Advertisement
E-Paper

সম্মতিতে সহবাস ধর্ষণ নয়, বলল মুম্বই হাইকোর্ট

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৮ ১৮:১১
মুম্বই হাইকোর্ট।- ফাইল চিত্র।

মুম্বই হাইকোর্ট।- ফাইল চিত্র।

গভীর প্রেমের সম্পর্কের জেরে কোনও শারীরিক সম্পর্ক তৈরি হলে, তার বিরুদ্ধে পরে ধর্ষণের অভিযোগ আনা যাবে না। একটি মামলায় সম্প্রতি এমনই রায় দিয়েছে বম্বে হাইকোর্টের গোয়া বেঞ্চ।

রায় দিতে গিয়ে আদালত বলেছে, গভীর প্রেমের জেরে কোনও শারীরিক সম্পর্ক গড়ে উঠলে, পরে তাকে ‘ধর্ষণ’ বলা হলে, তা আসলে তথ্যের বিকৃতি হয়।

এই রায় যে মামলার প্রেক্ষিতে, তাতে অভিযুক্তকে ৭ বছরের জেল এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানার যে দণ্ড দিয়েছিল নিম্ন আদালত, তা-ও বাতিল করে দিয়েছে বম্বে হাইকোর্ট। নিম্ন আদালতের ওই রায়ের বিরুদ্ধেই হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন অভিযুক্ত।

আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, যোগেশ গোয়ায় একটি ক্যাসিনোয় শেফ হিসেবে কাজ করতেন। ২০১৩ সালে ক্যাসিনোয় কর্মরত এক মহিলার সঙ্গে যোগেশের আলাপ হয়। ধীরে ধীরে দু’জনের মধ্যে গভীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

এক দিন তাঁর পরিবারের লোকজনের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য প্রেমিকাকে তাঁর বাড়িতে নিয়ে যান যোগেশ। কিন্তু কেউ না থাকায় রাতে যোগেশের বাড়িতেই থেকে যান ওই তরুণী, স্বেচ্ছায়। সেই সময়েই দু’জনের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক তৈরি হয়।

পরের দিন সকালে ওই তরুণীকে তাঁর বাড়িতে পৌঁছে দেন যোগেশ। পরে যোগেশের বাড়িতে আরও তিন থেকে চার বার দু’জনের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়। যদিও, ওই মহিলা নিম্ন বর্ণের বলে তাঁকে শেষমেশ বিয়ে করেননি যোগেশ।

আরও পড়ুন- হাইকোর্টের নির্দেশের পরেও কেন মন্দিরে ঢুকতে বাধা? বিক্ষোভ মহিলাদের​

আরও পড়ুন- ‘মদ খেয়েছিল গাড়িটা, গাড়িটা চালাচ্ছিল ফুটপাথ...’​

এর পরেই যোগেশের বিরুদ্ধে আদালতে ধর্ষণের অভিযোগ আনেন ওই মহিলা। তিনি অভিযোগ করেন, যোগেশ বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বলেই তিনি শারীরিক সম্পর্কে সম্মত হয়েছিলেন। শুনানিতে এমনও জানা যায়, যোগেশকে আর্থিক ভাবেও সাহায্য করতেন ওই মহিলা।

মামলার রায় দিতে গিয়ে বিচারপতি সি ভি ভাড়ং বলেছেন, ‘‘যে সব তথ্যপ্রমাণ মিলেছে, তার ভিত্তিতে এটা নিশ্চিত ভাবেই বলা যায়, শুধুমাত্র পুরুষ সঙ্গীর দেওয়া বিয়ের প্রতিশ্রুতির বিনিময়েই মহিলা শারীরিক সম্পর্কে সম্মতি দেননি। বরং দু’জনের মধ্যে গভীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলেই রাজি হয়েছিলেন তিনি। এমনকী, ওই ঘটনার পরেও দু’জনের মধ্যে সম্পর্ক ছিল। যোগেশকে রোজকার প্রয়োজনে আর্থিক সাহায্যও করতেন ওই মহিলা। তিন থেকে চার বার শারীরিক সম্পর্কও হয় দু’জনের মধ্যে। ফলে এটা স্পষ্ট যে, পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতেই দু’জনের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল।’’

বিচারপতি ভাড়ং এও জানান, এক সময়ে মানসিক অবসাদে ভোগা যোগেশের চিকিৎসা শুরু হওয়ায় এক সময় ধর্ষণের মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হলফনামাও জমা দিয়েছিলেন ওই মহিলা। তখন তিনি জানিয়েছিলেন, ‘আবেগে ও ব্যক্তিগত কারণ’-এই ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।

বিচারপতি ভাড়ং বলেছেন, ‘‘এর থেকেই স্পষ্ট, অভিযুক্ত এবং অভিযোগকারিণীর মধ্যে গভীর ভালবাসা ছিল। যদি প্রথম থেকেই ওই মহিলাকে শারীরিক ভাবে শোষণ করা অভিযুক্তের উদ্দেশ্য হত, তা হলে নিজের দুর্বল আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে তিনি ওই মহিলাকে জানাতেনই না।’’

বিচারপতির বক্তব্য, ওই মহিলার থেকে যোগেশ নিয়মিত ভাবে আর্থিক সাহায্য পেতেন। ফলে তিনি ওই মহিলার উপর জোর করতেন বা তাঁকে শারীরিক ভাবে শোষণ করতেন, এমন দাবি মেনে নেওয়া যায় না।

Bombay High Court Rape Consensual Sex বম্বে হাইকোর্ট
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy