Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

সরকার গঠনের প্রশ্নে হাত-পা বাঁধা রাষ্ট্রপতির

বুথ-ফেরত সমীক্ষার পূর্বাভাস সত্যি করে বিজেপি যদি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে যায়, তা হলে তো ঝামেলা চুকেই গেল। কিন্তু লোকসভা যদি ত্রিশঙ্কু হয়, তা হলে কী করবেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়? আপাতত সকলের মনেই এই প্রশ্ন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৪ ০২:৫১
Share: Save:

বুথ-ফেরত সমীক্ষার পূর্বাভাস সত্যি করে বিজেপি যদি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে যায়, তা হলে তো ঝামেলা চুকেই গেল। কিন্তু লোকসভা যদি ত্রিশঙ্কু হয়, তা হলে কী করবেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়? আপাতত সকলের মনেই এই প্রশ্ন। সংবিধান বলছে, পরিস্থিতি যা-ই হোক না কেন, রাষ্ট্রপতির কিছুই করার নেই। যে দল বা জোট সব চেয়ে বেশি আসন পাবে, তাদের সরকার গড়ার জন্য ডাকতে তিনি বাধ্য। তার পর সেই সরকারের ভাগ্য নির্ধারণ হবে লোকসভার মাটিতে।

গোটা দেশ যখন ১৬ মে-র দিকে তাকিয়ে, তখন রাষ্ট্রপতি ভবনের অন্তরালে নিজের মতো করে পড়াশোনা শুরু করেছেন প্রণববাবু। রাষ্ট্রপতি ভবন সূত্রে বলা হচ্ছে, বরাবর ‘কপিবুক’ রাজনীতি করে আসা প্রণববাবু সংবিধানের বাইরে এক পা-ও হাঁটবেন না। অতীতে সরকার গঠনে রাষ্ট্রপতির ভূমিকা নিয়ে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, তার পুনরাবৃত্তি হতে দেবেন না তিনি।

সংবিধানের ৭৫তম অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রপতিকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের অধিকার দেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীকে লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠ সাংসদের সমর্থন পেতে হবে। সে কথা সংবিধানের ৭৫(৩)তম অনুচ্ছেদেই বলা হয়েছে। সংবিধান বিশেষজ্ঞ সুভাষ কাশ্যপ বলেন, “যে প্রাক্-নির্বাচনী জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে, তার নেতাকেই সরকার গঠনের জন্য রাষ্ট্রপতিকে ডাকতে হবে। এখানে অন্য কিছু করার সুযোগ নেই। তবে ত্রিশঙ্কু লোকসভা গঠন হলে রাষ্ট্রপতির সামনে অনেক রকম সম্ভাবনা এসে যায়।” কিন্তু সেখানেও রাষ্ট্রপতি কী করতে পারেন, আর কী করতে পারেন না, তা পূর্বনির্ধারিত বলেই কাশ্যপের মত।

আইনজ্ঞ বিশ্বজিত্‌ দেবও বলছেন, “কোনও পরিস্থিতিতেই রাষ্ট্রপতির খুব বেশি অ্যাডভেঞ্চার বা গবেষণা করার সুযোগ নেই। ঠিক যে ভাবে রাষ্ট্রপতিকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত মেনে নিতে হয়, ঠিক সেই ভাবে সরকার গঠনের ক্ষেত্রেও রাষ্ট্রপতির ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের কোনও জায়গা নেই।”

সংবিধান বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যা, অন্যান্য ক্ষেত্রের মতো রাষ্ট্রপতির ভূমিকা এখানেও ‘জাঁকজমকপূর্ণ সাক্ষীগোপাল’-এর মতোই। তিনি ফুলদানির ফুল। সাধারণ ভাবে রাষ্ট্রপতি সংখ্যাগরিষ্ঠ দল বা জোটের প্রধানকেই সরকার গড়ার জন্য ডাকবেন। যদি একাধিক দল বা জোট সরকার গড়ার দাবিদার হয় এবং এই দাবি করে যে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ সাংসদের সমর্থন জোগাড় করতে পারবে, তা হলেও সব চেয়ে বড় দল বা জোটকেই আমন্ত্রণ জানাতে হবে তাঁকে। রাষ্ট্রপতি তাদের সময় বেঁধে দিয়ে তার মধ্যে লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দিতে বলতে পারেন। তার পর সেই সরকার টিকবে কি না, তা ঠিক করবে লোকসভাই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

government formation president pranab mukhopadhay
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE