নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই কোনও বিশেষ ধর্মীয় সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে নয়। সন্ত্রাসের কোনও জাতি ধর্ম হয় না। আজ উদারপন্থী ইসলামের প্রবক্তা জর্ডনের রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লা বিন আল হুসেনকে পাশে নিয়ে বিজ্ঞানভবনের একটি অনুষ্ঠানে এই বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বললেন, ‘‘আগামিকাল আমরা হোলি উৎসব করব। এর পর বুদ্ধজয়ন্তীর উৎসব হবে। তার পরেই আসবে রমজানের মাস। বহুত্বের মধ্যেই ঐক্যের প্রতীক আমাদের দেশ।’’ পাশাপাশি জর্ডনের রাজা বলেন, ‘‘সোশ্যাল মিডিয়া এবং টিভি চ্যানেল থেকে ঘৃণার কণ্ঠ সরিয়ে দিতে হবে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘গোটা বিশ্বই একটি পরিবার। একের চেয়ে অন্যে যতই পৃথক হই না কেন, আমাদের দায়িত্ব ভাগাভাগি করে নিতে হবে। সহনশীলতা ও ক্ষমার ধর্ম সবার মধ্যেই ভাগ করে নিতে হবে।’’
উত্তাল পশ্চিম এশিয়ার প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে জর্ডনের রাজা যে ভারতে এসে এই বার্তা দেবেন তা প্রত্যাশিতই ছিল। কিন্তু তাঁর সঙ্গে মোদীর মুখে সহিষ্ণুতার জয়গান যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনীতিকেরা। অসহিষ্ণুতা নিয়ে দেশ জুড়ে তীব্র সমালোচনার মুখে মোদী সরকার। বিরোধী দলগুলি তো বটেই, আন্তর্জাতিক স্তরেও এ নিয়ে সরব অনেকে। সাম্প্রতিক নির্বাচনগুলির ফলও উৎসাহব্যঞ্জক নয় বিজেপির কাছে। সময়টাও গুরুত্বপূর্ণ, কারণ বিভিন্ন রাজ্যের নির্বাচন ও লোকসভা ভোট দরজায় কড়া নাড়ছে।
রাজনীতিকদের মতে, এই পরিস্থিতিতে শুধু সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ই নয়, সংখ্যাগুরু সমাজের উদারমনস্ক অংশের কাছেও বার্তা দেওয়ার একটা বাধ্যবাধকতা তৈরি হয়েছে মোদীর। পাশাপাশি পশ্চিম এশিয়ায় বাণিজ্যিক এবং কৌশলগত প্রভাব বাড়াতেও সচেষ্ট মোদী সরকার। সে ক্ষেত্রেও ভাবমূর্তি সংস্কারের প্রয়োজনীয়তাও রয়েছে। আজ বহুত্ববাদের পতাকা উড়িয়ে মোদীর বক্তব্য, ‘‘আমাদের দেশে প্রত্যেকটি ধর্মের স্বতন্ত্র স্থান রয়েছে। ভারত তার মূল্যবোধ নিয়ে গর্বিত। কার কোন ধর্ম, কে কোন ভাষায় কথা বলেন সেটা মুখ্য নয়।’’
সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আজ সরব হয়েছেন দুই নেতাই। সেই সঙ্গে এটাও স্পষ্ট করে দিতে চেয়েছেন যে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াই মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে লড়াই নয়। মোদীর বক্তব্য, ‘‘সন্ত্রাসবাদের কোনও ধর্ম নেই। মৌলবাদ এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ, কোনও ধর্মবিশ্বাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ নয়। আমাদের লড়াই বিপথগামী যুবক এবং মৌলবাদী মনের বিরুদ্ধে।’’ এরই প্রতিধ্বনি করে জর্ডনের রাজা বলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যে লড়াই তা বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে লড়াই নয়। সমস্ত ধর্ম ও সম্প্রদায় বনাম হিংসা ও ঘৃণার লড়াই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy