Advertisement
E-Paper

আমিরি বচনে বিতর্কের বান, জলঘোলা দেশত্যাগ নিয়েই

অসহিষ্ণুতাকে ছাপিয়ে গেল দেশত্যাগ বিতর্ক। আমির খান এমনিতে খুব বেশি কথা বলেন না মিডিয়ায়। সেই তিনিই সোমবার দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে বলেন, দেশ জুড়ে অসহিষ্ণুতার পরিবেশ নিয়ে রীতিমতো আতঙ্কিত তাঁর স্ত্রী কিরণ। এমন চলতে থাকলে এ দেশ ছেড়ে অন্য কোথাও যাওয়া উচিত কি না, সে ভাবনাও কিরণের মাথায় এসেছে। আমির বলেন, ‘‘জীবনে এই প্রথম বার এই রকম কোনও কথা আমাকে বলল কেউ।’’

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৫ ০৩:৩৬
আমির খানের বাড়ির বাইরে পুলিশি প্রহরা। মঙ্গলবার মুম্বইয়ে। ছবি: এএফপি।

আমির খানের বাড়ির বাইরে পুলিশি প্রহরা। মঙ্গলবার মুম্বইয়ে। ছবি: এএফপি।

অসহিষ্ণুতাকে ছাপিয়ে গেল দেশত্যাগ বিতর্ক।

আমির খান এমনিতে খুব বেশি কথা বলেন না মিডিয়ায়। সেই তিনিই সোমবার দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে বলেন, দেশ জুড়ে অসহিষ্ণুতার পরিবেশ নিয়ে রীতিমতো আতঙ্কিত তাঁর স্ত্রী কিরণ। এমন চলতে থাকলে এ দেশ ছেড়ে অন্য কোথাও যাওয়া উচিত কি না, সে ভাবনাও কিরণের মাথায় এসেছে। আমির বলেন, ‘‘জীবনে এই প্রথম বার এই রকম কোনও কথা আমাকে বলল কেউ।’’

আমিরের এই মন্তব্য নিয়েই আজ সারা দিন তোলপাড় হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়া এবং রাজনীতির ময়দান। অসহিষ্ণুতার প্রসঙ্গটি পিছনে চলে গিয়ে আমির দেশ ছাড়ার কথা বলে ঠিক করেছেন কি করেননি, সেটাই হয়ে ওঠে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। সেই দলে শাসক এবং বিরোধী পক্ষের ছোট-বড়-মাঝারি নেতারা যেমন আছেন, তেমনই বিপুল ভাবে আছে বলিউড। যা-ই ঘটে থাকুক না কেন, দেশ ছাড়ার কথা বলা আমিরের উচিত হয়নি— সংখ্যাগরিষ্ঠের বক্তব্য সেটাই। এর মধ্যে বিজেপি-ঘনিষ্ঠরা যেমন আছেন, তেমনই আছেন দলীয় রাজনীতির বাইরে থাকা তারকারাও।

অতএব আমিরের জন্য মুহূর্তটা অন্তত ‘অল ইজ ওয়েল’ নয়!

অথচ দিন কয়েক আগেও এর উল্টো ছবিই দেখা গিয়েছিল। এ মাসের গোড়ায় শাহরুখ খান যখন অসহিষ্ণুতা নিয়ে মুখ খুলে বি়জেপির কট্টরপন্থীদের তোপের মুখে পড়েছিলেন, তখন বলিউড শাহরুখের পাশেই ছিল। এমনকী, অনুপম খের বা হেমা মালিনীর মতো বিজেপি শিবিরের তারকারাও প্রকাশ্যে বলেছিলেন, শাহরুখকে পাক জঙ্গির সঙ্গে তুলনা করা বা তাঁকে পাকিস্তানে চলে যেতে বলা একেবারেই উচিত হয়নি। বলিউডের ঐক্যেও তাই দৃশ্যত কোনও চিড় ধরেনি।

কিন্তু আমিরের বেলায় ঘটেছে ঠিক এর বিপরীত। এ বারে বি়জেপি-ঘনিষ্ঠরা তো বটেই, অন্যরাও বেশির ভাগই আমিরের মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন। যেমন, ঋষি কপূর। কিছু দিন আগে ঋষি নিজে গোমাংস-ফতোয়ার বিরোধিতা করেছিলেন। সেই তিনিই এ দিন আমিরকে মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘‘মিস্টার অ্যান্ড মিসেস আমির খান, দেশ যখন খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, যখন গোটা ব্যবস্থাটাকে সংশোধন করা দরকার হয়ে পড়েছে, তখন সেই মেরামতিটা করুন। বদল আনুন। সেটাই নায়কের উচিত কাজ।’’ অর্থাৎ ঋষিও মানছেন যে সময়টা খারাপ! কিন্তু তার জন্য দেশ ছাড়ার ভাবনাকে প্রশ্রয় দিতে তিনি নারাজ।

বস্তুত মঙ্গলবার সারা দিন ধরে আমিরকে নিয়ে যত কথা, যত বিতর্ক হয়েছে, তার সিংহভাগ জুড়ে ছিল এই প্রসঙ্গটাই। রাজনীতির পর্যবেক্ষকরা অনেকেই বলছেন, ‘মিস্টার পারফেকশনিস্ট’ বলে পরিচিত আমির অসহিষ্ণুতা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে দেশপ্রেমের ভাবাবেগে ঘা দিয়ে বসেছেন। সেই কারণে বলিউডও বিভক্ত হয়ে গিয়েছে।

সোমবার রাতেই টুইট করেন অনুপম খের। প্রশ্ন তোলেন, ‘‘গত সাত-আট মাসে এমন কী হল যে, ‘অতুলনীয় ভারত’ হঠাৎ ‘অসহিষ্ণু’ হয়ে উঠল!’’ ভারতীয় পর্যটনের বি়জ্ঞাপন অতুলনীয় ভারতের (ইনক্রেডিবল ইন্ডিয়া) ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর আমির। অনুপমের খোঁচা সেই দিকে। আমিরের উদ্দেশে বর্ষীয়ান অভিনেতা তথা বিজেপি নেতার কটাক্ষ, ‘‘কিরণকে কি তুমি জি়জ্ঞেস করেছ, কোন দেশে যেতে চায় ও? তুমি কি ওকে বলেছ, এই দেশটাই তোমায় আমির খান বানিয়েছে ..!’’

বিজেপির আর এক তারকা সাংসদ পরেশ রাওয়াল এমনিতে খুব একটা মুখ খোলেন না। মঙ্গলবার সকালে টুইটারে সক্রিয় হয়ে ওঠেন তিনিও। তাঁরও বক্তব্য, ‘‘আমির যদি সত্যিই লড়াকু হয়ে থাকেন, তা হলে তিনি দেশের পরিস্থিতি বদলানোর চেষ্টা করবেন! পালাবেন না!’’ ঠিক যেমন, ‘‘এক জন প্রকৃত দেশপ্রেমী কখনও কঠিন সময়ে (যদি আদৌ তা-ই হয়ে থাকে) তার মাতৃভূমিকে ত্যাগ করে না!’’

আমিরের উদ্দেশে এই সব টুইট বহু দর্শককেই মনে পড়িয়ে দিয়েছে, আমিরেরই সুপারহিট ছবি ‘রং দে বসন্তী’র সংলাপ— ‘কোনও দেশ নিখুঁত হয় না। তাকে নিখুঁত করে তুলতে হয়।’ ২০০৬ সালে সে ছবি মুক্তির সময় নর্মদা আন্দোলনের পাশে দাঁড়িয়ে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন আমির। কিন্তু তার সঙ্গে এ বারের তুলনা চলে না। কারণ আমিরের দেশপ্রেম আজ প্রশ্নের মুখে। ‘রং দে বসন্তী’তে আমিরের সহ-অভিনেতা অনুপম আজ তাঁকে প্রশ্ন ছুড়ছেন, ‘‘দেশটা যদি অসহিষ্ণু হয়ে গিয়ে থাকে, তা হলে লক্ষ লক্ষ ভারতীয়কে কী পরামর্শ দেবেন আপনি? অন্য দেশে যেতে বলবেন?’’ অনুপম টেনে এনেছেন আমিরের টিভি শো ‘সত্যমেব জয়তে’-র কথা। সেখানে সমাজের বিভিন্ন কুপ্রথা নিয়ে কথা বলতেন আমির। সেগুলি থেকে বেরনোর উপায় নিয়ে আলোচনা করতেন। অনুপমের অভিযোগ, সেই পথ থেকে এখন সরে যাচ্ছেন আমির নিজেই।

অভিনেত্রী রবিনা টন্ডনের প্রশ্ন— মুম্বইয়ে যখন পরপর বিস্ফোরণ হয়েছে, ২৬/১১ হামলা হয়েছে, তখন নিরাপত্তার অভাব বোধ করেননি আমির? তাঁর কটাক্ষ, ‘‘অনেকেই আসলে মোদীর প্রধানমন্ত্রী হওয়াটা মানতে পারেন না। সেটা খোলাখুলি না বলে তাঁরা এখন গোটা দেশের বদনাম করতে নেমেছেন!’’

কিন্তু ঘটনা হল, আমির কোনও দিনই আলাদা করে বিজেপি বা মোদী-বিরোধী বলে পরিচিত নন। শাহরুখকে বরং অতীতে কংগ্রেসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বজায় রাখতে দেখা গিয়েছে। বিজেপির সঙ্গে সখ্য ছিল না তাঁর। মোদীর গুজরাতে তাঁর ছবি নিয়ে সমস্যাও হয়েছে। আমির অবশ্য মোদী ক্ষমতায় আসার পরে আলাদা করে দেখা করতে গিয়েছিলেন তাঁর সঙ্গে। মোদীর ‘স্বচ্ছ ভারত’ প্রচারের মুখ আমির। সকন্যা লালকৃষ্ণ আডবাণীর পাশে বসে আমিরকে সিনেমা দেখতে দেখা গিয়েছে। সাম্প্রতিক ‘পিকে’ ছবির ধন্যবাদ তালিকাতেও ছিল আডবাণীর নাম। মোদী সরকারের সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রী নাজমা হেপতুল্লা আমিরের আত্মীয়।

এমনকী, যে অনুষ্ঠানে আমির অসহিষ্ণুতা নিয়ে এত কথা বলেছেন, সেখানে অরুণ জেটলি, বেঙ্কাইয়া নায়ডুর পাশেই বসেছিলেন তিনি। আমিরের বক্তৃতার সময় জেটলি-বেঙ্কাইয়া না থাকলেও সেখানে ছিলেন রবিশঙ্কর প্রসাদ এবং রাজীবপ্রতাপ রুডি।

রাজধানীর রাজনীতি-চর্চায় তাই আর একটা প্রশ্নও উঁকি মারছে। বিজেপির একাংশের মধ্যেই মোদী-অমিত শাহ জুটির বিরুদ্ধে যে অসন্তোষ দানা বাঁধছে, আমির কি কোনও ভাবে তাঁদের মুখপাত্র হয়ে কথা বললেন? লক্ষণীয় ভাবে এ দিন বেঙ্কাইয়ার প্রতিক্রিয়া ছিল, ‘‘কেউ কেউ লোকজনকে বিপথে চালনা করছেন, কেউ কেউ বিপথে চালিত হচ্ছেন। কে কোন দলে পড়েন, সেটা বলতে চাই না।’’

যোগী আদিত্যনাথদের মতো কট্টর নেতারা অবশ্য যথারীতি অন্যান্য বারের মতোই গা-ঝাড়া দিয়ে উঠেছেন। তাঁরা বলছেন, ‘‘আমির চাইলে চলে যান। দেশ ছাড়লে জনসংখ্যা কমবে।’’ আজ আমিরের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখাতে চলে যায় হিন্দু সেনার দল। দিল্লিতে তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগও দায়ের হয়। কিন্তু সামগ্রিক ভাবে বিজেপির প্রতিক্রিয়া এ বার শুধু কট্টরপন্থীদের মুখ থেকেই বেরোয়নি। বরং দল ও সরকারের ওজনদার নেতা-মন্ত্রীরা একযোগে সরব হয়েছেন। রাজনৈতিক মোকাবিলার রাস্তা নিয়েছেন।

বিরোধী শিবিরের রাহুল গাঁধী, অরবিন্দ কেজরীবালরা যখন আমিরের সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন, বিজেপি সামনে এনেছে শাহনওয়াজ হুসেন, মুখতার আব্বাস নকভির মতো সংখ্যালঘু নেতাদের। শাহনওয়াজ বলেন, ‘‘আমির খান ভয় পাচ্ছেন না। ভয় পাওয়াচ্ছেন। আর রাহুল গাঁধী যখন সমর্থন করলেন, তখনই স্পষ্ট এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে করা।’’ নকভি বলেন, ‘‘আমরা আমিরকে দেশ ছাড়তে দেব না। তিনি এ দেশে নিরাপদ। কিন্তু আমিরকে যাঁরা সম্মান দিয়েছেন, এ ধরনের রাজনৈতিক মন্তব্য তাঁদের প্রতি অপমান।’’ মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী স্মৃতি ইরানির দাবি, ‘‘আমির যে খোলাখুলি মত প্রকাশ করতে পারছেন, সেটিই সহিষ্ণুতার পরিচয়।’’

অনেকটা এই ধরনের যুক্তি

বলিউড থেকেও এসেছে। রামগোপাল বর্মার দাবি, ‘‘দেশের সুপারস্টার তিন খান। এর পরেও অসহিষ্ণুতা কোথায়?’’ ‘ওএমজি’-র মতো ছবিতে অভিনয় করা পরেশ লিখেছেন, ‘‘পিকে’ হিন্দুদের বিশ্বাসে নাড়া দিয়েছিল। আমির তার জন্য সংখ্যাগরিষ্ঠ আক্রোশের শিকার হননি। উল্টে ছবিটা কোটি কোটি টাকা কামিয়েছিল।’’ উল্টো দিকে আমিরকে সমর্থন যাঁরা করেছেন, তাঁরা বেশির ভাগই বিরোধী শিবিরের লোক বলে পরিচিত। যেমন আপ-সমর্থক সঙ্গীতকার বিশাল দদলানী। যেমন কংগ্রেস নেতা রাজ বব্বর। চিত্রপরিচালক সঈদ মির্জা বা সঞ্জয় গুপ্ত অবশ্য কোনও শিবিরভুক্ত না হয়েও আমিরের পাশে দাঁড়িয়েছেন।

তবে অনেকেই মানছেন যে, জনমানসে লগান-সরফরোশ-থ্রি ইডিয়টস-পিকে’র আমিরের যে দেশপ্রেমী ভাবমূর্তি ছিল, দেশত্যাগ-বিতর্ক তাতে কিছুটা দাগ এঁকে দিল। এআইএমআইএম নেতা আসাউদ্দিন ওয়েসি যেমন বললেন, সঙ্ঘ পরিবারের রাজনীতির ফাঁদে পা দিয়ে মুসলমানরা মোটেই দেশ ছাড়বেন না। তাঁরা ভারতীয় হিসেবেই মাথা উঁচু করে থাকবেন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় এ দিন ট্রেন্ডিং-এ প্রথম সারিতে ছিলেন আমির। বহু সাধারণ মানুষও প্রশ্ন তুলেছেন, পৃথিবীতে এখন নিরাপদ জায়গাটা ঠিক কোথায়? এর পাশেই রয়ে যাচ্ছে, মৌলবাদী ফতোয়া মাথায় নিয়ে দেশ ছাড়া তসলিমা নাসরিনের টুইট: অসহিষ্ণুতা সর্বত্র আছে। আমির এবং তাঁর পরিবারের জন্য ভারতই সবচেয়ে নিরাপদ।

শাহরুখ ফের মুখ খুললেন

সংবাদ সংস্থা

মুম্বই

দেশ জুড়ে চলা অসহিষ্ণুতা নিয়ে মুখ খুলে বিভিন্ন মহলের নিন্দার মুখে পড়েছিলেন শাহরুখ খান। ‘দেশদ্রোহী’ আখ্যাও মিলেছিল। পাল্টা জবাবে ফের মুখ খুললেন শাহরুখ। একটি সাক্ষাৎকারে বললেন, ‘‘আমার প্রায়ই মনে হয় সিনেমা ছাড়াও নানা বিষয়ে বেশি কথা বলে ফেলি। আর তাতেই ভুল বোঝাবুঝি হয়।’’ দাবি করলেন, সে দিনের সাক্ষাৎকারে তিনি এক বারও বলেননি ভারত অসহিষ্ণু। বরং এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি এড়িয়ে যেতেই চেয়েছিলেন। পরে জোর করা হলে তাঁর মতামত দেন যে, দেশটিকে ধর্মনিরপেক্ষ ও প্রগতিশীল হিসেবে গড়ে তোলার দিকে যুব সম্প্রদায়ের নজর দেওয়া উচিত। মানুষের কাছে যেটা যুক্তিগ্রাহ্য, সেটাই তার বিশ্বাস হওয়া উচিত। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমার কথাকে ভুল ভাবে স্থাপন করে কোনও রাজনৈতিক দলের উদ্দেশ্য হাসিল হতেও পারে, না-ও পারে। তবে সেই ভুলটা কখনওই প্রীতিকর নয়।’’ তিনি আরও জানান, তাঁর কাজ অভিনয় করা। তার বাইরে কোনও কাজে অতিরিক্ত সময় দেওয়া বা শ্রম দেওয়া তাঁর পছন্দ নয়।

Aamir Khan intolerance controversy MostReadStories
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy