Advertisement
E-Paper

নালায় ভাসছিল চিকিৎসকের দেহ

মঙ্গলবার দুপুর থেকে নিখোঁজ ছিলেন বম্বে হাসপাতালের গ্যাস্ট্রোএনটেরোলজিস্ট দীপক অম্রপুরকর। আজ ওরলির কাছে সমুদ্র তীরবর্তী একটি নালায় পড়ে থাকতে দেখা যায় ওই চিকিৎসকের দেহ।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:০৫
দীপক অম্রপুরকর

দীপক অম্রপুরকর

বৃষ্টিটা আর একটু ধরলে বেরোতে বলেছিলেন সহকর্মীরা। কিন্তু কিছুতেই রাজি হননি ডাক্তারবাবু। হাসপাতালের ক্যাফেটেরিয়ায় দুপুরের খাওয়াটা সেরে বাড়ির উদ্দেশে বেরিয়ে পড়েন। রাস্তায় তত ক্ষণে কোমর-জল। এলফিনস্টন রোডে বাড়ির কাছেই চলে এসেছিলেন। কিন্তু জলের মধ্যে গাড়ি আর এগোয়নি। বাকি পথটা হেঁটেই চলে যাবেন ভেবে গাড়ি থেকে নেমেছিলেন তিনি।

ব্যস, ওর পরে আর জানা যায়নি। মঙ্গলবার দুপুর থেকে নিখোঁজ ছিলেন বম্বে হাসপাতালের গ্যাস্ট্রোএনটেরোলজিস্ট দীপক অম্রপুরকর। আজ ওরলির কাছে সমুদ্র তীরবর্তী একটি নালায় পড়ে থাকতে দেখা যায় ওই চিকিৎসকের দেহ।

যত দিন যাচ্ছে, প্রকাশ্যে আসছে একের পর এক মর্মান্তিক খবর। বুধবার সকালে সায়নে একটি গাড়ির ভিতরে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায় প্রিয়ম মৈথিয়া নামে এক আইনজীবীকে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। ২৮ বছরের প্রিয়ম গাড়ির মধ্যে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা গিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। ইন্সপেক্টর মৃদুলা লাড় জানান, কোনও এক প্রত্যক্ষদর্শী মঙ্গলবার রাতে প্রিয়মকে দেখতে পান। তিনি গাড়ি থেকে নেমে আসতে বলেছিলেন ওই যুবককে। কিন্তু প্রিয়ম জলে নামতে চাননি।

চিকিৎসক অম্রপুরকরের নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পরেও এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছিলেন, তিনি ম্যানহোলে পড়ে যান। পুলিশের এক কর্তা সুনীল দেশমুখ বলেন, ‘‘কয়েক জন দাবি করেছিলেন, ওই চিকিৎসক ম্যানহোলে পড়ে গিয়েছেন। তাঁর গলার আওয়াজ পেয়ে অনেকেই ঘুরে তাকান। কিন্তু তত ক্ষণে সব কিছু হাতের বাইরে।’’ পরে জলমগ্ন রাস্তায় বেশ কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় দমকল কর্মীরা ম্যানহোলটা খুঁজে পান। জল একটু নামলে ম্যানহোলের কাছে অম্রপুরকরের ছাতাও মেলে। এর পর আজ ওরলির কাছে একটি নালায় তাঁর দেহ উদ্ধার হয়।

আরও পড়ুন: দশতলায় পড়ে দেহ, যুবকের মৃত্যু ঘিরে রহস্য সল্টলেকে

বুধবার সকালে ঠাণের সেন্ট্রাল জেলের নালার মধ্যে মিলেছে ৩৭ বছরের এক যুবকের দেহ। রাতিউল্লা কুরেশি নামে ওই যুবক কোরাম মলের একটি দোকানে কাজ করতেন। পুলিশ জানিয়েছে, শেষ বার তাঁকে দেখা গিয়েছিল শপিং মলের বাইরে। কয়েক জন মহিলাকে নিয়ে রাস্তা পার হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। ওই মহিলাদেরও খোঁজ নেই। কুরেশির দাদা শরিফ বলেন, ‘‘সন্ধে সাড়ে পাঁচটা নাগাদ ভাই ফোনে বলেছিল, কোনও বাস পাচ্ছে না। আমি বললাম গাড়ি নিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু চেম্বুরের কাছে গিয়ে আটকে যাই। পরে রাত ৮টা নাগাদ ফের ফোন করি। কিন্তু তখন আর যোগাযোগ করতে পারিনি।’’

ঠাণেরই রাস্তায় ২৩ বছরের এক যুবকের দেহ মেলে রাস্তায়। চিকিৎসকেরা জানান, বৃষ্টিতে ভিজে ও প্রচণ্ড ঠান্ডায় মারা গিয়েছেন তিনি। ঘাটকোপারে বাড়ির উপরে ট্রান্সফর্মার পড়ে গিয়ে মারা গিয়েছেন ৪২ বছরের রামেশ্বর তিওয়ারি। হাসপাতালে ভর্তি তাঁর স্ত্রী-পুত্র। সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়ে আর ফেরেননি বছর পঞ্চান্নর সদানন্দ ও ২৮ বছরের কৈলাশ কোলি। ১৪ বছরের কিশোরী গৌরী জায়সবালকে এখনও খুঁজে চলেছেন তার মা। চোখের জল মুছতে-মুছতে বললেন, ‘‘ও কি আর ঘরে ফিরবে?’’

Mumbai rain Mumbai Flood Deepak Amarapurkar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy