বেকসুর খালাস রাজা এবং কানিমোঝি। ছবি: সংগৃহীত।
ভরা আদালতে বিচারক যখন রায় শোনাচ্ছেন, তখন রাজার চোখে জল। যে মামলায় অভিযুক্ত হয়ে প্রাক্তন টেলি যোগাযোগ মন্ত্রী রাজাকে তিহাড়ে ১৫ মাসেরও বেশি জেল খাটতে হয়েছে, সেই ‘টু-জি কেলেঙ্কারি’তেই বৃহস্পতিবার তিনি বেকসুর রেহাই পেয়েছেন। একা রাজা নন, ওই মামলায় অভিযুক্ত ১৭ জনকেই রেহাই দিয়েছে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত। তাঁর মধ্যে ডিএমকে কর্ণধার এম করুণানিধির মেয়ে এম কানিমোঝিও রয়েছেন।
আর গোটা ঘটনায় যেন স্বস্তির বাতাস বইছে কংগ্রেসে। দিন কয়েক আগেই দলের নতুন সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব নিয়েছেন রাহুল গাঁধী। গুজরাত নির্বাচনেও দলের ফল যথেষ্ট ভাল হয়েছে। সেই আবহে এ দিন প্রথম ইউপিএ সরকারের আমল নিয়ে ওঠা প্রায় ১ লাখ ৭৬ হাজার কোটি টাকার ‘টু-জি কেলেঙ্কারি’তে রেহাই মিলল। এ দিন সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণের অভাবে ওই ১৭ জনের প্রত্যেককে বেকসুর রেহাই দিয়েছে।
এই রায়ে স্বভাবতই কংগ্রেসের খুশি হওয়ার কথা। সেই খুশির ঝলক ধরা পড়েছে মনমোহন সিংহের কথায়। যখন এই কেলেঙ্কারির কথা প্রকাশ্যে আসে, তিনি তখন প্রধানমন্ত্রী। আবার যে সময়ে এই কেলেঙ্কারি হয়েছিল বলে দাবি করা হয়, সেই সময়েও তিনি প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। মামলার রায় প্রকাশ্যে আসতেই মনমোহন বলেন, ‘‘আমি আর কি বলব! এই রায় নিজেই যা বলার বলছে।’’ যদিও এ দিনের রায়ের পর কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি জানিয়েছেন, কংগ্রেস নেতারা আদালতের রায়কে ভুল ভাবে ব্যাখ্যা করছেন।
আরও পড়ুন
সাংসদদের মাঝেই কেঁদে ফেললেন মোদী, তিন বার
দূষণে দিল্লিকে টপকাল কলকাতা! মানতে নারাজ রাজ্য ও কেন্দ্রীয় পর্ষদ
মুখোমুখি মোদী আর মনমোহন, কাটবে কি জট
২০১০-এ ‘কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল অব ইন্ডিয়া’ (ক্যাগ)-র একটি রিপোর্টে জানা যায়, প্রথম ইউপিএ আমলে টু-জি লাইসেন্স এবং স্পেকট্রাম দুর্নীতিতে সরকারের প্রায় ১ লাখ ৭৬ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। দ্বিতীয় ইউপিএ আমলে ওঠা ওই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দেন টেলি যোগাযোগ মন্ত্রী এ রাজা। ওই কেলেঙ্কারিতে রাজা এবং কানিমোঝি-সহ মোট ১৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় সিবিআইকে। কিন্তু সিবিআই বিচারক ও পি সাইনি এ দিন জানিয়েছেন, রাজা-সহ বাকি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্তকারী সংস্থা কোনও প্রমাণ দাখিল করতে পারেনি। আর সে কারণেই সকলকে বেকসুর রেহাই দেওয়া হয়েছে।
রায় শোনার পর আদালতের বাইরে উচ্ছ্বসিত কানিমোঝি এবং এ রাজা। ছবি: পিটিআই এবং রয়টার্স।
তবে, উচ্চ আদালতে যদি এই রায় কেউ চ্যালেঞ্জ করেন সে ক্ষেত্রে প্রত্যেক অভিযুক্তকে পাঁচ লাখ টাকার বন্ডে আগাম জামিন নিতে হবে। এ দিন বিচারক বলেন, ‘‘আদালতে যে তথ্যপ্রমাণ পেশ করা হয়েছে, তা থেকে কোনও ভাবেই প্রমাণ হয় না যে অভিযুক্তরা অপরাধমূলক কাজ করেছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy