Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

বেপাত্তা সাড়ে তিন কোটি, অভিযোগের তির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর জামাইয়ের দিকে!

গত কাল উধাও হয়ে গিয়েছিল টাকা। আর আজ উধাও হয়ে গেলেন টাকা বাজেয়াপ্তকারী আয়কর কর্মীরাও! নাগাল্যান্ডের ডিমাপুর বিমানবন্দরে গত কাল পাওয়া সাড়ে তিন কোটি টাকা নিয়ে রহস্য তাই আরও ঘনীভূত হয়েছে। এর মধ্যেই দিল্লিতে আটক করা হয়েছে ওই টাকা সরিয়ে ফেলার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত, বিহারের মুঙ্গেরের ব্যবসায়ী অমরজিৎ সিংহকে।

প্রতীকী চিত্র

প্রতীকী চিত্র

রাজীবাক্ষ রক্ষিত
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০১৬ ০৩:২৬
Share: Save:

গত কাল উধাও হয়ে গিয়েছিল টাকা। আর আজ উধাও হয়ে গেলেন টাকা বাজেয়াপ্তকারী আয়কর কর্মীরাও!

নাগাল্যান্ডের ডিমাপুর বিমানবন্দরে গত কাল পাওয়া সাড়ে তিন কোটি টাকা নিয়ে রহস্য তাই আরও ঘনীভূত হয়েছে। এর মধ্যেই দিল্লিতে আটক করা হয়েছে ওই টাকা সরিয়ে ফেলার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত, বিহারের মুঙ্গেরের ব্যবসায়ী অমরজিৎ সিংহকে।

গত কাল তাঁর সঙ্গে ছিলেন নাগাল্যান্ডের সাংসদ তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নেফিয়ু রিওর জামাই আনাতো জিমোমি। আনাতোর প্রসঙ্গে অবশ্য মুখে কুলুপ এঁটেছে দিল্লি পুলিশ।

সিআইএসএফ সূত্রে খবর, গত কাল সকালে হরিয়ানার হিসার থেকে একটি চার্টার্ড বিমানে ডিমাপুরে নামেন অমরজিৎ। আগাম খবরের ভিত্তিতে তল্লাশি চালিয়ে দেখা যায়, তাঁর কাছে ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট মিলিয়ে মোট সাড়ে তিন কোটি টাকা রয়েছে। আয়কর অফিসাররা ওই টাকা বাজেয়াপ্তও করেন। কিন্তু অমরজিৎ জানান, আনাতোর সঙ্গে তাঁর ব্যবসায়িক সম্পর্ক রয়েছে। সে জন্যই টাকা নিয়ে এসেছেন।

পুলিশ সূত্রের খবর, পরে আনাতো নিজে বিমানবন্দরে এসে ওই ব্যবসায়ীকে মুক্ত করেন। অভিযোগ, বাজেয়াপ্ত টাকা তখন আনাতোকে দিয়েও দেওয়া হয়। পরে আনাতো এবং অমরজিৎ সেই চার্টার্ড বিমানেই দিল্লি চলে যান। সেই থেকে ওই টাকার খোঁজ নেই।

ডিমাপুরের পুলিশ কমিশনার লিরেমো লোথা এই ঘটনার সময় কোহিমায় ছিলেন। বিকেলে ডিমাপুরে ফিরে তিনি ওই টাকা ও ব্যবসায়ীর খোঁজ করলে সিআইএসএফ তাঁকে জানায়, টাকা নিয়ে চলে গিয়েছেন আনাতো। ক্ষুব্ধ কমিশনার সিআইএসএফ ও আয়কর দফতরের ব্যাখ্যা চান। বিমানবন্দরে কর্মরত সিআইএসএফ কর্মী ও আয়কর অফিসারদের তলব করেন দফতরে। তদন্তের নির্দেশও দেওয়া হয়।

কিন্তু তলব পেয়েও ওই সময় বিমানবন্দরে হাজির কোনও আয়কর কর্মী শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত লোথার সঙ্গে দেখা করেননি। উল্টে আয়কর দফতরের তরফে পুলিশ কমিশনারকে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার বিমানবন্দরে যে আয়কর কর্মীরা হাজির ছিলেন, তারা সকলেই নাকি রাজ্যের বাইরে চলে গিয়েছেন! এ-ও বলা হয়েছে, আয়কর দফতর টাকা গুনে তা বাজেয়াপ্ত করার মেমো তৈরি করলেও সিআইএসএফ কখনওই টাকা তাদের হাতে দেয়নি। সিআইএসএফ পাল্টা দাবি করেছে, তারা আয়কর কর্মীদের হাতেই টাকা তুলে দিয়েছিল।

আজ লোথা বলেন, ‘‘আটক হওয়া টাকা ফেরত দেওয়ার অনুমতি কে, কেন দিয়েছিল, তা-ও স্পষ্ট নয়। কোথায় গেল ওই টাকা, তা-ও জানা যাচ্ছে না। সিআইএসএফ এবং আয়কর কর্মীদের কেউ বাজেয়াপ্ত টাকা কাউকে ফেরত দেওয়ার কথা স্বীকার করেননি।’’ বিমানবন্দরের সিসিটিভি ফুটেজ বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। আজ রাতে ডিমাপুরের এক পেট্রোল পাম্পে হানা দিয়ে টাকা ভর্তি তিনটি ট্রাঙ্ক উদ্ধার করেছে পুলিশ। এই টাকাই গত কাল অমরজিতের কাছে পাওয়া গিয়েছিল কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE