কাঠুয়া ও উন্নাও গণধর্ষণ নিয়ে যখন তোলপাড় দেশ, তখনই সামনে এল আরও একটি ধর্ষণের ঘটনা। এ বার প্রধানমন্ত্রীর রাজ্যে।
১১ বছরের একটি বালিকার দেহ উদ্ধার হয়েছে গুজরাতের সুরাতে, পান্ডসেরা এলাকায় একটি জঞ্জালের স্তূপ থেকে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, মেয়েটিকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। তার ছোট্ট শরীরে অন্তত ৮০টি আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। এখনও পর্যন্ত পরিচয় জানা যায়নি বালিকার। পুলিশের সন্দেহ, মেয়েটির বাড়ি অন্য কোথাও। তাকে মেরে পান্ডসেরা এলাকায় ফেলে যাওয়া হয়েছিল। বালিকা ও তার পরিবারের বিষয়ে কোনও তথ্য দিতে পারলে ২০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে, ঘোষণা করেছে গুজরাত পুলিশ।
এরই মধ্যে কাঠুয়ার আট বছরের শিশুর ধর্ষণ ও খুনের ঘটনাকে ‘ভয়ানক’ আখ্যা দিয়েছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস। তাঁর মুখপাত্র স্টেফানি দুজ্জারিক এ দিন বলেন, ‘‘আমরা সংবাদমাধ্যম থেকে ঘটনাটা জেনেছি। আশা করি অপরাধীদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে।’’ আজই কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি রাজ্যের হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিকে চিঠি লিখে বিশেষ ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট গঠন করার আবেদন জানিয়ে ৯০ দিনের মধ্যে বিচার শেষ করার প্রস্তাব দিয়েছেন।
শনিবারই উন্নাও ধর্ষণে অভিযুক্ত বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিংহ সেঙ্গারকে ৭ দিন সিবিআই হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। যে মহিলা ধর্ষিতাকে লোভ দেখিয়ে সেঙ্গারের বাড়ি নিয়ে গিয়েছিলেন, তাঁকেও আজ গ্রেফতার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: আপাতত ইস্তফাতেই জোট বাঁচল কাশ্মীরে
কিন্তু কাঠুয়া-কাণ্ড ঘিরে কুৎসাও অব্যাহত। একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের কোচি শাখার অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার বিষ্ণু নন্দকুমার ফেসবুকে লেখেন, ‘‘ভালই হয়েছে মেয়েটাকে এখনই মেরে ফেলা হয়েছে। না-হলে বড় হয়ে ও-ই ভারতের উপরে বোমা ফেলত।’’ এই পোস্ট দেখেই ক্ষোভ উগরে দিতে থাকেন বহু সাধারণ মানুষ। ব্যাঙ্কের পেজেও বিরূপ মন্তব্য করেন অনেকে। দ্রুত কমতে থাকে ব্যাঙ্কের রেটিং। #ডিসমিস ইয়োর ম্যানেজার নামে পেজ তৈরি হয় টুইটারে।
এই অবস্থায় নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ডিঅ্যাক্টিভেট করে দেন বিষ্ণু। তাতেও অবশ্য রেহাই মেলেনি। তাঁকে বরখাস্ত করেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। যদিও ব্যাঙ্কের দাবি, কাজে গাফিলতির জন্য বুধবারই বরখাস্ত হয়েছেন তিনি। বিষ্ণুর নামে মামলাও করেছে পুলিশ।
এই বিতর্কের মাঝে কাঠুয়ায় নিহত শিশুর মা আজ বলেছেন, ‘‘একটাই প্রার্থনা, অপরাধীদের ফাঁসি হোক। যাতে অন্য কোনও পরিবারকে এমন দিন দেখতে না হয়।’’ আর নির্ভয়ার মায়ের হতাশ মন্তব্য, ‘‘অপরাধীরা সাজা না পেলে, অপরাধ তো ঘটবেই।’’ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘উন্নাওয়ের ঘটনা তো ঘটেছে এক বছর আগে। আন্দোলনের পরে, কোর্টের চাপে গ্রেফতার হল অপরাধী। প্রশাসনের নড়ে বসতে এত দেরি হবে কেন?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy