খাতায়-কলমে তিনি বিজেপি নেতা। তাঁর পুত্র নরেন্দ্র মোদী সরকারেরই মন্ত্রী। কিন্তু বাজপেয়ী সরকারের অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিন্হা বেশ কিছু দিন ধরেই নিশানা করছেন নরেন্দ্র মোদী সরকারকে। এ বারে অর্থনীতির দুরবস্থা নিয়ে মোদী সরকারকে বিঁধতে পরোক্ষে কংগ্রেস সমর্থিত মঞ্চে উঠতেও দ্বিধা করছেন না যশবন্ত।
নোট বাতিল এবং জিএসটি— মোদী সরকারের এই দুই সিদ্ধান্তে তীব্র ক্ষোভ জমেছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে। গুজরাতের সুরাত, অমদাবাদ-সহ নানা জায়গায় ব্যবসায়ীরা প্রকাশ্যেই বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ দেখিয়েছেন। এই পরিস্থিতির মধ্যেই গুজরাত ভোটের ঠিক আগে কংগ্রেস সমর্থিত একটি অসরকারি সংগঠনের আমন্ত্রণে যশবন্ত সেখানে যাচ্ছেন জিএসটি-নোট বাতিল নিয়ে ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলতে। সূত্রের খবর, যশবন্তের মাথায় লালকৃষ্ণ আডবাণী, মুরলীমনোহর জোশীর মতো প্রবীণ এবং ইদানিং কালে ‘উপেক্ষিত’ নেতাদের হাত রয়েছে বলে গুঞ্জন বিজেপির অন্দরেই। আগামী ৮ নভেম্বর আডবাণীর জন্মদিনে যশবন্ত অন্যতম প্রধান অতিথি। তার পরেই গুজরাতে যাবেন তিনি।
গুজরাতের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সুরেশ মেটার নেতৃত্বে রাজ্যে ‘লোকশাহি’ বা গণতন্ত্র বাঁচাও অভিযান প্রচার শুরু হয়েছে। মোদীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় বিজেপি ছেড়েছিলেন সুরেশ। কিছু দিন আগে সুরেশের একটি অনুষ্ঠানে আডবাণীও হাজির হয়েছিলেন। চলতি মাসের ১৪, ১৫ ও ১৬ নভেম্বর অমদাবাদ, সুরাত ও রাজকোটে যশবন্ত যে অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন, সেটি খাতায়-কলমে সুরেশের হলেও তার পিছনে কংগ্রেসের সমর্থন রয়েছে বলে মানছে বিজেপি।
যশবন্তের নিজের অবশ্য দাবি, এর সঙ্গে কংগ্রেসের কোনও সম্পর্ক নেই। তাঁর যুক্তি, ‘‘আমার গুজরাত সফর একেবারেই অরাজনৈতিক। কংগ্রেসের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই। অনেক আগেই এই কর্মসূচি ঠিক হয়েছে। এত দিন হয়নি, কারণ আমি এখন আমেরিকায় আছি।’’ সুরেশও জানিয়েছেন, তাঁর কর্মসূচির সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক দলের সম্পর্ক নেই। গুজরাতের তথাকথিত উন্নয়নের বাস্তব ছবি সামনে আনাই তাঁদের উদ্দেশ্য।
বাজপেয়ী জমানায় গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক সামলালেও মোদী জমানায় গুরুত্ব পাননি যশবন্ত। কিছু দিন আগেই আর্থিক বৃদ্ধির হার কমে যাওয়ার জন্য মোদী সরকারের নীতি ও অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিকে দুষে নিবন্ধ লিখেছিলেন। অর্থনীতি সজোরে মুখ থুবড়ে পড়বে আশঙ্কা জানিয়ে দাবি করেছিলেন, বিজেপির অনেকেই একই কথা মনে করলেও ভয়ে মুখ খুলছেন না।
যশবন্ত বিহারের কায়স্থ নেতা। শত্রুঘ্ন সিনহার মতো তিনিও বিহারে নীতীশ কুমার-বিজেপি আঁতাতের পক্ষে নন। শত্রুঘ্নকে কিছু দিন আগেই কংগ্রেস নেতা মনীশ তিওয়ারির বইপ্রকাশ অনুষ্ঠানে দেখা গিয়েছিল। এ বার যশবন্তের কংগ্রেস সমর্থিত সংগঠনের আমন্ত্রণে গুজরাত সফর ঘিরে একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy