Advertisement
E-Paper

দু’কামরার ফ্ল্যাট থেকে গুগ্‌ল সিইও, পিচাইয়ের অভিনব যাত্রা

এ যেন বলিউডি রূপকথা! চেন্নাইয়ের দু’কামরার ফ্ল্যাট থেকে শুরু করে মোবাইল দুনিয়ার সবচেয়ে ক্ষমতাশালী ব্যক্তির যাত্রা। তিনি সুন্দর পিচাই। গুগ্‌লের মতো বহুজাতিক সংস্থার সিইও। তবে, এটুকু বললে তাঁর যাত্রাপথের ব্যাপ্তি বোঝা সম্ভব নয়। তা বুঝতে ফিরে যেতে হয় চেন্নাইয়ের সেই ফ্ল্যাটে, যেখানে তিনি তাঁর শৈশব-কৈশোর কাটিয়েছেন।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৫ ২১:৫৭
এএফপি-র তোলা ফাইল চিত্র।

এএফপি-র তোলা ফাইল চিত্র।

এ যেন বলিউডি রূপকথা! চেন্নাইয়ের দু’কামরার ফ্ল্যাট থেকে শুরু করে মোবাইল দুনিয়ার সবচেয়ে ক্ষমতাশালী ব্যক্তির যাত্রা। তিনি সুন্দর পিচাই। গুগ্‌লের মতো বহুজাতিক সংস্থার সিইও।

তবে, এটুকু বললে তাঁর যাত্রাপথের ব্যাপ্তি বোঝা সম্ভব নয়। তা বুঝতে ফিরে যেতে হয় চেন্নাইয়ের সেই ফ্ল্যাটে, যেখানে তিনি তাঁর শৈশব-কৈশোর কাটিয়েছেন।

সোনার চামচ দিয়ে মুখে দিয়ে জন্মাননি সুন্দর পিচাই। বরং দু’কামরার ফ্ল্যাটে ঠাসাঠাসি করেই দিন কাটত তাঁর পরিবারের চার সদস্যদের। জায়গার অভাবে সুন্দর আর তাঁর ছোট ভাইকে ঘুমোতে হতো বসার ঘরে। যে ঘরে টেলিভিশন ছিল বিলাসিতা মাত্র। বেড়ে ওঠার সময়ে নিজেদের গাড়িতে যাতায়াত তাই কল্পনাতেই ছিল। ফলে বাসই ছিল যাতায়াতের একমাত্র বাহন। ধীরে ধীরে সংসারে সচ্ছলতা এলে অবশ্য পরিবারে এসেছিল নীল রঙের ল্যামব্রেটা স্কুটার। রেগুনাথের সেই স্কুটারেই জায়গা হতো গোটা পরিবারের। চালকের আসনে বাবার সামনে দাঁড়িয়ে সুন্দর আর পিছনের সিটে মায়ের সঙ্গে বসে তার ভাই।

সুন্দরের বাবা রেগুনাথ পিচাই কাজ করতেন ব্রিটিশ বহুজাতিক সংস্থা জিইসি-তে। সেই সঙ্গে ইলেকট্রিক্যাল যন্ত্রাংশ তৈরির একটি কারখানায় ম্যানেজারের দায়িত্বও সামলাতেন তিনি। সংসার চালানোর জন্য কঠোর সংগ্রাম করতে হয়েছে সুন্দরের মাকেও। সন্তারধারণের আগে পর্যন্ত স্টেনোগ্রাফারের কাজ করতেন তিনি। সে দিনগুলির কথা মনে পড়লে সুন্দরের ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার বাবা বলেন, “ঘরে ফিরে সুন্দরের সঙ্গে অফিসের গল্প করতাম। সারা দিনে কী কী প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হতো, গল্পের ফাঁকে সে প্রসঙ্গও উঠে আসতো।” রেগুনাথের কথায়: “সেই অল্প বয়সেও আমার কাজ নিয়ে আগ্রহের অন্ত ছিল না তাঁর। আমার মনে হয় সেই বয়স থেকে প্রযুক্তির নেশাই টানতো তাঁকে।”

প্রযুক্তির সুবিধার কথা সুন্দর বোধহয় প্রথম বুঝতে পারে যখন তার বয়স ১২। সে সময়ই তাদের ফ্ল্যাটে টেলিফোন আসে। টেলিফোনের ডায়াল করা প্রায় সবক’টি নম্বরই তার কণ্ঠস্থ ছিল। সে দিনের সেই স্মৃতিতে ডুব দিয়ে গুগ্‌ল-সিইও সুন্দর পিচাই বলেন, “আমার কাকা ফোন করে বলতেন, ‘আমি ফোননম্বর হারিয়ে ফেলেছিলাম। কিন্তু তুমি এক বার তা ডায়াল করে আমাকে সাহায্য করেছিলে।’ ”

বরাবরেই মেধাবী ছাত্র সুন্দরের বিদেশে পড়ার খরচ আর বিমানভাড়া জোগাতে এক সময় ধার করতেও হয়েছিল তাঁর বাবাকে। এমনকী, নিজের এক বছরের বেতনের টাকাতেও হাত দিতে হয়েছিল রেগুনাথকে। সুন্দর ভোলেননি সেই দিনের কথা। তিনি বলেন, “আমাদের পড়াশোনার খরচ জোগাতে অনেক আত্মত্যাগ করেছেন আমার মা-বাবা। এমনকী, পরিবারের সঞ্চয়েও টান পড়েছিল।”

বিদেশে পড়তে এসেও আর্থিক দিক যথেষ্ট বাধার মুখে পড়েছিলেন সুন্দর। তবে, সেই বাধা কাটিয়ে ধীরে ধীরে নিজের পথ তৈরি করে নেন তিনি। ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল-এ গুগ্‌লে চাকরির ইন্টারভিউ দিতে এসে জানতে পারেন বাজারে ‘জি-মেল’ ছাড়ছে সংস্থা। তা-ও বিনামূল্যে! পিচাই মনে করেছিলেন, সেটি বুঝি ‘এপ্রিল ফুল’ পালনেরই অঙ্গ।

মঙ্গলবার ল্যারি পেজ-এর থেকে সুন্দর পিচাইয়ের হাতবদল হল সংস্থার সিইও পদের দায়িত্বভার। রূপকথা নয়, বাস্তব!

sundar pichai sundar pichai google ceo google ceo two bhk flat kharagpur iit iit kharagpur sundar pichai life sundar pichai journey
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy