Advertisement
E-Paper

সীমান্ত থেকে সরানো হচ্ছে গ্রামবাসীদের

আজ কী রাত...! কাটবে কি ভালয় ভালয়? তারপর কাল বা পরশু? আজ থেকেই রাত গোনা শুরু করল সীমান্ত। প্রত্যাঘাতের আশঙ্কায় ভুগছে পঞ্জাব-সহ গোটা পশ্চিম সীমান্ত। সন্ধ্যায় পাক সেনাপ্রধান রাহিল শরিফের ‘বদলা লেঙ্গে’-র হুমকির পরে আশঙ্কার চোরাস্রোত বইছে নয়াদিল্লির নর্থ-সাউথ ব্লকেও।

অনমিত্র সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:২৫
সীমান্তবর্তী গ্রাম থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বাসিন্দাদের। বৃহস্পতিবার, পঞ্জাবে আত্তারির কাছে। ছবি: পিটিআই।

সীমান্তবর্তী গ্রাম থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বাসিন্দাদের। বৃহস্পতিবার, পঞ্জাবে আত্তারির কাছে। ছবি: পিটিআই।

আজ কী রাত...!

কাটবে কি ভালয় ভালয়? তারপর কাল বা পরশু? আজ থেকেই রাত গোনা শুরু করল সীমান্ত।

প্রত্যাঘাতের আশঙ্কায় ভুগছে পঞ্জাব-সহ গোটা পশ্চিম সীমান্ত। সন্ধ্যায় পাক সেনাপ্রধান রাহিল শরিফের ‘বদলা লেঙ্গে’-র হুমকির পরে আশঙ্কার চোরাস্রোত বইছে নয়াদিল্লির নর্থ-সাউথ ব্লকেও। ফলে আগামী দু’-তিন দিন পাকিস্তান কী করে, সে দিকেই নজর থাকছে।

কোনও ঝুঁকি না নিয়ে আজ থেকেই পঞ্জাব সীমান্তের দশ কিলোমিটারের মধ্যে যে সব গ্রাম রয়েছে, তা খালি করার কাজ শুরু হয়েছে। হামলার আশঙ্কায় সরকারি চিকিৎসক, নার্স ও পুলিশদের ছুটি বাতিল করে দিয়েছে পঞ্জাব প্রশাসন। সীমান্তে পাঠানো হয়েছে বাড়তি আধাসেনা। খোঁড়া হচ্ছে বাঙ্কার। অনির্দিষ্ট কালের জন্য বাতিল করা হয়েছে আত্তারি-ওয়াঘা সীমান্তে প্রাত্যহিক সেনা মহড়া। সতর্কতা জারি হয়েছে রাজস্থান, গুজরাত এবং জম্মু ও কাশ্মীরেও। সরানো হচ্ছে সেখানকার সীমান্তবর্তী বা নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর গ্রামের বাসিন্দাদেরও।

কেন পাল্টা পাক আক্রমণের আশঙ্কা করছে নয়াদিল্লি?

যে ভাবে কাল রাতে নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের জঙ্গি শিবির উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, তাতে পাক সেনার বিলক্ষণ নাক কাটা গিয়েছে বলেই মনে করছেন কূটনীতিকরা। পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মহম্মদ আসিফ যখন পরমাণু হামলার হুমকি দিচ্ছেন, তখন ভারতের এই গোপন আক্রমণ প্রমাণ করে দিয়েছে ১) নিয়ন্ত্রণরেখায় পাক সেনা সতর্ক ছিল না। ২) পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গি শিবির আছে। ৩) পাক গোয়েন্দাদের কাছে এই হামলার খবর ছিল না। ব্যর্থতা ঢাকতেই হামলা করতে পারে পাকিস্তান।

কিন্তু সমস্যা রয়েছে তাতেও। কূটনীতিকদের একাংশের বক্তব্য, আজ সকাল থেকেই পাক সেনাবাহিনী দাবি করছে, ভারত কোনও হামলা চালায়নি। কেবল নিয়ন্ত্রণরেখায় গুলি বিনিময় হয়েছে। এখন পাকিস্তান যদি ভারতের উপর হামলা চালায়, তা হলে এই তথ্য স্বীকার করে নেওয়া হবে যে ভারত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে জঙ্গি শিবিরে হামলা চালিয়েছে। যার প্রত্যুত্তরে ওই হামলা চালাতে বাধ্য হয়েছে পাকিস্তান। তবে সংশয় রয়েছে তা নিয়েও। কারণ এ নিয়ে তিন বার সরাসরি যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পরে চতুর্থ বার সেই ঝুঁকি নেওয়ার সাহস পাকিস্তান নেবে না বলেই মত প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের।

তবু আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। কারণ, এই মুহূর্তে ভারতের পশ্চিম সীমান্তে বিশেষ মহড়া অভিযান চালাচ্ছে পাক সেনা। তাতে অংশ নিয়েছে পাক সেনার স্থল ও বিমানবাহিনী। সব মিলিয়ে এই মুহূর্তে প্রায় ১৫ হাজার পাক সেনা ওই অভিযানে সক্রিয় রয়েছে।

আজ সকালে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ সিংহ বাদলকে ফোন করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। জানান, পাল্টা হামলা চালানোর আশঙ্কা রয়েছে। তাই সীমান্ত-সংলগ্ন সমস্ত গ্রাম খালি করে দেওয়া হোক।

পঞ্জাবের সঙ্গে পাকিস্তানের প্রায় ৫৫৩ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। সীমান্তের কাছাকাছি যে গ্রামগুলো রয়েছে, জেলা প্রশাসন দুপুর থেকেই সেগুলো খালি করার কাজ শুরু করেছে। গ্রামগুলোর দখল নিয়ে খোঁড়া হচ্ছে বাঙ্কার। সীমান্তে মজুদ করা হচ্ছে অস্ত্রশস্ত্র, গোলাবারুদ। সীমান্তের দায়িত্ব এখনও বিএসএফের হাতে থাকলেও, প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে পঠানকোট সেনা ছাউনিকেও। খালি করে দেওয়া হয়েছে পঠানকোট হাসপাতালের আপৎকালীন বিভাগ। রোগীদের অন্যত্র পাঠানো হয়েছে।

Pakistan border centre
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy