Advertisement
E-Paper

বাঁশ দিয়ে দখল নদীর পাড়, দেখলেন কর্তারা

নদীর পাড় জুড়ে বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ নতুন নয় বর্ধমানে। বাঁকা নদীর পাড়ে যেটুকু ফাঁকা জায়গা রয়েছে, সেখানেও বেআইনি ভাবে নির্মাণকাজ চলছে বলে অভিযোগ। কিন্তু শহর লাগোয়া খাগড়াগড়ের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া বেহুলা নদীর পাড়ও ‘দখল’ হতে শুরু করেছে, অভিযানে গিয়ে দেখলেন কর্তারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৮ ০০:২৫
ভাতাছালায় নদীতে যাওয়ার পথে নির্মাণ। নিজস্ব চিত্র

ভাতাছালায় নদীতে যাওয়ার পথে নির্মাণ। নিজস্ব চিত্র

নদীর পাড় জুড়ে বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ নতুন নয় বর্ধমানে। বাঁকা নদীর পাড়ে যেটুকু ফাঁকা জায়গা রয়েছে, সেখানেও বেআইনি ভাবে নির্মাণকাজ চলছে বলে অভিযোগ। কিন্তু শহর লাগোয়া খাগড়াগড়ের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া বেহুলা নদীর পাড়ও ‘দখল’ হতে শুরু করেছে, অভিযানে গিয়ে দেখলেন কর্তারা।

বেহুলার পাড় থেকে বেশ কিছুটা দূর পর্যন্ত বাঁশ দিয়ে ঘিরে রেখেছে অনেকে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, বর্ধমান শহর ও লাগোয়া এলাকায় এই দু’টি নদীর পাড়ে বেআইনি নির্মাণে মদত রয়েছে শাসকদলের কিছু নেতার। দু’টি ক্ষেত্রেই পুরসভা থেকে পঞ্চায়েত সমিতি নিষ্ক্রিয় বলেও তাঁদের দাবি।

মঙ্গলবার আউশগ্রামের শিবদায় প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুকুর ভরাট বন্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন পুলিশ-প্রশাসনকে। ওই সভায় তিনি ‘সবুজ বাঁচানো’র কথাও বলেন। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বর্ধমানের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের ভাতছালার বংপুর ভুবনেশ্বরী মন্দিরের কাছে রাস্তা আটকে বাঁকা নদীর পাড় দখল করে বেআইনি নির্মাণ হচ্ছে বলে পুরসভার কাছে অভিযোগ করেছিলেন বাসিন্দারা। পুরসভা এ নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করেনি বলেও রাজ্য সরকারের কাছে তাঁরা অভিযোগ জানান। একই রকম ভাবে খাগড়াগড়ের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া পুরনো বেহুলা নদীর নানা অংশ বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে বলে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে অভিযোগ জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। তার পরেই প্রশাসনকে এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাস।

খাগড়াগড়ে বেহুলা নদীর পাড়ে পরিদর্শন। নিজস্ব চিত্র

বৃহস্পতিবার ওই দু’টি এলাকা ঘুরে দেখেন জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব ও পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল। এ দিন বিকেলে তাঁরা প্রথমে যান খাগড়াগড়। ছিলেন বিডিও (বর্ধমান ১) দেবদুলাল বিশ্বাস-সহ ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকেরা। কর্তারা দেখেন, পাড় থেকে নদীর ভিতর পর্যন্ত বাঁশ দিয়ে অন্তত ২০টি জায়গা দখল করে রাখা হয়েছে। এলাকাবাসীর দাবি, শহরের একাংশ তো বটেই, গ্রামীণ এলাকার নিকাশি ব্যবস্থাও জড়িয়ে রয়েছে বেহুলা নদীর সঙ্গে। ওই নদী বুজিয়ে বাড়ি তৈরি হলে নিকাশি ব্যবস্থা বেহাল হয়ে পড়বে। তাঁরা আরও জানান, শহরের ভিতরেও বেহুলার পাড় দখল করা হয়েছে। ফলে ১ নম্বর ওয়ার্ডের বেশ কিছুটা অংশে নিকাশির হাল খারাপ হয়েছে।

শহরের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে বাঁকার পাড়ে গিয়ে আধিকারিকেরা দেখেন, ভাতছালা রোড থেকে বংপুর ভুবনেশ্বরী মন্দিরের কাছে পশ্চিমমুখী প্রাচীন রাস্তাটি আটকে পাকা ঘর তৈরি করা হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে ওই রাস্তা অবরুদ্ধ থাকায় আগাছার জঙ্গল তৈরি হয়েছে। জেলাশাসক নির্মীয়মাণ বাড়িতে ঢুকে দেখেন, নদীর পাড় পর্যন্ত ঝোপজঙ্গলে ভরে গিয়েছে। ওই দু’টি জায়গা দেখার পরে জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার ভাতছালা রাস্তায় দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করেন। জেলাশাসক বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী জলাশয় ভরাটের ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। আমরা দু’টি এলাকা ঘুরে দেখলাম। বেআইনি নির্মাণ নিয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবালের কথায়, “নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যারাই করুক বা যাদেরই মদত থাকুক না কেন, আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা হবে।”

Illegal Construction Behula Complaint বেহুলা
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy