Advertisement
E-Paper

ধর্মীয় অসহিষ্ণুতায় চারে ভারত! বলছে আন্তর্জাতিক সমীক্ষা

ধর্মনিরপেক্ষ দেশ ভারতে গত দু’বছরে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার ঘটনা উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে। বিশ্বের ১৯৮টি দেশের মধ্যে কোন দেশে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা সবচেয়ে বেশি, সেই তালিকায় ভারতের নাম রয়েছে চার নম্বরে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০১৭ ১৬:৫৭
Share
Save

ধর্মনিরপেক্ষ দেশ ভারতে গত দু’বছরে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার ঘটনা উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে।

বিশ্বের ১৯৮টি দেশের মধ্যে কোন দেশে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা সবচেয়ে বেশি, সেই তালিকায় ভারতের নাম রয়েছে চার নম্বরে। সামনে রয়েছে শুধুই সিরিয়া, নাইজেরিয়া ও ইরাক। বাকি ১৯৪টি দেশকে পিছনে ফেলে ভারত দেখিয়ে দিয়েছে, ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা কাকে বলে! বুঝিয়ে দিতে পেরেছে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা কী জিনিস! ১৩০ কোটি মানুষের দেশ ভারতকে এই ‘শিরোপা’ দিল মার্কিন সমাজ-গবেষণা সংস্থা ‘পিউ রিসার্চ সেন্টার’।

গত ১১ এপ্রিল প্রকাশিত ওই গবেষণার ফলাফলে জানা গিয়েছে, আগের তিন বছরের মধ্যে ২০১৫ সালে ভারতে যে শুধুই ধর্মকে কেন্দ্র করে অশান্তির ঘটনা বেড়েছে, তাই নয়; সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় অধিকারের ওপর সরকারি হস্তক্ষেপ, বিধিনিষেধ আরোপ ও ধর্মকে কেন্দ্র করে সামাজিক অস্থিরতার ঘটনাও সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। বেড়েছে জাতি বা বর্ণ-ঘৃণাজনিত অপরাধের ঘটনা, হিংসা, সাম্প্রদায়িক হিংসা, ধর্মভিত্তিক সন্ত্রাস। বেড়েছে ধর্মাচরণে বাধা দেওয়ার ঘটনা। তারই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ধর্মীয় অনুশাসন মেনে পোশাক না পরায় নানা ভাবে মহিলাদের হেনস্থা করা ও ধর্মান্তরণে বাধা দেওয়ার ঘটনাও। এমনকী, ভারতে হিন্দুদের মধ্যেও বিভেদটা আগের চেয়ে বেড়ে গিয়েছে। দলিতদের ওপর বর্ণহিন্দুদের নির্যাতনের ঘটনা বেড়েছে।


তালিকায় চার নম্বরে ভারত। সামনে শুধুই সিরিয়া, নাইজেরিয়া আর ইরাক।

পিউ রিসার্চ সেন্টারের হালের গবেষণার ফলাফল চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, আগের তিন বছরের চেয়ে ২০১৫ সালে ভারতে হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদের ছবিটা আরও স্পষ্ট হয়েছে। দূরত্বটা বাস্তবিক ভাবেই আরও বেড়ে গিয়েছে। আরও বিস্ময়ের ঘটনা হল, কেন্দ্রে বিজেপি-র নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার শুধুই যে ভারতে সংখ্যালঘু মুসলিম, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ ও শিখদের ওপর হিন্দুদের আক্রমণের রাশ টেনে ধরতে পারেনি, তাই নয়; সংখ্যালঘুদের রোষের হাত থেকে বর্ণহিন্দুদেরও বাঁচাতে পারেনি। বাঁচাতে পারেনি বর্ণহিন্দুদের আক্রমণের হাত থেকে দলিতদেরও।


ধর্মের ওপর রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপ। ভারতে যার হার অনেকটাই বেশি (গেরুয়া রং)

মূল গবেষক কাত্যায়ুন কিশি সংবাদমাধ্যমকে এ কথা জানিয়ে বলেছেন, ‘‘এখানেই শেষ নয়। ভারতে হিন্দু ও মুসলিম, এই দু’টি সম্প্রদায়ের মধ্যে হিংসা ও দাঙ্গার একাধিক ঘটনা ঘটেছে। যার সংখ্যাটা তার আগের তিন বছরের চেয়ে অনেকটাই বেশি।’’

কী ভাবে, কতটা বেড়েছে সরকারি হস্তক্ষেপ, তার ছবি

বেড়েছে হিন্দুদের মধ্যে ভেদাভেদের ঘটনাও। সেটা কী ভাবে ঘটেছে?

অধ্যাপক কিশি বলেছেন, ‘‘হিন্দুদের মধ্যে ওই নির্যাতনটা সবচেয়ে বেশি হয়েছে নিম্নতম বর্ণের জনগোষ্ঠীর ওপর। যাদের মধ্যে পড়েন দলিতরা। এখনও তাঁদের বিভিন্ন সরকারি চাকরি পেতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। সরকারি পদে তাঁদের প্রোমোশন রুখে দেওয়া হচ্ছে, পর্যাপ্ত যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও। শিক্ষা আর স্বাস্থ্য ক্ষেত্রেই এটা সবচেয়ে বেশি হচ্ছে। ভারতের ন্যাশনাল ক্রাইম ব্যুরোর হালের পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, খুন, ধর্ষণ, নির্যাতন, হেনস্থার সবচেয়ে বেশি শিকার হচ্ছেন দলিত মহিলারা। অপরাধীদের বহু ক্ষেত্রে কোনও বিচারই হচ্ছে না। শাস্তি দেওয়া তো দূরের কথাই।’’

আরও পড়ুন- বিমান হাইজ্যাকের আশঙ্কা, হাই অ্যালার্ট মুম্বই, চেন্নাই হায়দরাবাদ এয়ারপোর্টে

বক্তব্যের স্বপক্ষে দু’টি দৃষ্টান্তও দেওয়া হয়েছে ওই গবেষণায়। দেখানো হয়েছে, বর্ণহিন্দু সম্প্রদায়ের একটি মেয়ের সঙ্গে প্রেম করার দায়ে কী ভাবে তামিলনাড়ুতে একটি দলিত যুবককে খুন করা হয়েছিল। আর সেই ঘটনার অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত কী ভাবে তার পর মাসের পর মাস পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে গা ঢাকা দিয়ে থাকতে পেরেছিল। আর গুজরাতে ধর্মান্তরণের জন্য কী ভাবে জেলাশাসকের অনুমতি বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল।

India Religious Intolerance Peu Research Center
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy