোট নিয়ে নজিরবিহীন উত্তেজনার কারণ বিজেপি-র উত্থান। ঢালাও টাকা খরচা করে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী-সহ এক ঝাঁক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীকে হাজির করে ত্রিপুরায় নিজেদের পক্ষে হাওয়া তুলতে মরিয়া হয়েছে বিজেপি-আইপিএফটি জোট। দীর্ঘ ২৫ বছরের শাসনে প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতার কিছু ঝোঁক, কিছু ক্ষোভ থাকেই। তার সঙ্গে গত দু’বছরে সংগঠনের কাঠামো তৈরি করে এখন সিপিএমের মুখোমুখি দাঁড়়িয়েছে বিজেপি।

গোটা রাজ্যের সব প্রান্ত ‘চলো পাল্টাই’ হোর্ডিংয়ে মুড়়ে দিয়েছে গেরুয়া শিবির! সোশ্যাল মিডিয়া থেকে স্থানীয় টিভি চ্যানেল ও সংবাদপত্র— সর্বত্র শুধু পদ্ম আর পদ্ম! বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি বিপ্লব দেব হাবেভাবে এখন থেকেই যেন মুখ্যমন্ত্রী! তাঁর ঘোষণা, ৫০-৫৫টা আসন পেয়ে ক্ষমতায় আসছে বিজেপি-র জোট। আর বিজেপি-র এই উত্থানের পিছনে সাংগঠনিক কারিগর সুনীল দেওধর হেসে বলছেন, ‘‘ভাল ফল করার জন্য আমরা এখানে আসিনি। জিততে এসেছি!’’

আরও পড়ুন: বাংলার বিদ্যা নিয়ে ত্রিপুরায় পছনন্দা

বিজেপি-র প্রবল আগ্রাসন ও প্রচারের সামনে কিছুটা গুটিয়ে গেলেও কয়েক মাস ধরে তলে তলে ঘর গুছিয়েছে সিপিএম। শাসক দলের অন্দরে অন্তর্দ্বন্দ্বের কাঁটা ভুলে বিজেপি-কে রুখতে সব শিবির এখন এককাট্টা। দলের অভ্যন্তরীণ হিসাব বলছে, কিছু ভোট (গত বার ৫২%) ও আসন (এখন ৫১) কমলেও সরকার লালই থাকবে। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিজন ধর অবশ্য প্রকাশ্যে বলছেন, ‘‘অনেক চক্রান্ত হচ্ছে, হবেও। দেখা যাক না!’’

বাংলা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে তাঁর মন্ত্রীরা তৃণমূলের নেতা ও পরিচিতদের কাছে বারংবার খোঁজ নিচ্ছেন, ত্রিপুরার হাল কী দাঁড়়াচ্ছে। মমতা বিলক্ষণ জানেন, এই রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় চলে এলে বাংলায় তৃণমূলের ঘাড়়ে চেপে বসবে তারা! তাই তৃণমূল নেতৃত্বও চান, সিপিএম জিতলে জিতুক। কিন্তু বিজেপি নৈব নৈব চ! কংগ্রেসের মনের কথা একই।

মোদী-শাহের রথ রোখার গুরুদায়িত্ব কাঁধে নিয়ে কয়েক দিনে গোটা রাজ্য চষে ফেলেছেন যিনি, তাঁকে অবশ্য আজ শেষ বেলায় নিরুদ্বিগ্নই দেখাল। আনন্দবাজারকে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার বললেন, ‘‘ওরা বলছে, চলো পাল্টাই। আমি বলছি, চলো উল্টাই! দিল্লি থেকে বিজেপি সরকারকে উল্টে দেওয়ার অভিযান ত্রিপুরা থেকেই শুরু হোক!’’

Tripura Tripura Assembly Election 2018 Tripura Assembly Election CPIM BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy