সে দিন পুলিশ যখন বাবাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছিল, গালিব তখন নেহাতই একরত্তি। বছর দুয়েকের শিশু। তার পর ২০১৩-য় আজকের দিনেই ফাঁসি হয়েছিল সংসদ হামলার মূল চক্রী আফজল গুরুর। তাঁর ছেলে গালিব আফজল গুরু এখন ১৮-য় পা দেওয়া সদ্য যুবক। আদাজল খেয়ে ডাক্তারি পরীক্ষা ‘নিট’-এর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আর হাতড়ে বেড়াচ্ছেন বাবার স্মৃতি।
গালিব কাল একটা কাশ্মীরি গানের দু-এক কলি পোস্ট করেছিলেন ইনস্টাগ্রামে। বাংলায় যার মানে দাঁড়ায়— ‘‘এক দিন ঠিক দেখা হবে আমাদের।’’ জানিয়েছিলেন, জেলে দেখা করতে গেলে বারবার ‘বাবা’ এই গানটা শুনতে চাইতেন। আজও ফেসবুকে লিখলেন— ‘‘এখনও বহু শুভাকাঙ্ক্ষী জড়িয়ে ধরেন আমায়। ভালবাসেন। কিন্তু তোমার মতো কেউ না। তোমার ওই জড়িয়ে ধরাটা কিছুতেই যেন ভুলতে পারি না।’’ বাইরে তখন ঝড় বইছে।
আফজলের মৃত্যুদিনে ফের অশান্তি ছড়াল উপত্যকায়।
প্রহরা: সংসদে হামলার চক্রী আফজল গুরুর পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকীতে শুক্রবার শ্রীনগরে বন্ধ ডেকেছিল বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন। এ দিন পুলিশকে লক্ষ্য করে ছোড়া হয় পাথর।
বারামুলা জেলার সোপরে আফজলের বাড়ির সামনে তো বটেই, উপত্যকার একটা বড় অংশ জুড়েই আজ সকাল থেকে কড়া নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করেছিল সেনা-পুলিশ। আইন-শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে সোপর, নওহাটা, মহারাজগঞ্জ, মাইসুমা, রাইনাওয়াড়ি-সহ বহু এলাকায় আজ ১৪৪ ধারা জারি করেছিল প্রশাসন। তবু ঠেকানো গেল না বিক্ষোভ। ফাঁসির পাঁচ বছর পরেও আফজলের দেহাবশেষ কেন তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হল না— ফের প্রশ্ন তুলল বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। আজ বন্ধও ডাকে তারা। যার জেরে আজ উপত্যকার বহু এলাকায় বন্ধ ছিল দোকানপাট। রাস্তাঘাট প্রায় সুনসান। সৈয়দ আলি শাহ গিলানি, মিরওয়াইজ উমর ফারুক কিংবা মহম্মদ ইয়াসিন মালিকের মতো নেতারা দিনভর আফজলের-ফাঁসির বিরোধিতাও করেন। ‘জঙ্গির ছেলে’ গালিব তবু নিজের দুনিয়াতেই থেকে গেলেন।
ছবি: পিটিআই।