Advertisement
E-Paper

৪৫ মিনিট ধরে বন্ধ হৃদ্‌স্পন্দন, তা-ও বেঁচে উঠল তিন মাসের শিশু!

হৃদ্‌পিণ্ডে ফুটো নিয়েই জন্মেছিল শিশুটি। অস্ত্রোপচার করে তা ঠিক করতে গিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। সে সময়ই প্রায় বন্ধ হয়ে যায় হৃদ্‌স্পন্দন। ৪৫ মিনিট ধরে একনাগাড়ে বন্ধ থাকে তা। কিন্তু, আশ্চর্যজনক ভাবে ৪৫ মিনিট পর সার ফিরে আসে তার দেহে।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০১৭ ১৯:৩৮
ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

হৃদ্‌পিণ্ডে ফুটো নিয়েই জন্মেছিল শিশুটি। অস্ত্রোপচার করে তা ঠিক করতে গিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। সে সময়ই প্রায় বন্ধ হয়ে যায় হৃদ্‌স্পন্দন। ৪৫ মিনিট ধরে একনাগাড়ে বন্ধ থাকে তা। কিন্তু, আশ্চর্যজনক ভাবে ৪৫ মিনিট পর সার ফিরে আসে তার দেহে। বেঁচে ওঠে তিন মাসের আরাধ্য ওয়াঘ। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এ বার থেকে স্বাভাবিক ভাবে জীবনযাপন করতে পারবে আরাধ্য।

উত্তর-পশ্চিম মহারাষ্ট্রের ধুলে জেলায় অত্যন্ত গরিব পরিবারে জন্ম আরাধ্যর। গর্ভে থাকাকালীনই ধরা পড়ে, তার হৃদ্‌পিণ্ডে ফুটো রয়েছে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এ রকম অবস্থায় অনেক মা-বাবাই সন্তানের জন্ম দিতে পিছপা হন। কারণ, জন্মের পর এ ধরনের শিশুদের নানা রকম শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। কিন্তু, আরাধ্যর মা-বাবা সন্তানের জন্মের সিদ্ধান্ত নেন।

আরও পড়ুন

দিল্লির পার্কে মহিলা সাংবাদিকের উপর হামলা, অবস্থা আশঙ্কাজনক

জন্মের পর থেকে আরাধ্যর দেহের রং নীল হতে থাকে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তার ফুটো ছাড়াও হৃদ্‌পিণ্ড থেকে রক্ত বের হওয়ার পথটি অত্যন্ত সকীর্ণ ছিল। ফলে রক্তে অক্সিজেন সঞ্চালনে তা বাধা তৈরি করত। এর ফলে আরাধ্যর দেহ ক্রমশ নীল হয়ে উঠছিল। চলতি কথায় এ ধরনের শিশুদের ‘ব্ল-বেবিস’ বলা হয়। ওই সমস্যার ফলে দিনকে দিন আরাধ্যর বাঁচার আশাও কমে আসছিল। ধুলে জেলার সে রকম উন্নত চিকিৎসা পরিষেবাও নেই। ফলে ছেলের চিকিৎসার জন্য মুম্বই আসার সিদ্ধান্ত নেন আরাধ্যর মা-বাবা। সেখানেই একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাকে। সেই হাসপাতালে চিকিৎসক তথা চিফ পেডিয়াট্রিক কার্ডিয়াক সার্জন বিশ্ব পণ্ডা বলেন, “জন্মের পর থেকেই আরাধ্যর রক্তে মাত্র ৫০-৬০ শতাংশই অক্সিজেন পৌঁছত। এর ফলে তার দেহ নীল হতে থাকে। তা ছাড়া, বুকে সংক্রমণের কারণে তার শারীরিক সমস্যা আরও জটিল আকার নেয়।”

আরও পড়ুন

ধূমপানের কারণে মৃত্যুর হারে বিশ্বে প্রথম চারে ভারত, জানাল সমীক্ষা

রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণজনিত সমস্যা মেটাতে গত সপ্তাহে মুম্বইয়ের ওই হাসপাতালে আরাধ্যর হৃদ্‌পিণ্ডের অস্ত্রোপচার শুরু হয়। ‘বিটি সান্ট সার্জারি’ নামে পরিচিত ওই অস্ত্রোপচারের ২৪ ঘণ্টা পরে আরাধ্যর স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটতে থাকে। রক্তচাপ কমে আসতে থাকে। এক সময় তার হৃদ্‌পিণ্ড কাজ করা পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়। এর পরেই কৃত্রিম উপায়ে যন্ত্রের সাহায্যে তা চালু করার চেষ্টা শুরু করেন চিকিৎসকেরা। বিশ্ব পণ্ডা বলেন, “সে সময় ৪৫ মিনিট ধরে বন্ধ থাকে আরাধ্যর হৃদ্‌স্পন্দন। তা ফের চালু করতে ওই ৪৫ মিনিট ধরে আরাধ্যর বুকে ধীরে ধীরে মালিশ করতে থাকি। যাতে দেহে রক্ত সঞ্চালন শুরু হয়।” এর পরই ফিরে আসে আরাধ্যর হৃদ্‌স্পন্দন। দু’দিন পরে তার দেহের কাজকর্ম স্বাভাবিক হয়। তাকে স্বাভাবিক খাবার দেওয়া শুরু করা হয়। কয়েক দিনের মধ্যেই আরাধ্যকে ভেন্টিলেশন থেকে বাইরে আনা সম্ভব হয়।

আরাধ্যকে জীবনদান করলেও তার মা-বাবার থেকে এক টাকাও নেননি ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আরাধ্যর বাবা রবীন্দ্র ওয়াঘ সে কথা বোধবয় কোনও দিন ভুলতে পারবেন না। তিনি বলেন, “আমার ছেলেকে নতুন জীবনে ফিরিয়ে আনার জন্য হাসপাতাল, বিশেষ করে বিশ্ব পণ্ডার কাছে সারা জীবন ঋণী হয়ে থাকব। আমরা খুবই গরিব। গ্রামের বাড়িতে নুন আনতে পান্তা ফুরোয়। কিন্তু, যে ভাবে ডাক্তারবাবুরা নিজেদের ছেলের মতো আমার আরাধ্যর দেখাশোনা করেছেন তাতে সকলকে ধন্যবাদ জানাই।”

Miracle Baby Miraculous Survival Heart Function 45 Minutes Heartbeat
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy