Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

সনিয়া-রাহুলের প্রস্তাবে জোর বাড়ল ইয়েচুরির

সদ্যই উত্তরপ্রদেশের উপনির্বাচনে পুরনো গৎ ছেড়ে বেরিয়েছে সিপিএম। গোরক্ষপুর ও ফুলপুর লোকসভা কেন্দ্রে নিজেদের সাচ্চা অবস্থান বজায় রাখতে আগের মতো আর প্রার্থী দাঁড় করানোর রাস্তায় যায়নি তারা!

বক্তা: দিল্লির ইন্দিরা গাঁধী ইন্ডোর স্টেডিয়ামে রাহুল গাঁধী। শনিবার কংগ্রেসের প্লেনারিতে। ছবি: পিটিআই।

বক্তা: দিল্লির ইন্দিরা গাঁধী ইন্ডোর স্টেডিয়ামে রাহুল গাঁধী। শনিবার কংগ্রেসের প্লেনারিতে। ছবি: পিটিআই।

সন্দীপন চক্রবর্তী ও প্রেমাংশু চৌধুরী
কলকাতা ও নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৮ ০২:৪১
Share: Save:

বিজেপি-কে ঠেকাতে সমমনোভাবাপন্ন দলগুলির সঙ্গে সমঝোতার ডাক দিয়েছে কংগ্রেস। বাস্তবসম্মত দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বিরোধী দলগুলির সঙ্গে ‘অভিন্ন কর্মসূচি’ নেওয়ার পক্ষে প্রস্তাবও পাশ হয়েছে শনিবার কংগ্রেসের প্লেনারি অধিবেশনে। শুধু তা-ই নয়, ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের জন্য ঋণ মকুবের দাবি এবং গরিব মানুষের উন্নতির স্বার্থে বহুমুখী পরিকল্পনার প্রস্তাবও কংগ্রেস নিয়েছে। সনিয়া-রাহুল গাঁধীর দলের এই মনোভাবকে আপাতদৃষ্টিতে ইতিবাচক বলেই মনে করছে সিপিএম। আর্থিক নীতি নিয়ে কংগ্রেসের আনুষ্ঠানিক অবস্থান কী হয়, তা দেখে নিয়েই বিজেপি-বিরোধী বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলার লক্ষ্যে নতুন করে চেষ্টা শুরু করতে চান সীতারাম ইয়েচুরিরা।

সদ্যই উত্তরপ্রদেশের উপনির্বাচনে পুরনো গৎ ছেড়ে বেরিয়েছে সিপিএম। গোরক্ষপুর ও ফুলপুর লোকসভা কেন্দ্রে নিজেদের সাচ্চা অবস্থান বজায় রাখতে আগের মতো আর প্রার্থী দাঁড় করানোর রাস্তায় যায়নি তারা! বরং, কংগ্রেসের প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও সেখানে সিপিএম সমর্থন দিয়েছে সমাজবাদী পার্টিকে। দিল্লিতে দু’দিনের পলিটব্যুরো বৈঠক থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে ওই দুই কেন্দ্রের ভোটদাতা এবং সমাজবাদী পার্টিকে অভিনন্দনও জানানো হয়েছে। কংগ্রেস থাকলে আমরাও থাকব— এই কট্টরপন্থী নির্বাচনী অবস্থান থেকে দলকে বার করে আনা ইয়েচুরির ‘সাফল্য’ হিসাবেই দেখা হচ্ছে। তার পরেই কংগ্রেসের প্রস্তাব তাঁর পক্ষে আরও স্বস্তির কারণ হয়েছে। পলিটব্যুরো বৈঠকের শেষে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক অবশ্যে বলেছেন, ‘‘এটা তো রাজনৈতিক প্রস্তাব। অর্থনৈতিক প্রস্তাব কেমন হয়, দেখা যাক!’’

পলিটব্যুরো বৈঠকের অন্দরে সিপিএমের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট যদিও বলেছেন, উত্তরপ্রদেশ বা বিহারের উপনির্বাচনে বিজেপি-বিরোধী জোটের মধ্যে কংগ্রেস থাকলেই বাতাবরণ অন্য রকম হয়ে যেত। কিন্তু ইয়েচুরি শিবিরের ব্যাখ্যা, আগে এই রকম পরিস্থিতিতে জামানত হারাতে হবে জেনেও সিপিএম প্রার্থী দিয়ে দিত! এখন তা হয়নি। এই ‘নমনীয়তা’কেই আরও প্রসারিত করে কংগ্রেস-সহ ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির ঐক্যের রাস্তা পার্টি কংগ্রেসে খুলতে চান ইয়েচুরিরা। কারণ, তাঁদের মাথায় রাখতে হচ্ছে বাংলার সমীকরণ। উত্তরপ্রদেশে না হয় এসপি বা তামিলনাড়ুতে ডিএমকে-র সঙ্গে সমঝোতা করা হল। তার পরে ওই দলগুলি কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মেলাল কি না, তা নিয়ে মাথা না ঘামানোর কৌশল নেওয়া হল! কিন্তু বাংলায় এমন ঘুরপথে যেতে গেলে তৃণমূলের সঙ্গে সমঝোতায় যেতে হতে পারে সিপিএমকে! যা মেনে নেওয়া তাদের কাছে এখনও অসম্ভব!

আরও পড়ুন: দ্বন্দ্ব নয়, হুঁশিয়ারি রাহুলের

তেলুগু দেশম সমর্থন তুলে নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনায় তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে সিপিএম এবং তৃণমূল, দু’পক্ষই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সব বিরোধীকে একজোট হওয়ার ডাক দিয়েছেন। এই প্রশ্নে ইয়েচুরির অবশ্য সতর্ক জবাব, ‘‘লোকসভা ভোটের আগে এখন গঙ্গা-যমুনা-গোদাবরী-কাবেরী দিয়ে অনেক জল গ়়ড়াবে! নজর রাখতে হবে!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE