Advertisement
E-Paper

কাশ্মীরে পাক হানা জারি, নিহত তিন

আর্নিয়ার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে থাকেন চঞ্চলো দেবী। গত কাল পাক মর্টারের শব্দে ঘুম ভাঙে তাঁর। স্বামীর সঙ্গে এক প্রতিবেশীর বাড়িতে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করেন। কারণ, তাঁদের বাড়ি মাটির তৈরি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:৪৯
আতঙ্ক: ভারত-পাক সীমান্তে তখন চলছে গোলাগুলি। তার মধ্যেই প্রাণ বাঁচাতে দৌড় গ্রামবাসীদের। শনিবার জম্মু থেকে ৩৭ কিলোমিটার দূরে ঝোরা গ্রামে। ছবি: এএফপি।

আতঙ্ক: ভারত-পাক সীমান্তে তখন চলছে গোলাগুলি। তার মধ্যেই প্রাণ বাঁচাতে দৌড় গ্রামবাসীদের। শনিবার জম্মু থেকে ৩৭ কিলোমিটার দূরে ঝোরা গ্রামে। ছবি: এএফপি।

জম্মু-কাশ্মীরে আন্তর্জাতিক সীমান্ত ও নিয়ন্ত্রণরেখায় হামলা জারি রাখল পাকিস্তান। আজও পাক বাহিনীর হামলায় এক সেনা-সহ তিন জন নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে তৃতীয় দিনে পড়ল পাক হামলা।

আজ জম্মুর আরএস পুরা ও কৃষ্ণা ঘাটি সেক্টরে হামলা চালায় পাক বাহিনী। তাতে ঘারা রাম ও ঘারা সিংহ নামে দুই গ্রামবাসী নিহত হন। কৃষ্ণা ঘাটি সেক্টরে পাক সেনার স্নাইপার হামলায় নিহত হন সেনা জওয়ান মনদীপ সিংহ। তিনি পঞ্জাবের সাংগ্রুর জেলার আলমপুরের বাসিন্দা। জবাব দেয় ভারতীয় বাহিনীও। পাল্টা হামলায় অন্তত চার জন পাক জওয়ান নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে সেনা।

তিন দিন ধরে ক্রমাগত হামলায় রীতিমতো দুর্বিষহ অবস্থা আন্তর্জাতিক সীমান্ত ঘেঁষা গ্রামগুলির বাসিন্দাদের। পাক মর্টারের গোলায় কোথাও ভেঙে পড়েছে বাড়ির ছাদ। কোথাও ভেঙেছে জানলার কাচ। উঠোনে রক্তের ছাপ রয়েছে অনেক বাড়িতেই।

সাই খুর্দ গ্রাম থেকে পুলিশের গাড়িতে কোনওক্রমে পালিয়ে এসেছেন রত্নো দেবী। বললেন, ‘‘যে কোনও মুহূর্তে মারা যাওয়ার ভয় নিয়েই ছিলাম কয়েক দিন। পুলিশ এসে বাঁচাল।’’

আর্নিয়া শহর আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে। পাক হামলার তীব্রতা এত বেড়েছে যে মর্টারের গোলা আর্নিয়ার সীমাও পেরিয়ে যাচ্ছে। মানুষের পাশাপাশি হামলার শিকার হচ্ছে গবাদি পশু।

আর এস পুরার এসডিপিও সুরেন্দ্র চৌধুরি খোলাখুলিই বললেন, ‘‘সীমান্তের গ্রামগুলি কার্যত যুদ্ধক্ষেত্র হয়ে গিয়েছে। বাড়িঘর ভেঙেছে। গরু-ছাগল মরেছে।’’

শোকার্ত: নিহত গ্রামবাসী ঘারা সিংহের পরিবার। আরএস পুরা সেক্টরে। ছবি: পিটিআই।

আর্নিয়ার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে থাকেন চঞ্চলো দেবী। গত কাল পাক মর্টারের শব্দে ঘুম ভাঙে তাঁর। স্বামীর সঙ্গে এক প্রতিবেশীর বাড়িতে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করেন। কারণ, তাঁদের বাড়ি মাটির তৈরি। কিন্তু রাস্তা পেরিয়ে প্রতিবেশীর বাড়িতে যাওয়ার সময়ে হঠাৎ একটা মর্টারের গোলা এসে পড়ে। তাতে দু’জনেই আহত হন। রক্ষা পাননি প্রতিবেশী দর্শন লালও। পরে আহত অবস্থায় তিন জনকে উদ্ধার করে পুলিশ।

বাসিন্দাদের দাবি, পাক হামলা থেকে তাঁদের বাঁচাতে বাঙ্কার তৈরি হবে বলে দীর্ঘ দিন ধরেই দাবি করে আসছে সরকার। আর্নিয়ার বাসিন্দা সুদর্শন সিংহের মতে, বাঙ্কার তৈরি হলে এত প্রাণহানি হত না। কয়েক বছর আগে সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ জায়গায় জমি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা পালন করা হয়নি।

সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নিয়ে এ দিন জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভায় সরব হন ন্যাশনাল কনফারেন্সের বিধায়কেরা। ‘বিজেপি হায় হায়, আরএসএস হায় হায়’ বলে শ্লোগান দেন তাঁরা। পাক হামলার সাম্প্রতিক ঘটনা নিয়ে পিডিপি-বিজেপি সরকারের বিবৃতিও দাবি করেন ন্যাশনাল কনফারেন্স বিধায়কেরা। পরে ওয়াক-আউট করেন তাঁরা।

Jammu And Kashmir Pakistan Ceasefire Violence India Death Civilians Jawan
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy