বিরল রোগে আক্রান্ত অখিলেশ
বড়সড় প্রশ্নের মুখে চিকিত্সা বিজ্ঞান। দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত ছেলেকে সুস্থ করতে ভারতের নামীদামি চিকিত্সকদের দ্বারস্থ হয়েছেন অসহায় বাবা। কিন্তু কোনও সুরহা হয়নি। ছেলের প্রাণ বাঁচাতে হাল ছাড়তে রাজি নন মধ্যপ্রদেশের অশোকনগরের এই বাসিন্দা। ব্রিটেনের একটি ওয়েবসাইট সূত্রের খবর, ছেলেটির বাবা বলেছেন, “আমার ছেলের কী রোগ হয়েছে, তার উত্তর দেওয়া উচিত চিকিত্সা বিজ্ঞানের।” সুস্থ ছেলেকে ফিরে পেতে তাঁর আর্জি, “আমার ছেলেকে সুস্থ করে তুলতে বিশ্বের সব চিকিত্সকের কাছে আবেদন জানাচ্ছি।” কিন্তু তাঁর ছেলে কী এমন রোগে আক্রান্ত হলেন, যে ভারতের কোনও চিকিত্সকরা সেই রোগের কিনারা করতে পারচ্ছেন না!
তেরো বছরে ওই ছেলেটির নাম অখিলেশ রঘুবংশী। প্রতি দিনই তাঁর দেহের কোনও না কোনও অংশ থেকে রক্ত বেরোতে থাকে। এবং তা হয় কোনও কারণ ছাড়াই। চোখ, নাক, মুখ কখনও বা চুলের গোড়া থেকে তাজা রক্ত বেরিয়ে আসে। অখিলেশ জানায়, যখন শরীর দিয়ে রক্ত বেরোয়, সেই জায়গাটা গরম অনুভব করে সে। দশ বছর বয়স থেকেই শরীরের বিভিন্ন জায়গা থেকে রক্ত বেরোচ্ছে বলে দাবি অখিলেশের পরিবারের। যত দিন যাচ্ছে পরিস্থিতি আরও খারাপ দিকে যাচ্ছে বলে জানান অখিলেশের বাবা। তিনি জানান, এখন প্রসাবের মধ্য দিয়ে রক্ত বেরচ্ছে অখিলেশের।
অন্তত দিনে দশবার রক্ত বেরোয় অখিলেশের শরীর থেকে
তবে সব সময় কি অখিলেশের শরীর থেকে রক্ত বেরোয়? অখিলেশ বলছে, “দিনে অন্তত দশ বার শরীর থেকে রক্ত বেরোচ্ছে। আগে সেটা কম ছিল। কোনও কোনও সময় এক মাসের বেশি হয়ে গিয়েছিল রক্ত বেরোয়নি। এখন সেটা অবনতির দিকে যাচ্ছে।”
এই মুহূর্তে অল ইন্ডিয়া ইনস্টিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্স-এ চিকিত্সাধীন অখিলেশ। কিন্তু সেখানকার চিকিত্সকরা এখনও পর্যন্ত এই রোগের কোনও কিনারা করতে পারেননি। যখন অখিলেশের তিন বয়স ছিল, মাঝেমধ্যেই নাক দিয়ে রক্ত বেরতো। পরিবারের প্রাথমিক অনুমান ছিল, ডিহাইড্রেশনের ফলে এই অবস্থা হচ্ছে। কিন্তু তাদের সেই অনুমান ভুল প্রমাণ করে অবস্থার অবনতি হতে থাকে অখিলেশের।
তবে অখিলেশ একা নয়। এই ধরনের বিরল রোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর এর আগেও পাওয়া গিয়েছে। অসমের চার বছরের একটি ছেলের চোখ দিয়ে অনবরত রক্ত বেরিয়ে আসত। রোগের কিনারা করতে পারেননি চিকিতসকেরা। শেষ পর্যন্ত অন্ধ হয়ে যায় ছেলেটি। গত বছর ম্যারিনে হার্ভে নামে ব্রিটেনের ১৭ বছরের এক কিশোরীরও চোখ-কান দিয়ে রক্ত বের হওয়ার খবর প্রকাশ্যে আসে।
ম্যারিনে হার্ভে নামে ব্রিটেনের এক কিশোরীও এমন অজানা রোগে আক্রান্ত
এখন উপায়? সূত্রের খবর, ছেলেকে বাঁচাতে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে বিশ্বের সব চিকিত্সকের কাছে আর্জি জানাচ্ছেন অখিলেশের বাবা। তিনি জানান, “অখিলেশ বিরল রোগে আক্রান্ত। তাঁর এই রোগকে গবেষণা করলে নতুন তথ্য বেরিয়ে আসবে। আর আমার ছেলেও হয়ত বেঁচে যাবে।” চিকিত্সা বিজ্ঞানের কল্যাণের মধ্য দিয়ে নিজের ছেলের আরোগ্য খুঁজছেন অখিলেশের বাবা।
আরও পড়ুন- সেই জওয়ানের স্ত্রী কোর্টে গেলেন, বিএসএফ বলল, ফোনের রেকর্ড আছে
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy