লখনউয়ে সাংবাদিক বৈঠকে অখিলেশ যাদব। রবিবার। ছবি: পিটিআই
রাত পোহালেই পঞ্চম দফার ভোট। তার আগে কার্যত বেনজির ভাবে ভোটের মধ্যেই লখনউয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে নরেন্দ্র মোদীর মেরুকরণের রাজনীতির জবাব দিলেন অখিলেশ যাদব।
সম্প্রতি অখিলেশের সরকারের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক বৈষম্যের অভিযোগ তুলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘রমজানের সমান বিদ্যুৎ দীপাবলিতেও দিতে হবে।’’ বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ দাবি করেন, উত্তরপ্রদেশ সরকারের ল্যাপটপ বিতরণে মুসলিমদের বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সাংবাদিক বৈঠকে এ সব অভিযোগেরই জবাব দিয়েছেন অখিলেশ। দাবি করেছেন, সমাজকল্যাণের প্রকল্প কার্যকর করার ক্ষেত্রে তাঁর সরকার কোনও বৈষম্য করেনি। তাঁর কথায়, ‘‘রমজান-দিওয়ালিতে সমান বিদ্যুৎ দিয়েছে আমার সরকার। আর ল্যাপটপ কত হিন্দুকে দেওয়া হয়েছে তার হিসেব প্রয়োজনে সংবাদপত্রে প্রকাশ করে দিতে পারি।’’
রাজনীতিকদের মতে, উত্তরপ্রদেশের যে সব এলাকায় ভোট বাকি রয়েছে সেগুলি হিন্দু অধ্যুষিত। সেখানে জাতপাতের অঙ্কই বেশি শক্তিশালী। তাই মেরুকরণের রাজনীতি করে জাতপাতের অঙ্ককে ভাঙতে চেয়েছেন মোদী। আবার অখিলেশও বৈষম্যের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে হিন্দু ভোট টানতে চেয়েছেন।
অখিলেশের সাংবাদিক বৈঠকের মতোই এ দিন রেডিও বার্তা ‘মন কি বাত’-কে পুরোপুরি উত্তরপ্রদেশের ভোটের কাজে ব্যবহার করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সুকৌশলে নোট বাতিল থেকে জাতীয়তাবাদ, মহিলা-যুব থেকে গরিব-দলিত প্রসঙ্গ-সব কিছুই টেনে এনেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে শিবসেনাকে পাল্টা চাপ বিজেপির
প্রধানমন্ত্রী রেডিও বার্তা শুরু করেছেন ১০৪টি উপগ্রহ উৎক্ষেপণের সাফল্য নিয়ে ইসরোর বৈজ্ঞানিকদের সাধুবাদ দিয়ে। তারপরেই চলে গিয়েছেন ‘ব্যালিস্টিক ইন্টারসেপ্টর’ ক্ষেপণাস্ত্রের কথায়। দু’হাজার কিলোমিটার দূর থেকে কোনও দেশ ভারতকে আক্রমণ করলে এই ক্ষেপণাস্ত্র তাদের অস্ত্র নষ্ট করে দেবে। সম্প্রতি এই ক্ষেপণাস্ত্রও সফল ভাবে পরীক্ষা করেছে ভারত। অনেকের মতে, পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে সেনা অভিযান নিয়ে প্রচারের অস্ত্র ভোঁতা হয়ে গিয়েছে বলে মনে করছে বিজেপি। তাই ঘুরপথে শত্রু দেশের হামলার প্রসঙ্গ তুলে প্রধানমন্ত্রী জাতীয়তাবাদের তাস খেলতে চেয়েছেন।
ওড়িশা ও মহারাষ্ট্রে পুরভোটের ফল প্রকাশের পরে বাড়তি অক্সিজেন পেয়ে নরেন্দ্র মোদী নোট বাতিলের প্রসঙ্গ ফের উত্থাপন করা শুরু করেছেন। রাহুল গাঁধী, অখিলেশ নোট বাতিলের কুফল প্রচারের পরে যাতে সাময়িক বিরতি দিতে বাধ্য হয়েছিলেন বিজেপি নেতারা। ফের রেডিও বার্তায় আজ নোট বাতিলের সুফল তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল লেনদেন নিয়ে কথা বলেন। আর এই প্রসঙ্গেই টেনে আনেন ‘ভীম’ অ্যাপ ও অম্বেডকরের প্রসঙ্গ। ভোটের মধ্যে দলিত মনকে কাছে টানতেই এই প্রয়াস বলে অনেকে মনে করছেন। এ ভাবেই বক্তৃতার পরতে পরতে গরিব, মহিলা, যুবক, কৃষক, প্রবীণদেরও মন জয়ের চেষ্টা করেছেন মোদী।
রেডিও বার্তা শুনে অখিলেশের কটাক্ষ, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর মন কি বাত বোধগম্য হচ্ছে না। তিনি বরং কাম কি বাত করুন।’’ অমিত শাহের পাল্টা কটাক্ষ, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর মন কি বাত বুঝতে হলে বোধশক্তিও দরকার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy