সুযোগ পেয়েছিলেন কলকাতা আইআইএমে এমবিএ পড়ার। আর তার জন্য দরকার ছিল বেশ কিছু টাকার। ২৯ বছরের যুবক ভেবেছিলেন তাঁর গাড়ি বিক্রি করে সেই টাকা দিয়েই ওই কোর্সে ভর্তি হবেন। কিন্তু পূরণ হল না সেই স্বপ্ন। গত সাত দিন ধরে নিখোঁজ পটনার ওই সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার অজিতাভ কুমার।
প্রাথমিক তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, পটনার বাসিন্দা হলেও সাত বছর ধরে বেঙ্গালুরুতে থাকছিলেন অজিতাভ। কলকাতা আইআইএমে পড়ার সুযোগ পাওয়ার পরেই টাকা জোগাড় করতে শুরু করেন তিনি। ঠিক করেছিলেন, জিনিস কেনাবেচার একটি অনলাইন সংস্থায় নিজের মারুতি সিয়াজ গাড়িটি ভাল দামে বিক্রি করে দেবেন। সেই মতো গাড়ির ছবি-সহ বাকি তথ্য ওই সংস্থায় দিয়ে দিয়েছিলেন অজিতাভ। আসতে শুরু করেছিল ক্রেতাদের ফোনও। পুলিশ মনে করছে, ১৯ ডিসেম্বর বিকেলে তেমনই ক’জন ক্রেতার সঙ্গে দেখা করতে বেরিয়েছিলেন ওই যুবক। তার পর থেকে তিনি বেপাত্তা। খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না তাঁর গাড়িটিও।
অজিতাভের মোবাইল টাওয়ার ট্রেস করে পুলিশ জেনেছে, সে দিন বিকেল সাড়ে ৬টা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন ওই যুবক। গিয়েছিলেন হোয়াইটফিল্ডের গুঞ্জুরে। শেষ বার হোয়াটসঅ্যাপে তাঁকে অনলাইন দেখা গিয়েছে সে দিন সন্ধে ৭টা ১০ মিনিট পর্যন্ত। তার পর থেকে ফোন বন্ধ। ঘটনার কথা জানতে পেরেই পুলিশে নিখোঁজ ডায়েরি করে পরিবার। তাঁর বাবার আশঙ্কা, কোনও ভুয়ো ক্রেতা অজিতাভের ক্ষতি করেছেন। ছেলেকে খুঁজে বার করার আর্তি জানিয়েছেন সংবাদমাধ্যমেও। তিনি বলেন, ‘‘সব ঠিক থাকলে ছেলে ফিরে আসত। হতে পারে কোনও ভুয়ো ক্রেতা ওর ক্ষতি করেছে। কোথাও গুরুতর জখম হয়ে বা অচৈতন্য হয়ে পড়ে রয়েছে ও।’’ ছেলেকে খুঁজে দেওয়ার আবেদন জানিয়ে ইন্টারনেটে একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন অজিতাভের বাবা।
এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখনও কোনও হদিশ পাওয়া যায়নি অজিতাভের। তাঁকে খোঁজার জন্য বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘#ফাইন্ডঅজিতাভ’ উদ্যোগ শুরু করেছেন ওই যুবকের অভিভাবক ও বন্ধুরা। কিন্তু তদন্তে এখনও পর্যন্ত বিশেষ আশা দেখছে না পুলিশ। এক কর্তা বলেন, ‘‘বিষয়টি গুরুতর। কিন্তু ফোন বন্ধ থাকায় ওই যুবকের খোঁজ মিলছে না। তদন্তের স্বার্থে যা করা দরকার সব করা হচ্ছে।’’