Advertisement
E-Paper

উস্কানিতে কূটনীতিই পথ দিল্লির

তবে একই সঙ্গে চলতি সঙ্কট কাটাতে আরও কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এক, কূটনৈতিক স্তরে দৌত্য বাড়িয়ে পারস্পরিক সমঝোতার রাস্তায় আসার চেষ্টা করা।

অগ্নি রায়

শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০১৭ ০৪:৩২
নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।

নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।

স্বাধীনতা দিবসের বক্তৃতায় চিন নিয়ে নীরবতা বজায় রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। চিন নানা ভাবে চাপ বাড়াচ্ছে ঠিকই। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্রের খবর, ডোকলাম থেকে ‘রণে ভঙ্গ’ দেওয়ার আপাতত কোনও সম্ভাবনা নেই। যত ক্ষণ না পিএলএ পিছু হটবে সেই চাপের মুখে পাল্টা দাঁড়িয়ে থাকবে ভারতীয় সেনা।

তবে একই সঙ্গে চলতি সঙ্কট কাটাতে আরও কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এক, কূটনৈতিক স্তরে দৌত্য বাড়িয়ে পারস্পরিক সমঝোতার রাস্তায় আসার চেষ্টা করা। এ ক্ষেত্রে আগ বাড়িয়ে উদ্যোগী হতেও পিছপা হবে না সাউথ ব্লক। দুই, চিন নিয়ে শীর্ষ পর্যায়ে যতটা সম্ভব কটূক্তি কমানো। যে কারণে প্রতিরক্ষামন্ত্রী অরুণ জেটলি আজ লাদাখে চিনা সেনার অনুপ্রবেশ, পাথর ছোড়া, দু’পক্ষের ধস্তাধস্তি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন।

দু’দেশের মধ্যে ‘ওয়ার্কিং মেকানিজম ফর কনসালটেশন অ্যান্ড কোঅর্ডিনেশন’ (ডবলিউ এম সি সি)-র বৈঠক যাতে শীঘ্রই আয়োজন করা যায় তার জন্য ইতিমধ্যেই নয়াদিল্লি ট্র্যাক টু-র মাধ্যমে বেজিংকে অনুরোধ করেছে বলে সূত্রের খবর। এই মেকানিজমের মাধ্যমে অতীতে ২০১৩-সহ বিভিন্ন সময়ে ভারত–চিন সীমান্ত সঙ্কট মেটানো সম্ভব হয়েছে। দু’দেশের সেনা এবং বিদেশ মন্ত্রকের শীর্ষ কর্তারা রয়েছেন এই মেকানিজমে। নয়াদিল্লির পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হচ্ছে, ব্রিকস সম্মেলন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর চিন-যাত্রার আগেই যাতে সেই বৈঠক করা সম্ভব হয়। কিন্তু চিন সরকারের কাছ থেকে এ ব্যাপারে এখনও সবুজ সংকেত মেলেনি। শুধু তাই নয়, গত কাল স্বাধীনতা দিবসে ‘সেরিমোনিয়াল বর্ডার মিটিং’-এর জন্যও পিএলএ-কে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। উদ্দেশ্য, দ্বিপাক্ষিক তাপমাত্রা কমানো। কিন্তু তাতেও সাড়া দেয়নি বেজিং। উল্টে স্বাধীনতা দিবসেই চিনা সেনা লাদাখের প্যাংগং হ্রদের কাছে ভারতীয় এলাকায় ঢুকে আসে। পাথর ছোড়ে ভারতীয় সেনার দিকে। উদ্দেশ্য, পেশি প্রদর্শনের মাধ্যমে চাপ বাড়ানো। কিন্তু ভারত যে এ নিয়ে উত্তেজনা বাড়াতে চাইছে না, তা স্পষ্ট হয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জেটলির কথায়। লাদাখে চিনা সেনার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নের মুখে তিনি আজ বলেন, ‘‘এই ধরনের ছোটখাটো ঘটনা নিয়ে সরকার কোনও মন্তব্য করে না।’’

আরও পড়ুন: লাদাখে পাথর ছুড়ল চিনারা

প্রশ্ন হল, চিন যদি ডোকলাম প্রশ্নে এমনটাই অনমনীয় থাকে, সে ক্ষেত্রে নয়াদিল্লির ভূমিকা কী হবে? মন্ত্রকের এক কর্তা ঘরোয় ভাবে বললেন, ‘‘ভারত-চিন সম্পর্ক বহুমাত্রিক। শিল্প, বাণিজ্য ও অর্থনীতি তার এক বিরাট দিক। ফলে শুধুই ডোকলামের কারণে বেজিং যে সমস্তটাই চৌপাট করে দেবে, এমনটা মনে হয় না। তবে আমরা নিজে থেকে সেনা সরাবো না। যত দিন না কূটনৈতিক কোনও সমাধান হচ্ছে সেনা বহাল থাকবে।’’

এটা ঠিকই যে, চিনা সীমান্তে ভারতীয় পরিকাঠামো, সড়ক ব্যবস্থা অনুন্নত। এবং তা নিয়ে কেন্দ্রকে বারবার সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। কিন্তু যুদ্ধের পরিসস্থিতিতে সেটা শাপে বরও বটে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, ‘‘উত্তরাখণ্ড, অরুণাচলপ্রদেশ এবং সিকিম সীমান্তে চিনা সেনা ঢুকলে বেঘোরে মারা পড়বে। কারণ, ওই সব এলাকায় রাস্তা নেই। পাহাড় থেকে নেমে আবার পথ করে নিয়ে উঠতে হবে। ভারত থাকবে অপেক্ষাকৃত সুবিধাজনক উচ্চতায়।’’

Narendra Modi India-China China India ভারত চিন
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy