বিপর্যস্ত: জল ভেঙে বাড়ির পথে। মঙ্গলবার মুম্বইয়ে। ছবি: পিটিআই।
জলমগ্ন রেললাইন, রাস্তায় ডুবুডুবু চার চাকা, বিমানবন্দরে ব্যাহত উড়ান পরিষেবা, ছাতা মাথায় মানুষের লম্বা লাইন, কোমর জল ঠেলে স্কুলে থেকে বাড়ি ফেরা। মুম্বইয়ের বর্ষার চেনা আতঙ্কই যেন ফিরে এসেছিল আজ সকালে। সাড়ে আটটা থেকে সাড়ে এগারোটা টানা তিন ঘণ্টায় প্রায় ৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টি দেখেই প্রমাদ গোনে বৃহন্মুম্বই পুরসভা। রাস্তায় নেমে পড়ে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। টুইট করে নাগরিকদের সতর্ক করে মুম্বই পুলিশও। বলা হয়, ‘‘খুব দরকার না পড়লে বাড়ি থেকে বেরোবেন না।’’
ফিরে এল ১২ বছর আগের সেই ভয়াবহ স্মৃতি। ২৬ জুলাই, ২০০৫। সে দিন সকাল আটটা নাগাদ আকাশভাঙা বৃষ্টি শুরু হয় মুম্বই শহর জুড়ে। তার পর কার্যত এক টানা ২৪ ঘণ্টার প্রবল বৃষ্টিতে ডুবে গিয়েছিল মুম্বই ও তার আশপাশের শহরতলি। এ বার পরিস্থিতি যাতে হাতের বাইরে চলে না যায়, তাই আগে থেকেই সতর্ক ছিল পুলিশ-প্রশাসন। তবে তাতেও বিপর্যয় পুরো সামাল দেওয়া যায়নি। প্রবল বৃষ্টিতে বাড়ি ধসে ২ শিশু ও এক মহিলার মৃত্যু হয়েছে বলে রাত পর্যন্ত পাওয়া খবরে জানা গিয়েছে।
মাস চারেক হলো চাকরি সূত্রে মুম্বই গিয়েছেন কলকাতার সম্পূর্ণা মিত্র। আজ সকালের বৃষ্টি দেখে প্রথমে বুঝতেই পারেননি, দুপুরের মধ্যে পরিস্থিতি কতটা জটিল হতে পারে। বললেন, ‘‘বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ ভিখরোলির অফিস থেকে যখন বেরোনোর চিন্তা করছি, গোটা মুম্বই ততক্ষণে এক কোমর জলের তলায়। অফিস ফেরার জন্য বাসের ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু ঝোড়ো হাওয়ায় বাসও ছাড়তে পারছিল না।’’ হাঁটু জল ভেঙে রাত আটটায় এক বান্ধবীর পিজি-তে ঢোকেন বছর তেইশের তরুণী।
আরও পড়ুন:দূর থেকে নিম্নচাপের কেরামতি, বৃষ্টি আজও
বিপদ বাড়ায় বিকেল সাড়ে চারটের ভরা জোয়ার। পানভেল, সাকিনাকা, কুরলা, লোয়ার প্যারেল, দাদার, আন্ধেরি, খার ওয়েস্ট, ঘাটকোপার, সিওন— সর্বত্র দুর্ভোগের একই চিত্র। পুরোপুরি স্তব্ধ ছিল সেন্ট্রাল, নর্থ আর হারবার লাইনের ট্রেন। বন্ধ করে দেওয়া হয় বান্দ্রা-ওরলি সি লিঙ্কও।
দুপুরেই বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীস। ছুটি দিয়ে দেওয়া হয় সরকারি দফতরে। কাল মুম্বইয়ে ছুটি ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মুম্বইকে সব রকমের সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টা ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে মুম্বই-সহ মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন অংশ, গুজরাত আর গোয়ায়। জারি হয়েছে চূড়ান্ত সতর্কতা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy