Advertisement
E-Paper

মুখ বদলে বিজেপির গ্রাস কাড়ল কংগ্রেস

নাবাম টুকি নয়। কালিখো পুলও নয়। পেমা খান্ডু!নবীন এই মুখকে সামনে এনেই অরুণাচলপ্রদেশের সরকার নিজেদের হাতে রাখল কংগ্রেস। সুপ্রিম কোর্ট টুকির সরকারকে পুনরায় বহাল করার পরেও আস্থাভোটে তাঁকে হারিয়ে ফের ক্ষমতায় ফেরার স্বপ্ন দেখছিলেন অমিত শাহরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৬ ০৩:১১
 অরুণাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন হিন্দু কলেজের স্নাতক, ৩৭ বছরের পেমা খান্ডু।

অরুণাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন হিন্দু কলেজের স্নাতক, ৩৭ বছরের পেমা খান্ডু।

নাবাম টুকি নয়। কালিখো পুলও নয়। পেমা খান্ডু!

নবীন এই মুখকে সামনে এনেই অরুণাচলপ্রদেশের সরকার নিজেদের হাতে রাখল কংগ্রেস। সুপ্রিম কোর্ট টুকির সরকারকে পুনরায় বহাল করার পরেও আস্থাভোটে তাঁকে হারিয়ে ফের ক্ষমতায় ফেরার স্বপ্ন দেখছিলেন অমিত শাহরা। সেই আস্থাভোট আজ হল না। তার আগেই বিজেপির মুখের গ্রাস কেড়ে নিল কংগ্রেস। আমে-দুধে মিশে যাওয়ার মতোই পুল শিবিরের বিধায়করা আজ জানিয়ে দেন, তাঁরা টুকিদের সঙ্গে কংগ্রেসেই থাকছেন। কারণ তাঁদের দাবি ছিল টুকিকে সরাতে হবে। কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব সেই দাবি মেনে নিয়েছেন।

কাল রাতভর নাটকের পর টুকি-পুল দুই শিবিরই বুঝে যায়, মুখ্যমন্ত্রী পদের জন্য গোঁ ধরে না থেকে সরকার টিকিয়ে রাখলেই লাভ বেশি। পুল শিবিরের এক বিধায়কের ব্যাখ্যা: ভোটের তিন বছর বাকি। রাষ্ট্রপতি শাসন বা নতুন করে ভোট হলে কারও লাভ নেই। এই তিন বছরে বরং কেন্দ্রের বিস্তর টাকা আসবে রাজ্যে। সড়ক ও বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ চলছে। এই অবস্থায় মন্ত্রিত্ব ও বিধায়কপদ চেলে গেলে কারও লাভ নেই। তাই আপসের রাস্তাই ছিল যুক্তিসঙ্গত।

সেই অনুযায়ী আজ সকালেই ইস্তফা দেন টুকি। বিদ্রোহে জল ঢেলে পুলকেও দলের বৈঠকে পেমার নাম প্রস্তাব করতে হয় রাজ্যের দশম মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে। ৫৮ সদস্যের বিধানসভায় কংগ্রেসের ৪৪ জন ও ২ নির্দল বিধায়কের সমর্থন নিশ্চিত করে পেমা রাজ্যপাল তথাগত রায়ের কাছে গিয়ে সরকার গড়ার আবেদন জানান। রাজ্যপাল জানিয়েছেন, পেমার দাবি খতিয়ে দেখে তিনি শপথ গ্রহণের তারিখ ও সময় জানাবেন। সব কিছু ঠিক থাকলে হিন্দু কলেজের স্নাতক, ৩৭ বছরের পেমাই হবেন দেশের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীদের মধ্যে নবীনতম।

কংগ্রেসে বিদ্রোহ উস্কে অরুণাচল দখলে করার জন্য সদ্যই শীর্ষ আদালতে মুখ পড়িয়েছে বিজেপি। কংগ্রেসেরই বিদ্রোহীদের ভরসায় আস্থাভোটে টুকি সরকার ফেলে দেওয়ার ছক শেষ মুহূর্তে ভেস্তে যাওয়ার পর কী বলছে বিজেপি? রাজ্যের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেণ রিজিজুর বক্তব্য, ‘‘অরুণাচলে যা হয়েছে, তা কংগ্রেসের অন্তর্দ্বন্দ্ব। আমরা তো শুধু পিপিএ সরকারকে বাইরে থেকে সমর্থন জানিয়েছিলাম।’’ রাষ্ট্রপতি শাসন জারি নিয়ে রিজিজুর যুক্তি, ‘‘রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থার অবনতি হওয়ায়, রাজ্যপালের পাঠানো রিপোর্টের ভিত্তিতেই ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।’’

টুকি-পুল দুই শিবিরকে কোন কৌশলে রাতারাতি সামলালেন কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব? এআইসিসির কাছে অরুণাচল ধরে রাখাটা ছিল মর্যাদার লড়াই। তবে পুল শিবির যখন নেতৃত্বে বদল চেয়েছিল, তখনই তা মানলে এই অস্থিরতাই হয়তো তৈরি হতো না। গত রাতে সে ভুলটাই শুধরে নেয় হাইকম্যান্ড। চাপ ছিল মুখ্যমন্ত্রী বাছাই নিয়ে। টুকি নিশি উপজাতির লোক। পুল ইদু-মিশমি উপজাতির। কোনও পক্ষই অপর পক্ষের হাতে সরকারের নেতৃত্ব ছাড়তে রাজি ছিল না। তখনই ওঠে মুক্তোর বিধায়ক পেমার নাম। তাঁর বাবা তিব্বতি উৎসের মন পা উপজাতির প্রতিনিধি দোর্জি খান্ডু ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। ২০১১-তে কপ্টার দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যুর পর থেকে পেমা বাবার আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতছেন। টুকির আমলে তিনি ছিলেন পর্যটন ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী। পরে পুলের সঙ্গে গেলেও মন্ত্রিত্ব পাননি। পুলের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কও অম্লমধুর।

রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে এসে পেমার বক্তব্য, ‘‘জটিলতা শেষ। পুরো কৃতিত্ব সনিয়া গাঁধী ও রাহুল গাঁধীর।’’ পেমার মতে দলে বিদ্রোহ-পর্বটি ছিল নিছক ‘মন কষাকষি’, যা মিটে গিয়েছে। একসুর এখন টুকি-পুলও।

Congress CPM Pema Khandu Arunachal Pradesh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy