Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

চিন নিয়ে নাম না করে মমতা-মেহবুবাকে খোঁচা জয়শঙ্করের

এ নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহকে চিঠিও লিখেছেন তিনি। চিনের ভূমিকা নিয়ে উদ্বিগ্ন জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতিও। তাঁর অভিযোগ ছিল, কাশ্মীরে নাক গলাচ্ছে চিন।

বিদেশসচিব এস জয়শঙ্কর

বিদেশসচিব এস জয়শঙ্কর

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৭ ০৪:১০
Share: Save:

পূর্ব সীমান্তে চিনের সক্রিয়তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রশ্ন তুলেছিলেন, চিন সিকিমকে নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ফেললে শিলিগুড়ির কাছে ‘চিকেন করিডর’-এর পরিস্থিতি কী হবে! এ নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহকে চিঠিও লিখেছেন তিনি। চিনের ভূমিকা নিয়ে উদ্বিগ্ন জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতিও। তাঁর অভিযোগ ছিল, কাশ্মীরে নাক গলাচ্ছে চিন।

দুই মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক মুখ না খুললেও বিদেশসচিব এস জয়শঙ্কর আজ সুকৌশলে জানিয়ে দিলেন, এই ধরনের মন্তব্যে পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার বদলে আরও খারাপ হয়।

আজ বিদেশ মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ডাকা হয়েছিল জয়শঙ্করকে। উদ্দেশ্য, চিনের সঙ্গে সম্পর্কের সাম্প্রতিক অবনতির বিষয়ে জানা। সূত্রের খবর, সেখানে বিদেশসচিব কারও নাম করেননি। তবে সীমান্তের দু’দিকেই বিভিন্ন ব্যক্তি, সংবাদমাধ্যম বা সংগঠন যে ‘যুদ্ধং দেহি’ রব তুলছেন, তা নিয়ে প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে ওই মন্তব্য করেন। শুধু তা-ই নয়, কমিটির সদস্য তৃণমূল সাংসদ সুগত বসুকে ইঙ্গিত করে জয়শঙ্কর বলেন, তিনি চাইলে বিষয়টি যথাস্থানে জানিয়ে দিতে পারেন।

আরও পড়ুন: যুদ্ধের হুমকি চিনের, তবু সংযত দিল্লি

বিদেশসচিব যে ভাবে পরোক্ষে মুখ্যমন্ত্রীদের সমালোচনা করেছেন, তাতে বিস্মিত অনেকেই। এক জন আমলা বা কূটনীতিকের এ ধরনের মন্তব্য কার্যত অভূতপূর্ব বলেই মনে করছেন রাজনীতিকেরা। যদিও এ বিষয়ে সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে আলোচনা হয়েছে এবং বিধি অনুযায়ী তা গোপনীয়, তাই কেউ প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। কিন্তু সকলেরই অভিযোগ, আরএসএস এবং তার শাখা সংগঠনগুলিই চিনের উপর সব থেকে বেশি আক্রমণাত্মক। তারাই কার্যত যুদ্ধের দামামা বাজাচ্ছে। অথচ বিদেশসচিব প্রশ্ন তুলছেন মুখ্যমন্ত্রীদের উদ্বেগ নিয়ে!

সিকিম সীমান্তে ডোকলাম উপত্যকায় যে ভাবে যুযুধান ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে রয়েছে চিন ও ভারতের সেনা, তা নিয়েই উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন মমতা। তাঁর বক্তব্য ছিল, চিনের জন্য পশ্চিমবঙ্গ বিপদের মুখে। কারণ ভুটান ও নেপালে চিনের সক্রিয়তা বাড়ায় দার্জিলিঙে তার ছায়া পড়ছে। বিঘ্নিত হচ্ছে নিরাপত্তা। গত কালও মমতা বলেন, কেন্দ্রের ভুল নীতির ফলে প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক নষ্ট হচ্ছে। মেহবুবাও দিল্লিতে রাজনাথের সঙ্গে বৈঠকের পরে চিনের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলেন।

সূত্রের খবর, আজ স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সুগত বসু মমতার উদ্বেগের প্রসঙ্গটি তোলেন। সিপিএমের মহম্মদ সেলিম বলেন, এক জন নন, দু’জন মুখ্যমন্ত্রী চিনের ভূমিকা নিয়ে অভিযোগ করেছেন। বিদেশ মন্ত্রক কেন তাঁদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের কাছে কী তথ্য রয়েছে, তা জানার চেষ্টা করছে না? আর চিনের কাছেও এই সব প্রশ্ন তোলা হচ্ছে না কেন? কমিটির অন্য সাংসদেরাও বলেন, দু’দেশেরই বিভিন্ন মহল জাতীয়তাবাদের ধুয়ো তুলে আক্রমণাত্মক কথা বলছে। উত্তরে জয়শঙ্কর বলেন, বিদেশ মন্ত্রক ধৈর্য ধরে চিনের সঙ্গে আলোচনায় বসে, কূটনৈতিক স্তরে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু সীমান্তের দু’দিক থেকেই এই ধরনের মন্তব্যে সমস্যা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE