Advertisement
E-Paper

খালি পেটের যন্ত্রণা বাড়ছে ভারতে

এ দেশে খালি পেটে রোজ রাতে শুতে যাওয়া শিশুদের সংখ্যাটা গত তিন বছরে আরও বেড়েছে। বেড়েছে অপুষ্টি।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:২৫

নিত্য নতুন নেতার নামে প্রকল্পের ঘনঘটা, প্রচারের আড়ালে আসল ছবিটা আরও একবার সামনে এল।

এ দেশে খালি পেটে রোজ রাতে শুতে যাওয়া শিশুদের সংখ্যাটা গত তিন বছরে আরও বেড়েছে। বেড়েছে অপুষ্টি। স্রেফ খেতে না পেয়ে আরও বেশি শুকিয়ে যাওয়া কচি কচি মুখগুলোর সংখ্যাও বেড়েছে লাফিয়ে।

১১৯টি দেশের মধ্যে সমীক্ষা চালিয়ে ‘ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট’ বিশ্ব ক্ষুধা সূচকের (গ্লোবাল হাংগার ইনডেক্স বা জিএইচআই) এই ফল প্রকাশ করতেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, এ দেশের ক্ষুধার প্রকৃত চেহারাটা। বাইরের চাকচিক্য, অচ্ছে দিনের ঢাকঢোল, উন্নয়নের গর্বিত প্রচার যে আসলে নেহাতই ফাঁপা, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে এই আন্তর্জাতিক সমীক্ষায়।

শিশুদের অপুষ্টি, বাড়বৃদ্ধি, শিশুমৃত্যুর পরিসংখ্যান-সহ একাধিক বিষয়ে সমীক্ষা চালিয়েই এই রিপোর্ট তৈরি করা হয়। এ বারের রিপোর্টে দেখা গেছে, এ দেশের পাঁচ বছরের কমবয়সি শিশুদের প্রতি পাঁচ জনের এক জনের ওজন উচ্চতা সাপেক্ষে অত্যন্ত কম। প্রতি তিন জনের এক জন বয়স অনুপাতে খর্বকায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিস্থিতি শুধু উদ্বেগজনক নয়। পরিস্থিতি গুরুতর-র থেকেও বেশি কিছু।

এমন রিপোর্টে উদ্বিগ্ন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অর্থ মন্ত্রকের রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বেগের কারণ, সামনেই একাধিক রাজ্যে ভোট। এমনিতেই সরকারের একাধিক নীতি নিয়ে সরব বিরোধীদের অভিযোগ, মোদী জমানায় গরিবদের অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। এই রিপোর্ট সেই অভিযোগকেই আরও সামনে এনে দিল।

২০১৪ সালে বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ৭৬টি দেশের মধ্যে ভারতের স্থান ছিল ৫৫। ২০১৬-য় ১১৮টি দেশের মধ্যে তা নেমে আসে ৯৭-এ। আর এ বছর ১১৯টি দেশের মধ্যে নেমে এল ১০০য়! ব্রিকস-ভুক্ত দেশগুলির মধ্যে ভারতের স্থান সর্বনিম্ন। যুদ্ধবিধ্বস্ত ইরাক বা বহু সমালোচিত কিম জং উনের উত্তর কোরিয়া এমনকী নিকটতম প্রতিবেশী নেপাল বা বাংলাদেশেরও নীচে নেমে গিয়েছে ভারত! ভারতের জন্যই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার স্থান হয়েছে নীচের সারিতে। সান্ত্বনা একটাই। ‘শত্রু’ পাকিস্তানের অবস্থা আরও বেশি খারাপ! যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানের হালও তা-ই।

রিপোর্ট প্রস্তুতকারক সংস্থার দক্ষিণ এশিয়ার প্রধান পি কে জোশীর বক্তব্য, সার্বিক পুষ্টির লক্ষ্যে দেশে যত বড় মাপের প্রকল্পই চালু করা হোক, খরা ও পরিকাঠামোগত ত্রুটির কারণে গরিবদের একটা বিরাট অংশের মধ্যে অনাহারজনিত অপুষ্টির ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। অনাহার সমস্যা নিয়ে কর্মরত একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার ভারত শাখার প্রধান নিবেদিতা বর্ষ্ণেয়ার খেদ, ‘‘এই ফলে প্রমাণিত, শুধু জিডিপি বাড়িয়ে দেশের মানুষের খাদ্য আর পুষ্টির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায় না।’’

India Malnutrition Hunger Index Global Hunger Index ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy