Advertisement
E-Paper

বুদ্ধগয়ার মন্দিরে উদ্ধার বিস্ফোরক

বছর পাঁচেক আগে, ২০১৩ সালের ৭ জুলাই এই মহাবোধি মন্দিরকে ঘিরেই ধারাবাহিক ১০টি বিস্ফোরণ হয়। তাতে ৩ ভিক্ষু জখম হন। তবে সেই বিস্ফোরকের তীব্রতা ছিল অনেকটাই কম।

দিবাকর রায়

শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:৪৫

বড়সড় জঙ্গি হামলা থেকে বাঁচল বুদ্ধগয়ার মহাবোধি মন্দির। গত কাল বিকেলে মন্দিরের কালচক্র ময়দানে একটি খাবারের দোকানে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। তার পরেই তল্লাশি চালিয়ে গভীর রাতে মন্দিরের চার জায়গা থেকে অ্যানুমিনিয়ামের ক্যানে ভরা বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়। তার মধ্যে একটি ক্যানে চার কেজিরও বেশি বিস্ফোরক ছিল। বিস্ফোরক উদ্ধার করে মন্দির থেকে তিন কিলোমিটার দূরে নিরঞ্জন নদীর চরে রাখা হয়। আজ সেখানেই বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করে এনএসজি এবং এনআইএ। এই সময়ে মন্দিরে নিগমা পুজো চলছে। বৌদ্ধ ধর্মগুরু দলাই লামাও রয়েছেন এই মন্দিরে মধ্যে।

বছর পাঁচেক আগে, ২০১৩ সালের ৭ জুলাই এই মহাবোধি মন্দিরকে ঘিরেই ধারাবাহিক ১০টি বিস্ফোরণ হয়। তাতে ৩ ভিক্ষু জখম হন। তবে সেই বিস্ফোরকের তীব্রতা ছিল অনেকটাই কম। সেই ঘটনায় জঙ্গি সংগঠন ‘ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন’ জড়িত ছিল বলে তদন্তকারীরা জানিয়েছিলেন। পরে এই বিস্ফোরণে যুক্ত বেশ কয়েক জন জঙ্গি এনআইএ-র হাতে ধরাও পড়ে। তবে এ বার কারা এই ঘটনায় যুক্ত, তা এখনও জানা যায়নি। এর সঙ্গে রোহিঙ্গা জঙ্গিদের কোনও সম্পর্ক আছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখছে এনআইএ। উল্লেখ্য, মায়ানমারে বৌদ্ধদের সঙ্গে রোহিঙ্গা মুসলিমদের জাতিদাঙ্গায় বহু রোহিঙ্গা দেশ ছাড়া। শরণার্থী হিসেবে তারা আশ্রয় নিয়েছে প্রতিবেশী দেশগুলিতে।

এ বারের ঘটনা প্রসঙ্গে গয়ার এসএসপি গরিমা মালিক জানিয়েছেন, গোটা জেলায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। তবে মন্দির ভক্তদের জন্য খোলা রাখা হয়েছে। কোনও রকমের গুজব না-ছড়ানোর আবেদনও করেছে জেলা প্রশাসন। মালিক বলেন, ‘‘মন্দিরের সিসিটিভি ফুটেজে তিন জনকে বিস্ফোরক নিয়ে যেতে দেখা গিয়েছে।’’ মন্দিরের ভিতরে এ ভাবে বিস্ফোরক পাওয়ায় মহাবোধি মন্দিরের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষ করে এখানে যখন এর আগে ধারাবাহিক বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে, তখন নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ঢিলেমি থাকে কী করে, প্রশ্ন তা নিয়েও।

তবে তদন্তর পরেই এনআইএ-র তদন্তকারীদের বক্তব্য, গত কালই কালচক্র ময়দানে বিস্ফোরণের ছক ছিল। ময়দানে মেলা চলছে। সেই মেলায় একটি খাবার দোকানের জেনারেটরের মধ্যে বিস্ফোরক রেখে সেখানেই বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। তবে কাল তা বোঝা যায়নি। বিস্ফোরণের আওয়াজকে জেনারেটরের সমস্যা বলেই মনে করা হয়েছিল।

গভীর রাতে বিস্ফোরকের সন্ধান মেলে। প্রথমে মন্দিরের উত্তর দিকের ৪ নম্বর গেটের কাছে একটি প্ল্যাস্টিক ব্যাগ পাওয়া যায়। তার মধ্যে একটি অ্যানুমিনিয়াম ক্যান ছিল। দেখা যায় ওই ক্যানে বিস্ফোরক রয়েছে। এর পরেই বিশাল বাহিনী মন্দির ঘিরে ফেলে। শুরু হয় তল্লাশি। রাতভর তল্লাশি চালিয়ে একের পর এক চারটি জায়গায় ক্যান-ভর্তি বিস্ফোরক পাওয়া যায়। তল্লাশিতে নামে সিআরপি-র কোবরা কম্যান্ডোরা। সে সময়ে মন্দিরের ভিতরে ছিলেন রাজ্যপাল সত্যপাল মালিকও। তিনি দলাই লামার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন।

আজ বিকেলে সমস্ত মঠের প্রধানদের নিয়ে বৈঠকে বসে বোধগয়া মন্দির পরিচালন সমিতি (বিটিএমসি)। আগামী দিনে মন্দিরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও কঠোর করতে বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মন্দিরে ধারাবাহিক বিস্ফোরণ ঘটানোর পরিকল্পনা ছিল বলেই মনে করছে বিহার পুলিশ। রাজ্য পুলিশের ডিজি পি কে ঠাকুর বলেন, ‘‘বড় ধরনের ষড়যন্ত্র বানচাল করা গিয়েছে।’’

Bodh Gaya Bombs Recovered Dalai Lama Mahaboddhi temple NSG NIA মহাবোধি  মন্দির
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy