Advertisement
E-Paper

রোজ বদল সিম, রাতে গোপনে বৈঠক জিজ্ঞেসের

চার দিন ধরে লাগাতার ফোনে ও স্থানীয় সাংবাদিক, আন্দোলনকারীদের মাধ্যমে নানা ভাবে খোঁচাখুঁচি করেও যাঁর নাগাল মেলেনি, অবশেষে পাওয়া গিয়েছে তাঁকে। সঙ্গে পরামর্শ, যেতে হবে ভোরে।

অগ্নি রায়

শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:১৬
জিজ্ঞেস মেওয়ানি। —নিজস্ব চিত্র।

জিজ্ঞেস মেওয়ানি। —নিজস্ব চিত্র।

কোলে অটোমেটিক মেশিনগান। হাত দু’টি সচল মোবাইলে। দলিত কলোনি চুভারনগরের এক দোতলা বাড়ির উঠোনে বসে অপেক্ষা করছি। অদূরে বসা উর্দি পরা গুজরাত পুলিশ। আড়চোখে নজর রাখতে রাখতেই পটাপট ক’টি ছবিও তুলে রাখলেন!

চার দিন ধরে লাগাতার ফোনে ও স্থানীয় সাংবাদিক, আন্দোলনকারীদের মাধ্যমে নানা ভাবে খোঁচাখুঁচি করেও যাঁর নাগাল মেলেনি, অবশেষে পাওয়া গিয়েছে তাঁকে। সঙ্গে পরামর্শ, যেতে হবে ভোরে।

কিন্তু ভোরে পৌঁছেও প্রহরাহীন অবস্থায় পাওয়া গেল না জিজ্ঞেস মেওয়ানিকে। এই মুহূর্তে গুজরাতের সবচেয়ে আলোচিত দলিত আন্দোলনকারী। প্রায় ৬০ লক্ষ দলিত গুজরাতবাসীর নয়নের মণি। আর তাই দেখে টনক নড়েছে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের। গত সপ্তাহে হঠাৎই রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর জানায়, জিজ্ঞেসকে তারা সর্বক্ষণের নিরাপত্তা দিতে চায়! জিজ্ঞেস প্রথমে রাজি হননি। এড়াতেও পারেননি রাজাদেশ। অগত্যা মধ্যপন্থা, দিনভর পুলিশ থাকুক। রাতে নয়।

যদিও এই প্রহরার সঙ্গে লুকোচুরি খেলছেন বছর পঁয়ত্রিশের যুবকটি। প্রায় রোজই বদলে ফেলছেন সিম কার্ড। মধ্যরাতে শহরের প্রত্যন্ত প্রান্তে গিয়ে গোপন বৈঠক সারছেন দলিত নেতাদের সঙ্গে। ফিরছেন শেষরাতে। দিনভর তাঁর দর্শনপ্রার্থীদের ছবি এবং কথোপকথন অবশ্য রেকর্ড হচ্ছে আজকের মতোই। জিজ্ঞেসের কথায়, “গোপন নজরদারি আর পিছু ধাওয়া করা তো মোদীজির প্রিয় বিষয়! প্রয়োজনে খুনও। আসলে আমি, অল্পেশ ও হার্দিক যে ভাবে ব্যাটিং করছি গোটা দেশ তো দেখছে। এটাই আসল গুজরাতের ‘অস্মিতা’। সুরাতে তাই তারজালি লাগিয়ে সভা করতে হচ্ছে অমিত শাহকে। না হলে যে পাদুকাবর্ষণ হবে, সেটা উনি জানেন।’’

মোটা কাচের আড়ালে জিজ্ঞেসের চোখদু’টি যেন একটু বেশিই আশাবাদী। শেষ হাসিটা অমিতই হাসবেন, এমন ছবি দেখতেই নারাজ। তবে যে হিসেব তিনি দেখাচ্ছেন তাতেও এটা স্পষ্ট যে, হৈ-হৈ করেই জিতছে বিজেপি।

আরও পড়ুন: রূপাণীর সঙ্কটে কি দলেরই হাত!

এটা ঘটনা যে, তিন তরুণ তুর্কিকে নিয়ে রাহুল গাঁধী যে ভাবে রাজ্য দাপাচ্ছেন, জনমত সমীক্ষাতেও তার কিছুটা ফল দেখা যাচ্ছে। এবিপি নিউজ, লোকনীতি-সিএসডিএস-এর সমীক্ষা বলছে, ভোটের হার কমছে বিজেপির, কংগ্রেসের বাড়ছে। উত্তর গুজরাতে কংগ্রেস ৫% ভোটে এগিয়ে। সৌরাষ্ট্রেও টক্কর কাঁটায় কাঁটায়। কিন্তু সামগ্রিক ভাবে বিজেপির ভোটের হার ৪৭%। কংগ্রেস ৪১%। অগস্টের সমীক্ষায় দেখা গিয়েছিল, মোট ১৮২ আসনের মধ্যে বিজেপি পেতে পারে ১৪৪-১৫২টি। অক্টোবরে তা কিছুটা কমে হয়েছে ১১৩-১২১। কংগ্রেসের সম্ভাব্য আসনসংখ্যা দু’মাস আগে ছিল ২৬-৩২টি। এখন বেড়ে দাড়িয়েছে ৫৮ থেকে ৬৪। ফলে সরকার গড়ার দৌড়ে বিজেপি এখনও ঢের এগিয়ে।

জিজ্ঞেসদের এত হাঁকডাকে তবে লাভের লাভ কী হবে কংগ্রেসের?

জিজ্ঞেসের অঙ্ক, “শহরাঞ্চলে ৫৮টির মধ্যে অন্তত ১০টি আসন কমবে বিজেপির। আর গ্রামে কী ভাবে ওদের শিবিরে ধস নামবে, আপনারা ভাবতেও পারছেন না। আমি গ্রামগুলিতে অভূতপূর্ব সাড়া পাচ্ছি। হার্দিক পাচ্ছে আরও বেশি।”

Jignesh Mevani জিজ্ঞেস মেওয়ানি Gujarat Assembly Election 2017
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy