অরুণ জেটলি
সংসদের চলতি অধিবেশনেই পণ্য ও পরিষেবা কর (জিএসটি) বিলে কংগ্রেসের সমর্থন আদায় করার বিষয়ে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি এখন অনেকটাই নিশ্চিত।
বাদল অধিবেশনের প্রথম দিনেই কংগ্রেস আজ জিএসটি-তে সুর নরম করার ইঙ্গিত দিয়েছে। জিএসটি চালু করার জন্য সংবিধান সংশোধনী বিল নিয়ে পাঁচ ঘণ্টা আলোচনা চালাতে সম্মত হয়েছে কংগ্রেস। কবে কখন সেই আলোচনা হবে, তা এখনও ঠিক হয়নি। তবে আলোচনার জন্য সময় নির্দিষ্ট করতে রাজি হওয়ার মধ্য দিয়েই এ ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাবের বার্তা দিয়েছে কংগ্রেস। জিএসটি নিয়ে ইতিমধ্যেই কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ ও আনন্দ শর্মার সঙ্গে এক বার বৈঠক করেছেন জেটলি ও সংসদীয় মন্ত্রী অনন্ত কুমার। আজও ঘরোয়া স্তরে আলোচনা হয়েছে দু’পক্ষে।
পি চিদম্বরম, আনন্দ শর্মাদের দাবি, তাঁরা জিএসটি-র বিরোধী নন। কিন্তু মোদী সরকারের বিলটি নিয়ে তাঁদের তিনটি আপত্তি রয়েছে। এ বিষয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করে সরকারকে লিখিত প্রস্তাব জানাতে হবে। সেই প্রস্তাব নিয়ে সনিয়া ও রাহুল গাঁধীর সঙ্গে আলোচনা করবেন দলের নেতারা। সেখানেই চূড়ান্ত করা হবে কংগ্রেসের অবস্থান।
জেটলিরা চান, আগে ঘরোয়া আলোচনায় সব পাকা করে ফেলে তার পর আনুষ্ঠানিক বৈঠকে বসতে। কারণ, জিএসটি নিয়ে কংগ্রেসেও দ্বিমত রয়েছে। তাই কংগ্রেস চূড়ান্ত কী অবস্থান নিচ্ছে তা আঁচ করার পরেই সরকারের তরফে আনুষ্ঠানিক ভাবে কোনও প্রস্তাব রাখতে চাইছেন।
মোদী সরকারের মন্ত্রীরা বেশ কিছু দিন ধরেই দাবি করছেন, রাজ্যসভায় এখন কংগ্রেসকে ছাড়াই জিএসটি বিল পাশ করিয়ে ফেলা সম্ভব। কারণ, একমাত্র এডিএমকে ছাড়া তৃণমূল থেকে শুরু করে সব আঞ্চলিক দলই জিএসটি-র পক্ষে। সিপিএম-ও এর বিরোধী নয়। সীতারাম ইয়েচুরির দাবি, রাজ্যের হাত থেকে সমস্ত কর বসানোর ক্ষমতা চলে গেলে কোনও দুর্যোগ হলে তখন রাজ্যকে কেন্দ্রের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হবে। রাজ্যগুলির রাজস্ব আয় কমে গেলে তার ক্ষতিপূরণের পাকাপাকি বন্দোবস্ত দরকার। তবে মোদী সরকার সর্বদলীয় বৈঠক ডেকে এ বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দিলে যে তাঁরাও নরম সুর করবেন, সেই ইঙ্গিতও দিয়ে
রেখেছেন বামেরা।
কিন্তু কংগ্রেসের দাবি, রাজ্যসভায় তাঁরাই সব থেকে বড় বিরোধী দল। বাকি সব দল রাজি হলেও হট্টগোলের মধ্যে সংবিধান সংশোধনী বিল পাশ করানো সম্ভব নয়। আগে তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করেই সর্বদলীয় বৈঠক ডাকতে হবে। তবে জিএসটি বিল পাশ না হলে বিজেপি তার যাবতীয় দায় তাদের ঘাড়ে চাপিয়ে দিতে পারে— এমন একটা আশঙ্কাও রয়েছে কংগ্রেস শিবিরে। সেই কারণেও তাদের সুর এখন কিছুটা হলেও নরম।
কংগ্রেসের যে তিনটি বিষয়ে আপত্তি ছিল, তার মধ্যে প্রধান হল সংবিধান সংশোধন বিলেই জিএসটি-র ঊর্ধ্বসীমা ১৮% বেঁধে দিতে হবে। অর্থমন্ত্রী জেটলি যা কোনও ভাবেই মানতে রাজি ছিলেন না। কিছু দিন আগে অবশ্য আনন্দ শর্মা ইঙ্গিত দেন, করের নির্দিষ্ট হার বেঁধে দেওয়া না হলেও অন্য কোনও ভাবে জিএসটি-র করের হারকে একটা গণ্ডির মধ্যে বেঁধে রাখা যেতে পারে। এ বার মোদী সরকার সে বিষয়ে কী প্রস্তাব দেয়, সেটাই দেখতে চাইছে কংগ্রেস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy