উত্তাল লোকসভা। ছবি: পিটিআই।
শীতকালীন অধিবেশনের তৃতীয় দিনেও অচল সংসদ। দফায় দফায় মুলতুবি হচ্ছে রাজ্যসভা। লোকসভা মুলতুবি হয়ে গিয়েছে সোমবার পর্যন্ত। রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা গুলাম নবি আজাদের গতকালের মন্তব্য নিয়ে শুক্রবার সংসদে তীব্র আক্রমণাত্মক বিজেপি। আজাদকে ক্ষমা চাইতে হবে, দাবি বিজেপির। পাল্টা আক্রমণে গুলাম নবি আজাদের দাবি, ক্ষমা চাইতে হবে সরকারকেই। লোকসভাতেও এ দিন বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গের সঙ্গে তুমুল বিতণ্ডা হয়েছে মন্ত্রী অনন্ত কুমারের।
আক্রমণাত্মক সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: পিটিআই।
নোট সঙ্কটের জেরে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যে মৃত্যুর খবরগুলি এসেছে, তার সঙ্গে সাম্প্রতিক একটি জঙ্গিহানার ঘটনার তুলনা টেনেছেন রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা গুলাম নবি আজাদ। বৃহস্পতিবার তিনি সংসদে নিজের ভাষণে এই তুলনা টানেন। আজাদের মন্তব্যে রাজ্যসভা উত্তাল হয়ে ওঠে। বিজেপি তীব্র আক্রমণে নামে। পরে রাজ্যসভার কার্যবিবরণী থেকে বিরোধী দলনেতার ভাষণের ওই অংশ বাদ দেওয়া হয়। কিন্তু সেই ইস্যুতে রাজ্যসভা শুক্রবারও উত্তাল। বিজেপির দাবি, গুলাম নবি আজাদকে তাঁর মন্তব্যের জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভি এ দিন বলেছেন, ‘‘গুলাম নবি আজাদের বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য কংগ্রেসকে গোটা দেশের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।’’ বিজেপির তরফে গুলাম নবি আজাদের এবং কংগ্রেসের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও তোলা হয় রাজ্যসভায়।
লোকসভায় বলছেন কংগ্রেস সংসদীয় দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে। ছবি: পিটিআই।
কিন্তু সকাল থেকে পাল্টা আক্রমণাত্মক মেজাজে বিরোধী পক্ষ। গুলাম নবি আজাদ বলেছেন, ‘‘ক্ষমা আমরা চাইব না, ক্ষমা চাইতে হবে বিজেপিকে। দেশকে খাদের কিনারায় দাঁড় করিয়ে দেওয়ার অপরাধে দেশের মানুষের কাছে বিজেপি ক্ষমা চাক।’’ শাসক-বিরোধীর এই তুমুল চাপান-উতোরে শুক্রবার সকাল থেকেই রাজ্যসভা উত্তপ্ত ছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মা আসায় প্রথমে সকাল ১১টা ৩০ পর্যন্ত রাজ্যসভা মুলতুবি করে দেওয়া হয়। সাড়ে ১১টায় সভার কাজ শুরু হতেই ফের তুমুল অশান্তি শুরু হয় রাজ্যসভায়। ফলে বেলা ১২টা পর্যন্ত আবার মুলতুবি করে দেওয়া হয় রাজ্যসভা। কিন্তু দু’বার মুলতুবি করেও রাজ্যসভার পরিস্থিতিন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেননি চেয়ারম্যান হামিদ আনসারি। তাই তৃতীয় বার তিনি রাজ্যসভার অদিবেশন বেলা আড়াইটে পর্যন্ত মুলতুবি করেন।
কংগ্রেসকে আক্রমণে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনন্ত কুমার। ছবি: পিটিআই।
লোকসভাতে পরিস্থিতি এ দিন আরও উত্তপ্ত। সকাল থেকেই গোটা বিরোধী পক্ষ সম্মিলিত ভাবে সরকারের বিরুদ্ধে লোকসভায় বিক্ষোভ শুরু করে। কিন্তু বিপুল সংখ্যাধিক্যের জোরে লোকসভায় বিরোধীদের একাই ম্লান করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে বিজেপি। সেই লক্ষ্যে বিজেপি প্রস্তুতিও নিয়েছিল। হুইপ জারি করে দলের সব সাংসদকে লোকসভায় উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছিল। কিন্তু বিরোধীরা এতই আক্রমণাত্মক ছিলেন যে স্পিকার সুমিত্রা মহাজন পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে পারেননি। কালো টাকা সংক্রান্ত আলোচনার সময় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনন্ত কুমার এবং লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গের মধ্যে তীব্র বাদানুবাদ হয়। ফলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এক পর স্পিকার সোমবার পর্যন্ত লোকসভার অধিবেশন মুলতুবি ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: সিদ্ধান্ত বদল হবে না, চাপেও অনড় জেটলি
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy