Advertisement
E-Paper

বিরোধীদের হট্টগোলে আটকে গেল অনাস্থাও

সকাল এগারোটায় লোকসভার অধিবেশন শুরু হতে না হতেই, একাধিক বিরোধী দল ওয়েলে নেমে হট্টগোল শুরু করে দেয়। মুলতুবি হয়ে যায় অধিবেশন।

অনমিত্র সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৮ ০৩:৪৪

নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা জানিয়ে আজ উত্তাল হল লোকসভা। এতটাই যে অন্ধ্রপ্রদেশের জগন্মোহন রেড্ডির দল ওয়াইএসআর কংগ্রেস ও চন্দ্রবাবু নায়ডুর দল তেলুগু দেশম পার্টির পক্ষে আনা অনাস্থা প্রস্তাব স্পিকার সুমিত্রা মহাজন গ্রহণ করতে ব্যর্থ হলেন।

সকাল এগারোটায় লোকসভার অধিবেশন শুরু হতে না হতেই, একাধিক বিরোধী দল ওয়েলে নেমে হট্টগোল শুরু করে দেয়। মুলতুবি হয়ে যায় অধিবেশন। বেলা বারোটা নাগাদ অধিবেশন শুরু হলে ফের বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন মূলত ডিএমকে সাংসদেরা। দাবি, কাবেরী জল বোর্ড গঠন। অন্য দিকে, অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার দাবি জানাতে থাকেন অন্ধ্রের দু’দলের সাংসদেরা।

হট্টগোলের মধ্যেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ স্পিকারকে বলেন, ‘‘আমরা অনাস্থা-সহ সব রকম আলোচনার জন্য প্রস্তুত।’’ তাতে কোনও কাজ হয়নি। স্পিকার বলেন, ‘‘দু’টি অনাস্থা প্রস্তাব জমা পড়েছে। কিন্তু বিশৃঙ্খলার মধ্যে সাংসদদের মাথা গুনতে পারছি না। ফলে কারা প্রস্তাবের পক্ষে বা কারা বিপক্ষে তা স্পষ্ট নয়।’’ শৃঙ্খলা না থাকায় অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করে দিয়ে এ দিনের মতো অধিবেশন স্থগিত করে দেন তিনি। যদিও আগামিকাল ফের অনাস্থা আনার পক্ষে দুই দল।

আরও পড়ুন: চন্দ্রবাবুর পাল্টা চালেই বিপাকে বিজেপি

পরে সংসদের বাইরে সংসদীয় মন্ত্রী অনন্তকুমার বলেন ‘‘আসলে বিরোধীরা অনাস্থা প্রস্তাব আনতে ভয় পাচ্ছেন। তাই এত হট্টগোল।’’ অন্য দিকে তৃণমূল নেতা সৌগত রায় আজ দুপুরে স্পিকারকে লেখেন, সংবিধানে কোথাও বলা নেই বিশৃঙ্খলা হলে অনাস্থা প্রস্তাব গ্রহণ করা যাবে না।

কী ভাবে অনাস্থা

• অনাস্থা প্রস্তাব আনা যায় একমাত্র লোকসভায়

• প্রথমে লিখিত ভাবে স্পিকারের কাছে প্রস্তাব জমা দিতে হয়

• অন্তত ৫০ জন সাংসদ সমর্থন করলে আলোচনা হয়

• আলোচনার শেষে প্রস্তাবের পক্ষে-বিপক্ষে ভোটাভুটি

• প্রস্তাবের পক্ষে অধিকাংশ ভোট পড়লে সরকার পড়ে যায়

চন্দ্রবাবু এনডিএ থেকে বেরিয়ে যেতেই অন্ধ্রপ্রদেশে তাঁর প্রতিপক্ষ জগন্মোহন অনাস্থা প্রস্তাব আনার কথা ঘোষণা করেন। যদিও বিরোধী শিবিরের একাংশের আশঙ্কা, জগন্মোহনের প্রস্তাব আদতে মোদীর পাতা ফাঁদ হতে পারে। তাই তাঁরা আগ বাড়িয়ে কিছু করার পক্ষপাতী নন।

প্রকাশ্যে অবশ্য রাহুল গাঁধী থেকে চন্দ্রবাবু— সকলেই অনাস্থা প্রস্তাব আনার উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। বিরোধী শিবিরের নেতাদের বক্তব্য, শেষ পর্যন্ত অনাস্থা এলে তার পক্ষেই ভোট দেওয়া হবে। তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘জেতা-হারা পরের ব্যাপার। নীরব মোদী থেকে অর্থনীতির বেহাল দশা নিয়ে তো অন্তত সরকারকে আক্রমণ করার সুযোগ পাব। কারণ এই অধিবেশনে সরকার তো পালিয়ে বেড়াচ্ছে।’’

অন্য দিকে এনডিএ-র শরিক হয়েও শিবসেনা এবং বিজেপি ঘনিষ্ঠ হয়েও এডিএমকে নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছে। তার পরেও অবশ্য ভয় নেই বিজেপির। লোকসভায় তাদের যা শক্তি তাতে অনাস্থা প্রস্তাবের উপরে ভোটাভুটি হলে তারা অনায়াসে জিতবে। সে ক্ষেত্রে প্রশ্ন হল, বিজেপি সরাসরি রাজি হচ্ছে না কেন?

এক প্রবীণ সাংসদের মতে, ‘‘দু’পক্ষের তরজা যা-ই হোক না কেন, মনে হচ্ছে অনাস্থা প্রস্তাব আসুক তা কোনও পক্ষই চায় না। ফলে অবস্থাটা এখন, খাচ্ছে কিন্তু গিলছে না।’’

Parliament Lok Sabha Session Sumitra Mahajan TDP TSR Rajnath Singh লোকসভা সুমিত্রা মহাজন
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy