Advertisement
E-Paper

মোদীর জোর নোট বাতিলে, প্যাঁচে দল

উত্তরপ্রদেশের ভোটে নোট বাতিলের সাফল্যকে অস্ত্র করে প্রচার করতে চাইছেন নরেন্দ্র মোদী। নিজেও সেই রাজ্যে নানা সভায় এই পদক্ষেপের সাফল্যের কথা প্রচার করছেন তিনি। কিন্তু স্থানীয় বিজেপি নেতাদের অভিজ্ঞতা অন্য।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৪:০৪

উত্তরপ্রদেশের ভোটে নোট বাতিলের সাফল্যকে অস্ত্র করে প্রচার করতে চাইছেন নরেন্দ্র মোদী। নিজেও সেই রাজ্যে নানা সভায় এই পদক্ষেপের সাফল্যের কথা প্রচার করছেন তিনি। কিন্তু স্থানীয় বিজেপি নেতাদের অভিজ্ঞতা অন্য। মানুষকে নোট বাতিলের মাহাত্ম্য বোঝাতে গিয়ে প্রায়ই বিপাকে পড়ছেন তাঁরা। ওই নেতাদের মতে, নোট বাতিলের কথা প্রচারে এড়িয়ে যাওয়াই শ্রেয়। দিল্লির চাপ আর বাস্তব, এই দুই পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে বিজেপি নেতা-কর্মীদের এখন উভয় সঙ্কট।

বিজেপি সূত্রে খবর, নোট বাতিল নিয়ে মানুষের মধ্যে হাহাকার পড়েছে। তাই বিষয়টি নিয়ে কিছু না বলারই আর্জি জানিয়েছিলেন উত্তরপ্রদেশের বিজেপি নেতারা। তাঁদের মতে, এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। রাহুল গাঁধী সব সভায় এই বিষয়ে সরব হচ্ছেন। অখিলেশ যাদব নোট-বাতিলে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দিয়ে বসে আছেন। উত্তরপ্রদেশের বিজেপি নেতাদের মতে, এই অবস্থায় নোট বাতিল নিয়ে উচ্চবাচ্য না করাই মঙ্গল। কিন্তু পিছু হটতে চাইছেন না খোদ মোদী। ক্ষোভ উপেক্ষা করেই মানুষকে বোঝানোর দাওয়াই দিয়েছেন তিনি।

এর একটি স্পষ্ট ঝলক আজ পাওয়া গিয়েছে সংসদেও। রাষ্ট্রপতির বক্তৃতা নিয়ে আলোচনায় আজ মোদী ঠায় বসে রইলেন লোকসভায়। কাল প্রধানমন্ত্রীর জবাবি বক্তৃতা দেওয়ার আগে আজ দুই বিজেপি নেতা নোট বাতিলের ‘মাহাত্ম্য’ তুলে ধরলেন। নরেন্দ্র মোদীর চুপসে যেতে বসা ৫৬ ইঞ্চিকেও ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে বড় করে দেখানোর চেষ্টা করলেন। এই কাজটি করার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল উত্তরপ্রদেশেরই দুই সাংসদকে। মহেশ শর্মা ও বীরেন্দ্র সিংহ। মোদীর লোকসভা কেন্দ্র বারাণসীর ঠিক পাশের কেন্দ্র হল ভাদোহি। তার সাংসদ বীরেন্দ্র সিংহ কৃষক নেতা। তিনি দাবি করেছেন, নোট বাতিলে কৃষকদের কোনও ক্ষতিই হয়নি। নরেন্দ্র মোদীর পক্ষেই এমন দৃঢ় সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব।

মোদীর চাপে রাজ্য নেতাদের ঠেকায় পড়ে এ কথা বলতে হচ্ছে বটে। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের এক বিজেপি নেতা বলেন, ‘‘বাস্তবের ছবিটা একেবারেই উল্টো। মানুষকে বোঝাতে গেলেই তেড়েফুঁড়ে আসছেন অনেক জায়গায়।’’ দলের আর এক নেতার মতে, নোট বাতিল নিয়ে প্রচার করতে গিয়ে বুমেরাং হচ্ছে। তাই দলের নেতৃত্বকে বোঝানো হবে যে এই প্রসঙ্গ এড়ানোই শ্রেয়। কিন্তু মোদী নিজেই গত কাল আলিগড়ের সভায় নোট বাতিলের কথা বলে এসেছেন।

বিজেপির মধ্যে এই দ্বন্দ্ব দেখে কংগ্রেসও তার সুযোগ নিতে চাইছে। ইতিমধ্যেই গত কাল যৌথ সভায় রাহুল-অখিলেশ এক যোগে বিঁধেছেন মোদীকে। আজও উত্তরপ্রদেশের সভায় রাহুল দাবি করেন, নোট বাতিল করে আসলে ৫০টি পরিবারকে ১ লক্ষ ১০ হাজার কোটি টাকা ফায়দা করার সুযোগ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এই টাকা উত্তরপ্রদেশের যুবকদের দিলে তাঁরা নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে যেতেন। রাহুল জনসভায় বলেন, ‘‘কৃষকদের ঋণ মকুবের দাবি নিয়ে আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়েছিলাম। কিন্তু মোদীজি একটি শব্দও বলেননি।’’

লোকসভায় এ দিন রাহুলের অনুপস্থিতিতে হাল ধরেন সনিয়া। দলের নেতা মল্লিকার্জুন খড়্গেকে নোট বাতিলে মানুষের হাহাকার, মৃত্যু নিয়ে বলতে বলেন। পাশে বসে থেকে সনিয়াও নিরন্তর রসদ জুগিয়ে গিয়েছেন। মোদীর বক্তব্য পেশের আগে সনিয়া খড়্গেকে দিয়ে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী কথায় কথায় প্রশ্ন তোলেন, ৭০ বছরে কী হল? কিন্তু কংগ্রেস ছিল বলেই সংবিধান রক্ষা পেয়েছে।’’

demonetization Modi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy