Advertisement
E-Paper

জেএনইউয়ে বাতিল বাবরি-আলোচনা

প্রথমে বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর বক্তৃতা বাতিল করে দেওয়া হয়। স্বামী আঙুল তোলেন বাম শিবিরের দিকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৪:০৪
—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

ক্যাম্পাসে ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি’ রক্ষার যুক্তি দিয়ে রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ নিয়ে যাবতীয় আলোচনা সভা বন্ধ করে দিলেন দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

প্রথমে বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর বক্তৃতা বাতিল করে দেওয়া হয়। স্বামী আঙুল তোলেন বাম শিবিরের দিকে। অভিযোগ তোলেন, জেএনইউ-তে বামেদের চাপেই তাঁর সভা বাতিল হয়েছে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছাত্র সংসদের আয়োজিত সভাও বাতিল করে দেয়। ওই সভায় আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল সিপিএমের প্রকাশ কারাট, সিপিআই(এম-এল)-এর কবিতা কৃষ্ণণ, ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সভানেত্রী আলবিনা শাকিল ও জেএনইউ-রই অধ্যাপিকা জয়তী ঘোষকে।

বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর থেকে প্রতি বছরই ৬ ডিসেম্বর জেএনইউ-র ছাত্র সংসদ এই ধরনের সভার আয়োজন করে। তা হলে এ বছর কেন ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি’ রক্ষার প্রয়োজন পড়ল, সেই প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরাও। আঙুল উঠেছে উপাচার্য এম জগদীশ কুমারের দিকে। যিনি এর আগে ক্যাম্পাসে একাধিক বিতর্ক সভা, তথ্যচিত্র প্রদর্শনের অনুমতি দিয়েও পরে বাতিল করেছেন। ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে জাতীয়তাবাদ জাগাতে ক্যাম্পাসে সেনার ট্যাঙ্ক বসাতে চেয়েছেন। জেএনইউ শিক্ষক সংগঠনের সভানেত্রী আয়েশা কিদোয়াই বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয় গণতান্ত্রিক আলোচনার জায়গা। সেখানে এই সিদ্ধান্ত একেবারে অগণতান্ত্রিক।’’

প্রকাশ কারাট শুধু তাঁদের সভা নয়, স্বামীর সভা বাতিল করারও নিন্দা করছেন। তাঁর যুক্তি, ‘‘এটি জেএনইউ-র ঐতিহ্যের বিরোধী। ক্যাম্পাসে তো সব রকম খোলা আলোচনা, বিতর্ক হতে পারে। এ থেকে তো কোনও হিংসার আশঙ্কা ছিল না। কোনও সভা বাতিল করারই কোনও যুক্তি নেই।’’ কিন্তু স্বামীর দাবি, বামেরা সহিষ্ণুতার শিক্ষা দেয়, কিন্তু নিজেরা সভ্য বিতর্ক সহ্য করতে পারে না। মন্দিরের পক্ষে তাঁর জোরালো যুক্তি খারিজ করা যাবে না বলেই সভা বাতিল করানো হয়েছে। জেএনইউ ছাত্র সংসদের সভানেত্রী গীতা কুমারীর যুক্তি, তাঁরা মোটেই স্বামীর সভা নিয়ে আপত্তি তোলেননি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মতাদর্শগত ভাবে কোন দিকে ঝুঁকে রয়েছেন, এই সিদ্ধান্ত থেকে তা স্পষ্ট।

তাৎপর্যপূর্ণ হল, এবিভিপি-ও জেএনইউ-কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তকে ‘তুঘলকি ফরমান’ আখ্যা দিয়েছে। কিন্তু বামেদের সন্দেহ, তাঁদের সভা বাতিল করতেইই স্বামীর সভা বাতিল করা হয়েছিল। বিবেকানন্দ বিচার মঞ্চ নামের একটি ছোট সংগঠন স্বামীকে ‘কেন অযোধ্যায় রাম মন্দির’ শীর্ষক বক্তৃতার জন্য আমন্ত্রণ জানায়। মঞ্চের নেত্রী প্রাচী সিংহের বক্তব্য, ‘‘কোয়না হস্টেলে আয়োজিত ওই সভা বাতিল করেন ওয়ার্ডেন। কোনও যুক্তি দেখানো হয়নি।’’ এর পরেই ছাত্র সংসদ একই বিষয়ে সভা কী ভাবে করবে, তা নিয়ে ক্যাম্পাসে বিতর্ক শুরু হয়। ডিন অব স্টুডেন্টস উমেশ কড়ম নির্দেশিকা জারি করেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও শান্তি রক্ষায় বাবরি মসজিদ-রাম জন্মভূমি নিয়ে সব সভা বাতিল করা হচ্ছে। কড়মের যুক্তি, জ্ঞান বৃদ্ধি ও সামাজিক শৃঙ্খলার উন্নতি হয় এমন বিষয়ে সব সময়েই শিক্ষামূলক আলোচনার অনুমতি দেওয়া হয়।

JNU Babri controversy Ayodhya dispute জেএনইউ অযোধ্যা বাবরি মসজিদ
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy