Advertisement
E-Paper

শিশুমৃত্যু কাণ্ডে ফাঁসানো হচ্ছে, দাবি কাফিলের

জামিন মেলেনি মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ রাজীব মিশ্র-সহ ধৃত অন্য চিকিৎসকদেরও।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:১৪
কাফিল খান।

কাফিল খান।

আট মাস কেটে গিয়েছে। এখনও জেলে রয়েছেন গোরক্ষপুর বিআরডি মেডিক্যাল কলেজে ৬৩টি শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত চিকিৎসক কাফিল খান। জামিন মেলেনি মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ রাজীব মিশ্র-সহ ধৃত অন্য চিকিৎসকদেরও।

আজ জেলা হাসপাতালে মেডিক্যাল চেকআপের জন্য নিয়ে আসা হয়েছিল কাফিলকে। দু’দিন আগেই কাফিলের স্ত্রী অভিযোগ জানিয়েছিলেন, জেলে তাঁর স্বামীর চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে না। এ দিন জেলা হাসপাতালের কাফিলের শারীরিক পরীক্ষা করেন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ কে কে শশী। রক্তচাপ মেপে দেখা হয়। লিপিড প্রোফাইল পরীক্ষার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কার্ডিয়োলজি বিভাগের বাইরের দাঁড়িয়েছিল পুলিশের ভ্যান। সাংবাদিকদের ভিড় এড়িয়ে তাঁকে ভ্যানে তোলার চেষ্টা করে পুলিশ। তার মধ্যেই তিনি কোনও মতে বলেন, ‘‘সম্পূর্ণ প্রশাসনের গাফিলতি। আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে।’’

গত বছর অগস্ট মাসের ঘটনা। গোরক্ষপুরের বিআরডি মেডিক্যাল কলেজে চার দিনে ৬৩টি শিশুর মৃত্যু হয়েছিল। অভিযোগ উঠেছিল, অক্সিজেনের অভাবে শিশুমৃত্যু হয়েছে। কাঠগড়ায় তোলা হয় অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহকারী সংস্থা ‘পুষ্পা সেলস’-কে। ওই সংস্থা দাবি করেছিল, দীর্ঘদিন তাদের বকেয়া টাকা মেটানো হয়নি হাসপাতালের পক্ষ থেকে। তাই অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছিল। সে সময়ে চিকিৎসক কাফিল খান তাঁর পরিচিত অক্সিজেন সরবরাহকারীর কাছ থেকে বেশ কিছু অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করেছিলেন। একটি শিশুকে কোলে নিয়ে তাঁর ছবি সংবাদমাধ্যমে, ক্রমে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। জানা গিয়েছিল, কী ভাবে কাফিল খান রাত জেগে মাইলের পর মাইল নিজে গাড়ি চালিয়ে অক্সিজেন সিলিন্ডার হাসপাতালে এনে শিশুদের বাঁচানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু রাতারাতি ‘হিরো’ হয়ে ওঠা কাফিলের বিরুদ্ধে হঠাৎই অভিযোগ ওঠে, তিনি বেআইনি ভাবে অক্সিজেন সিলিন্ডার বিক্রি করেন। যে দোকান থেকে তিনি অক্সিজেন সিলিন্ডার জোগাড় করে এনেছিলেন, অভিযোগ ওঠে, সেই ব্যবসা বেআইনি ভাবে চালাতেন উনি। এর পর গ্রেফতার করা হয়েছিল তাঁকে। গাফিলতির অভিযোগে জেলে পোরা হয় চিকিৎসক রাজীব মিশ্র, পূর্ণিমা শুক্লকে। সেই থেকে আট মাস হয়ে গিয়েছে, জেলেই রয়েছেন তাঁরা। ‘পুষ্পা সেলস’-এর পরিচালক মণীশ ভাণ্ডারিও জামিনে মুক্তি পেয়ে গিয়েছেন। কাফিল এ দিন সাংবাদিকদের সামনে বলেন, ‘‘আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ টাকাপয়সা দেননি, অক্সিজেন সিলিন্ডারের বকেয়া টাকা মেটানো হবে কী ভাবে!’’ গত সপ্তাহেই কাফিলের মেডিক্যাল পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু যথেষ্ট নিরাপত্তা রক্ষী না থাকায় দিন পিছিয়ে দেওয়া হয়।

গোরক্ষপুরের ঘটনায় ৯ অভিযুক্তের মধ্যে অন্যতম কাফিল। তাঁর স্ত্রী শাবিস্তান খান গত মঙ্গলবার নিজের বাড়িতে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে জানান, তাঁর স্বামী ও ধৃত অন্যান্য ডাক্তারদের যথাযথ চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে না জেলে। জেল কর্তৃপক্ষ অবশ্য সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। শাবিস্তানও পেশায় চিকিৎসক। তিনি অভিযোগ করেন, ধৃত চিকিৎসকদের ‘হত্যা’ করার চক্রান্ত করা হচ্ছে। তাঁর অভিযোগ, ২৯ মার্চ কাফিলের স্ট্রোক হয়েছিল। কিন্তু তার পর যে ধরনের চিকিৎসার প্রয়োজন, তার কিছুই করা হয়নি। রাজীব মিশ্র যকৃতের অসুখে ভুগছেন। ডায়াবিটিসও রয়েছে তাঁর। শাবিস্তান বলেন, ‘‘রাজীবের সঙ্গে দেখা করেছিলাম। চেহারা ভেঙে গিয়েছে ওঁর। কাফিলও রোগা হয়ে গিয়েছে। আট মাস কেটে গেল, কোনও বিচার হচ্ছে না। আর রাঘববোয়ালেরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে।’’

Gorakhpur tragedy Hospital Kafeel Ahmed
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy