Advertisement
E-Paper

বিধায়ক-বন্দির দুর্গে এখন ভাঙা হাট

রাতে পাহারা দিয়েছিলেন খোদ ‘চিন্নাম্মাই’। তা-ও মহাবলীপুরমের গোল্ডেন বে রিসর্ট থেকে বিধায়কদের পালানোর সম্ভাবনা নিয়ে রীতিমতো চিন্তায় ছিল শশিকলা শিবির। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে ওই রিসর্টের তালা চাবিই কার্যত অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গেল।

অগ্নি রায়

শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:২৩
গোল্ডেন বে রিসর্টে কড়া নিরাপত্তা। মঙ্গলবার। ছবি: পিটিআই।

গোল্ডেন বে রিসর্টে কড়া নিরাপত্তা। মঙ্গলবার। ছবি: পিটিআই।

রাতে পাহারা দিয়েছিলেন খোদ ‘চিন্নাম্মাই’। তা-ও মহাবলীপুরমের গোল্ডেন বে রিসর্ট থেকে বিধায়কদের পালানোর সম্ভাবনা নিয়ে রীতিমতো চিন্তায় ছিল শশিকলা শিবির। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে ওই রিসর্টের তালা চাবিই কার্যত অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গেল। চিনাম্মার ‘আটক’ বিধায়কদের মধ্যে যাঁরা পনীরসেলভম শিবিরে যাওয়ার জন্য পা বাড়িয়ে ছিলেন তাঁরা তো মুক্তির স্বাদ পেলেনই। বাকিরাও আর আটক না থেকে পরবর্তী যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন যে যার নিজের মত করে। মাতছেন পনীরসেলভমের বাড়ির উৎসবে।

১২৯ জন বিধায়কের সমর্থন তাঁর সঙ্গে রয়েছে বলে দাবি করেছিলেন শশিকলা। বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য যত জনের সমর্থন প্রয়োজন তত জনকে বাসে চাপিয়ে গোল্ডেন বে রিসর্টে পাঠিয়ে দিয়েছিল শশিকলা শিবির। কড়া নিরাপত্তায় কার্যত দুর্গে পরিণত হয়েছিল ওই রিসর্ট। পনীরসেলভম শিবিরের দাবি ছিল, বিধায়কদের অপহরণ করা হয়েছে। মাদ্রাজ হাইকোর্টও ওই রিসর্টে বিধায়করা কোন অবস্থায় রয়েছেন তা জানতে চেয়েছিল। তখন অবশ্য পুলিশ-প্রশাসনকে ওই বিধায়করা জানান, পনীরসেলভম শিবিরই তাঁদের খুনের হুমকি দিচ্ছে। কিন্তু রিসর্ট থেকে চম্পট দেওয়া বিধায়ক সারাভানন সে কথা মানতে চাননি।

বিধায়কদের সঙ্গে দেখা করার পর সাংবাদিকদের সামনে শশিকলা। —ফাইল চিত্র

প্রমোদ এবং সুবিধের সমস্ত ব্যবস্থাই ছিল ওই চোখ ধাঁধানো রিসর্টে। সাঁতার কাটার পুল, খাওয়াদাওয়ার এলাহি বন্দোবস্ত, স্কচের সুব্যবস্থা, রক্তচাপ বাড়লে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসার জন্য আস্ত একটা মেডিক্যাল ক্যাম্প, আয়ুর্বেদিক মাসাজ পার্লার, আম্মা অভিনীত তামিল ছবি দেখার জন্য পেল্লায় হল।

আরও পড়ুন।

কুর্সি নয় কারাবাস, শশীর স্বপ্নে জল ঢাললেন দুই বাঙালি

কিন্তু তা সত্ত্বেও ‘জেল-পালানো’-র জন্য ছটফট করছিলেন অনেক বিধায়কই। যাঁদের মধ্যে অগ্রগণ্য সারাভানন। তাঁর কথায়, ‘‘আমি পেশায় এক জন ইঞ্জিনিয়ার। ওই রিসর্ট থেকে পালানোর সমস্ত ব্যবস্থাই আমি ছকে ফেলেছিলাম। অনেক বিধায়কই ওখানে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন। তাঁদের কথা ভেবেই পালানোর তোড়জোড়।’’

সারাভানন নিজে যে ভাবে পালিয়েছেন, সেটার সঙ্গে তাঁর কারিগরি শিক্ষার অবশ্য কোনও সম্পর্ক পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি ও এক সঙ্গী রাতের পরিধান বারমুডা সজ্জিত হয়েই ঝাঁপ মারেন দেড় মানুষ সমান উঁচু পাঁচিল থেকে! তারপর কোনওমতে মহাবলীপুরম থেকে পৌঁছে যান চেন্নাই। বিধায়কের দাবি, আগেই তিনি গিয়ে ওই পাঁচিল মেপে এসেছিলেন! মুখে বলছেন না বটে, তবে আজ তাঁকে ঘিরে সমর্থকদের চিৎকার দেখে অনেকের ধারণা যে এই লাফ অদূর ভবিষ্যতের রাজনীতিতে সারাভাননকে অনেকটাই এগিয়ে দিল!

প্রমোদের ব্যবস্থা থাকলেও রিসর্টে ছিল কড়া নিরাপত্তা। রিসর্টের পিছনেই ব্যাক ওয়াটার। জলপথে যাতে কেউ পালাতে না পারেন তার জন্য মৎস্যজীবীদের নৌকা চালানোও বন্ধ করে দেওয়া হয়। শেষ কয়েক দিনে আর একেবারেই ঝুঁকি না নিয়ে রিসর্টে গিয়ে স্থায়ী ভাবে ঘাঁটি গেড়ে বসে পড়েন ‘চিন্নাম্মা’। এখনও সেখানেই রয়েছেন তিনি। সন্ধ্যায় তাঁর সঙ্গে যোগ দিয়েছেন এডিএমকে পরিষদীয় দলের নয়া নেতা পালানিসামি। কিন্তু তা-ও বিধায়কদের পালানোর উৎসাহ দেখে এক রাজনীতিকের বক্তব্য, ‘‘চিন্নাম্মা যে গ্রহণযোগ্যতায় আম্মার কাছাকাছিও পৌঁছতে পারেননি তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।’’

Golden Bay Resorts MLA V. K. Sasikala Supreme Court verdict
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy