অগ্নি-৪ ক্ষেপণাস্ত্রও এ বার ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হবে। —ফাইল চিত্র।
এক সপ্তাহ কাটতেই আবার। অগ্নি-৫ ক্ষেপণাস্ত্রের পর অগ্নি-৪। ওড়িশা উপকূল থেকে আজ চূড়ান্ত পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ হল ৪০০০ কিলোমিটার পাল্লার অগ্নি-৪ ক্ষেপণাস্ত্রের। এই সফল উৎক্ষেপণের সুবাদে অগ্নি-৪ ক্ষেপণাস্ত্রও এ বার ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর অস্ত্রাগারে ঠাঁই পাওয়ার উপযুক্ত হয়ে গেল।
ওড়িশার বালেশ্বরের টেস্ট রেঞ্জ থেকে সোমবার সকালে পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম ইন্টারমিডিয়েট রেঞ্জ মিসাইলটি ছোড়া হয়। অগ্নি-৪ অন্যান্য পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণগুলির মতো এ বারও নির্ভুল লক্ষ্যে আঘাত হানে। ভূমি-থেকে-ভূমিতে আঘাত হানতে সক্ষম অগ্নি-৪ ক্ষেপণাস্ত্রের ওজন ১৭ হাজার কিলোগ্রাম। দৈর্ঘ্য ২০ মিটার। ২০১১ সালের ১৫ নভেম্বর প্রথম বার এই ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ হয়েছিল। আর ২০১৭ সালের ২ জানুয়ারি ক্ষেপণাস্ত্রটির ষষ্ঠ তথা চূড়ান্ত পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ হল। চূড়ান্ত পরীক্ষাতেও সফল ভাবে অগ্নি-৪ নির্ভুল লক্ষ্যে আঘাত হানায় এই ক্ষেপণাস্ত্রকে এ বার দেশের সশস্ত্র বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হবে।
ডিআরডিও সূত্রের খবর, অগ্নি-৪ ক্ষেপণাস্ত্রে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির অনবোর্ড কম্পিউটার রয়েছে। উৎক্ষেপণের পর কোনও নির্দিষ্ট লক্ষ্যের দিকে ছুটে যাওয়ার সময় যান্ত্রিক বা অন্য কোনও গোলোযোগ হলে স্বয়ংক্রিয় ভাবে সে সমস্যা মিটিয়ে ফেলতে পারে এই কম্পিউটার।
সপ্তাহ খানেক আগেই ওড়িশা উপকূল থেকে উৎক্ষেপণ হয়েছিল দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র অগ্নি-৫-এর। ৫৮০০ কিলোমিটার বা প্রয়োজনে তারও বেশি দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম অগ্নি-৫ ক্ষেপণাস্ত্রেরও সেটিই ছিল চূড়ান্ত পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ। এ বার অগ্নি-৪ ক্ষেপণাস্ত্রের চূড়ান্ত পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণও হয়ে গেল। অর্থাৎ দু’টি ক্ষেপণাস্ত্রই এখন ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর পরমাণু অস্ত্রাগারের নিয়ন্ত্রক স্ট্র্যাটেজিক ফোর্সেস কম্যান্ডের হাতে তুলে দেওয়া হবে। এর আগেই অবশ্য অগ্নি-১, অগ্নি-২, অগ্নি-৩ এবং পৃথ্বীর মতো ভূমি-থেকে-ভূমি ব্যালিস্টিক মিসাইল ভারতীয় বাহিনীর অস্ত্রাগারে ঢুকে পড়েছে।
আরও পড়ুন: দরকার পড়লেই বাহুবল দেখাব, হুঙ্কার নতুন সেনাপ্রধানের
অগ্নি-৫ এর চূড়ান্ত পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণের পর চিন স্বাভাবিক ভাবেই কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছিল। চিনের এমন কোনও অঞ্চল নেই, যা অগ্নি-৫ ক্ষেপণাস্ত্রের নাগালের বাইরে। পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম এই ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে ভারত দক্ষিণ এশিয়ায় অস্ত্র প্রতিযোগিতা বাড়িয়ে তুলছে বলে বেজিং-এর অভিযোগ। সে অভিযোগকে ভারত অবশ্য গুরুত্ব দেয়নি। ভারতের তরফে জানানো হয়, নির্দিষ্ট কোনও দেশের কথা মাথায় রেখে ভারত অগ্নি-৫ ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করেনি। আত্মরক্ষার তাগিদেই এই ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করা হয়েছে। সরকারি বয়ান যাই হোক, প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করেন, মূলত চিনের কথা মাথায় রেখেই অগ্নি-৫ তৈরি। এ হেন অগ্নি-৫-এর চূড়ান্ত উৎক্ষেপণের সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই অগ্নি-৪ ক্ষেপণাস্ত্রের চূড়ান্ত পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ যে চিনের অস্বস্তি আরও বাড়াবে, সে নিয়ে সংশয় নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy