গুজরাতে গরবার আসর। ছবি:সংগৃহীত।
গরবা দেখার ‘অপরাধে’ পিটিয়ে মারা হলো এক দলিতকে। রবিবার ভোররাতে ঘটনাটি ঘটেছে গুজরাতের অানন্দ জেলার ভদ্রানিয়া গ্রামে।
পুলিশ সূত্রের খবর, গ্রামের মন্দিরে সামনে বসে গরবা নাচ দেখছিলেন চার যুবক। মন্দির চত্বরের গরবায় অংশ নিয়েছিলেন পটেল সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ। তাদের কাছ থেকেই প্রথমে দলিতদের উদ্দেশে কটূক্তি ভেসে আসে। তার পরে পটেল সম্প্রদায়ের কয়েক জন দলিতদের উপর চড়াও হয়ে তাঁদের ‘গরবা দেখার কোনও অধিকার নেই’ বলে বেদম মারধর করতে শুরু করে। জয়েশ সোলাঙ্কি নামে ২১ বছর বয়সি এক জন দলিত যুবকের মাথা দেওয়ালে ঠুকে দেয় তারা। জয়েশকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে ডাক্তাররা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। আট জনের নামে এফআইআর দায়ের হলেও এখনও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
আরও পড়ুন: ৩০ বছর সেনায়, আজ ভারতীয় কিনা প্রমাণ দিতে হচ্ছে
কয়েক দিন আগেই এই গুজরাতে গোঁফ রাখার ‘অপরাধে’ দলিতদের মারধরের দু’টি ঘটনা সামনে এসেছে। একটি ঘটনা ২৫ সেপ্টেম্বরের। গুজরাতের রাজধানী গাঁধীনগর থেকে মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরে লিম্বোদরা গ্রামে গরবা দেখে বাড়ি ফিরছিলেন কলোল তালুকার লিম্বোদরা গ্রামের বাসিন্দা পীযূষ পারমার ও তাঁর সম্পর্কিত ভাই দিগন্ত মাহেরিয়া। বছর চব্বিশের পীযূষের অভিযোগ, সেই সময় তাঁদের উদ্দেশে জাতি বৈষম্যমূলক কথাবার্তা বলছিল কেউ। অন্ধকার থাকায় তাদের প্রথমে দেখতে পাননি পীযূষরা। পরে কাছে গিয়ে দেখেন, দরবার সম্প্রদায়ের তিন জন এই ধরনের মন্তব্য করছেন। ঝামেলা এড়াতে তাঁরা তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে আসেন। কিন্তু বাড়ি পৌঁছতেই সেখানে চড়াও হয় দরবার সম্প্রদায়ের লোকজন। তারা পীযূষকে বেধড়ক মারধর করেন। পীযূষের দাবি, ‘‘মারধরের সময়ে দরবাররা বলছিল, নিচু সম্প্রদায়ের লোক হয়েও কী করে গোঁফ রাখার কথা ভাবিস!’’
দলিত নিগ্রহের এই ঘটনায় জড়িত তিন জনকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। তিন অভিযুক্ত পীযূষদের গ্রামেরই বাসিন্দা। ঘটনার পরের দিনই তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ।
এর দিন পাঁচেক আগে গুজরাতেই গোঁফ রাখার জন্য আর এক দলিত যুবককে মারধর করা হয়েছিল।
ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্যে একের পর এক দলিত নিগ্রহের ঘটনায় আসরে নেমেছে কংগ্রেস। কংগ্রেস নেতা রাজ বব্বর বলেন, ‘‘এই তো মোদীর নতুন ভারতের স্বপ্ন! নিজের রাজ্যেই এমন বৈষম্যের ঘটনা ঘটে চলেছে। এটাই আসলে মোদীর ‘গুজরাত মডেল’-এর উন্নয়ন!’’
চুপ করে নেই অন্য বিরোধী দলগুলিও। প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তোপ দেগে তাদের বক্তব্য, যখন থেকে মোদী ক্ষমতায় এসেছেন, তখন থেকেই দেশে এ ধরনের অসহিষ্ণুতার নজির বাড়তে শুরু করেছে। মোদী মুখে এক কথা বলেন, কিন্তু তলে তলে তাঁর দলের প্রশ্রয়েই একের পর এক এই ধরনের ঘটনা ঘটেই চলেছে।
কার্টুন: অর্ঘ্য মান্না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy