দৃশ্যতই প্রবল অস্বস্তি আর একরাশ বিড়ম্বনা যেন ঠিকরে বেরোল শব্দগুলোয়— ‘‘তুমি কি আমার ওপর রেগে আছো?’’
দিল্লির সফদরজঙ্গ হাসপাতাল। চিকিৎসাধীন এক মেয়ে আর তার মায়ের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি, জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি। গিয়েছিলেন উপত্যকার উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করতে। এক ফাঁকে গেলেন হাসপাতালে, যেখানে চিকিৎসা চলছে ছররা গুলির আঘাতে দৃষ্টি হারানো ১৫ বছরের ইনশা মালিকের।
মেহবুবার দাবি, তাঁর প্রশ্নটা শুনেই নাকি কেঁদে ফেলেছিলেন ইনশার মা। তিনি তখন আশ্বাস দেন, ইনশা যাতে সেরা চিকিৎসা পায়, জম্মু-কাশ্মীর সরকার তা দেখবে। বিদেশে চিকিৎসার দরকার হলেও সমস্যা হবে না। হাসপাতালের চিকিৎসকদের তিনি অনুরোধ জানান, ইনশার দৃষ্টি ফিরিয়ে দিতে যেন যথাসাধ্য করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী এমনকী এ-ও বলেন, ‘‘যদি চোখ (কর্নিয়া) প্রতিস্থাপনের দরকার হয়, তাতেও পূর্ণ সহযোগিতা করবে রাজ্য সরকার।’’
এই আশ্বাসের পাশাপাশিই মেহবুবার গলায় স্পষ্ট অসহায়তার সুর। তিনি নিজেই বলেছেন, ‘‘ভাবছিলাম, কোথায় ভুলটা হল। (জঙ্গিদের সঙ্গে) একটা সংঘর্ষ হল। তার পর এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি হয়ে গেল!’’ কার্ফুর ঘেরাটোপে ৫০ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও পুরোপুরি শান্ত নয় উপত্যকা। বিরোধীদের মতে, শোপিয়ানের ইনশার মতো আরও যে সাধারণ নাগরিকেরা আহত হয়েছেন নিরাপত্তা বাহিনীর ছররা গুলিতে, যাঁরা মারা গিয়েছেন— সকলের পরিবারেরই ক্ষোভের আঁচ এখন টের পাচ্ছেন মেহবুবা। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, বছর কয়েক আগে ওমর আবদুল্লার আমলে যখন বিক্ষোভ আর পাথরবৃষ্টিতে উত্তপ্ত ছিল উপত্যকা, তখন পরিস্থিতি সামলাতে মুখ্যমন্ত্রীর ব্যর্থতার অভিযোগ বারবার তুলতেন তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মেহবুবা। আজ যে তিনি নিজেই একই রকম বিড়ম্বনায় পড়েছেন, ইনশাকে করা তাঁর প্রশ্নতেই সেটা প্রকট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy