Advertisement
E-Paper

সুষমার নেপাল সফরে চিনের কাঁটা মাথাব্যথা

চিন স্বাভাবিক ভাবেই চেষ্টা করে গিয়েছে দায় ভারতের কাঁধে চাপিয়ে সে দেশে ভারত-বিরোধী মনোভাবে উস্কানি দেওয়ার।

অগ্নি রায়

শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৭ ০২:৫২
বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। ছবি: সংগৃহীত

বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। ছবি: সংগৃহীত

ভুটানের পর এমনিতেই অগ্নিগর্ভ প্রতিবেশী বলয়ে ভারতের আরও এক অশান্তির কারণ হয়ে উঠতে চলেছে নেপাল।

বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ আগামী ১০ তারিখ কাঠমান্ডু যাচ্ছেন বিমস্টেক বিদেশমন্ত্রী সম্মেলনে যোগ দিতে। ভারত, নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ, মায়ানমার, শ্রীলঙ্কা ও তাইল্যান্ড— বঙ্গোপসাগরীয় এলাকার এই ৭ দেশের মধ্যে প্রযুক্তি ও আর্থিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোই লক্ষ্য এই জোটের। কিন্তু কূটনীতিকদের অনেকে মনে করছেন, কাঠমান্ডু বৈঠকে নির্ঘাৎ ছায়া ফেলবে ডোকলাম নিয়ে ভারত-চিন সঙ্কট। চিন-ভারত-নেপাল— এই তিন দেশের সীমান্তের কিছু এলাকা নিয়ে এমনিতেই কাঠমান্ডু যথেষ্ট স্পর্শকাতর। তার মধ্যে বেজিং নেপালে এই প্রচার শুরু করেছে যে, ডোকলাম সঙ্কটের মূলে ভারতের ‘আগ্রাসী’ মনোভাব। পরিস্থিতি এমনই যে বিমস্টেক-এ মন দেওয়ার চেয়ে সুষমাকে ব্যস্ত থাকতে হবে নেপালের নতুন সরকারের আস্থা অর্জনে।

আরও পড়ুন: ডোকলাম নিয়ে নেপালের সঙ্গে বৈঠক চিনা দূতের, দিল্লির অস্বস্তি বাড়ছে

কিছু দিন ধরেই নেপালে চিনের প্রভাব-বৃদ্ধি নিয়ে আশঙ্কা বেড়েছে সাউথ ব্লকের। দু’দেশের মধ্যে যৌথ সামরিক মহড়া, ওবর-প্রকল্পে চিন-নেপাল সহযোগিতা, দরপত্র না ডেকেই চিনা সংস্থাকে নেপালের ১২ হাজার মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের বরাত দিয়ে দেওয়ার মতো বিষয়গুলি রয়েছেই। এই পরিস্থিতিতে সম্প্রতি নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত চিনের চিফ অব মিশন ডোকলাম পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেছেন এখানকার নেপালি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে। কাঠমান্ডুকে সবিস্তার জানানো হয়েছে, নয়াদিল্লি কী ভাবে তার সীমান্তের বাইরে গিয়ে অন্য দেশের সার্বভৌমত্বে নাক গলাচ্ছে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে লিপুলেখ ও ঝিংসাং চুলি— এই দু’টি এলাকায় নেপাল চিন এবং ভারতের সীমান্ত মিলেছে। এর মধ্যে পশ্চিম নেপালের লিপুলেখ নিয়ে নেপালের অস্বস্তি রয়েছে। সেখানকার কালাপানি এলাকাকে ভারত-নেপাল দু’দেশই নিজেদের বলে দাবি করে। ২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর চিন সফরে স্থির হয় নয়াদিল্লি বেজিং-এর সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াবে এই লিপুলেখ পাস দিয়ে। সে সময়ে নেপালের সংসদে দাবি ওঠে, ভারত ও চিন তাদের যৌথ বিবৃতি থেকে লিপুলেখ-এর উল্লেখ পরিহার করুক। এটা আন্তর্জাতিক আইন-বিরুদ্ধ। নেপালের সংসদ এ-ও জানতে চায় যে ওই ভারত-চিন চুক্তিতে নেপালের সার্বভৌমত্ব খর্ব হবে কিনা। এখনও বিষয়টির নিষ্পত্তি হয়নি।

চিন স্বাভাবিক ভাবেই চেষ্টা করে গিয়েছে দায় ভারতের কাঁধে চাপিয়ে সে দেশে ভারত-বিরোধী মনোভাবে উস্কানি দেওয়ার। এখন ডোকলামে ভারতীয় সেনার ভূমিকাকে তুলে ধরে কিছুটা ত্রাসের সঞ্চারও করা হচ্ছে কাঠমান্ডুতে। কার্যত এরই জেরে নেপালের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী কে পি ওলির সমর্থকেরা ভারতের ‘আগ্রাসী ভূমিকার’ নিন্দা শুরু করেছেন। সুষমাকে সামলাতে হবে এই প্রতিকূল পরিস্থিতি। রয়েছে ভারতের চক্ষুশূল চিনের ‘ওয়ান বেল্ট, ওয়ান রোড (ওবর)’ কাঁটাও। নেপাল এই ‘ওবর’ প্রকল্পে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে সায় দিয়েছে কার্যত সাউথ ব্লককে কলা দেখিয়ে। সে দেশের প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেওবা-কে সেই সিদ্ধান্ত পুর্নবিবেচনায় রাজি করানোটা বড় চ্যালেঞ্জ সুষমার কাছে। দেওবা ২৩ তারিখ ৫ দিনের সফরে ভারতে আসবেন। তার আগে ও সুষমার সফরের পরেই নেপালে যাচ্ছেন চিনের উপপ্রধানমন্ত্রী ওয়াং ইয়াং। ১৪ অগস্ট কাঠমান্ডু পৌঁছে তিনি তাবড় নেপালি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। বিদেশ মন্ত্রকের এক কর্তা জানাচ্ছেন, ‘‘দেওবার ভারত সফরের মুখে তড়িঘড়ি চিনের উপপ্রধানমন্ত্রীর নেপাল সফর যথেষ্ট ইঙ্গিতপূর্ণ।’’

Nepal Sushma Swaraj সুষমা স্বরাজ China
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy