বিহারের রাস্তার হাল-হকিকত জানতে চেয়েছিলেন তিনি। সে কারণে তৈরি করেছিলেন একটি ‘হোয়াটস অ্যাপ’ গোষ্ঠী— অভিযোগ গ্রহণের ব্যবস্থা। সেখানেই আসছে পাণি প্রার্থনা করে হাজারো আর্জি।
বিহারের ‘মোস্ট এলিজিবল ব্যাচেলর’ তেজস্বী যাদব। বিহারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী তথা পূর্ত ও সড়ক মন্ত্রী। আরজেডি নেতা লালুপ্রসাদের ছাব্বিশ বছরের পুত্রটিকে উদ্দেশ করে গুচ্ছ গুচ্ছ প্রেমের প্রস্তাব আসছে দফতরের হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে। শুধু বিহার নয়, দিল্লি, হরিয়ানা, পঞ্জাব, গুজরাত এবং মহারাষ্ট্র থেকেও প্রস্তাব আসছে। ইতিমধ্যেই প্রায় ৪৪ হাজার ‘প্রণয় বার্তা’য় উপচে পড়ছে ওই হোয়াটস অ্যাপ নম্বর।
দফতরের নম্বরে প্রেম ও বিয়ের প্রস্তাব আসার বিষয়টি জানেন তেজস্বী নিজেও। নিজের ঘরে আলাপচারিতায় প্রণয়-বার্তার কথা উঠলে লজ্জায় লাল হয়ে যান তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘দেখুন দাদা, আমি নিজে তো ওই গ্রুপের বার্তা দেখি না। তাই কেমন বার্তা এসেছে বলতে পারব না। রাস্তা সংক্রান্ত অভিযোগের জন্য ওই গ্রুপের বার্তা দেখার নির্দিষ্ট একটি টিম রয়েছে। তাঁরাই দেখেন।’’ হাসতে হাসতে তাঁর বক্তব্য, ‘‘তবে অনেক অপ্রয়োজনীয় মেসেজ এসেছে বলে শুনেছি।’’ পূর্ত দফতরের ওই হোয়াটস অ্যাপ নম্বরে প্রায় ৪৭ হাজার মেসেজ এসেছে। তার ১০ শতাংশও রাস্তা সংক্রান্ত নয়।
গ্রুপের দায়িত্বে থাকা দফতরের প্রাক্তন এক জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার জানিয়েছেন, সকলেই ভাবছেন এটা তেজস্বীর নিজস্ব নম্বর। তাই বার্তা পাঠাচ্ছেন। প্রথম দিকে বিষয়টি নিয়ে দফতরে হইচই হচ্ছিল। পরে ব্যাপারটা তাঁদের গা-সওয়া হয়ে গিয়েছে। দফতর সূত্রে খবর, পটনা থেকে একটি মেয়ে মেসেজ পাঠিয়েছেন, ‘‘আমার গোত্র অনুযায়ী আমি উচ্চবর্ণের। তবে আপনাকে বিয়ে করতে আমার কোনও আপত্তি নেই। শহরের সেন্ট জোসেফ স্কুল থেকে পড়াশোনা শেষ করেছি। আপনাকে বিয়ে করে রাজনীতিতে কেরিয়ার বানাতে চাই।’’ দিল্লির লেডি শ্রীরাম কলেজের একটি মেয়ে বার্তা পাঠিয়েছেন, ‘‘শুধু আপনাকেই বিয়ে করতে চাই।’’ গোপালগঞ্জের এক যাদব-কন্যার দাবি, ‘‘আপনার হাসি এবং নেতৃত্ব মনভোলানো। সে কারণে আপনাকে বিয়ে করতে চাই।’’
ছেলের এই জনপ্রিয়তায় বিস্তর খুশি যাদব কুলপতি লালুপ্রসাদ। স্ত্রী রাবড়ী দেবীর ১০ নম্বর সার্কুলার রোডের বাড়িতে বসে নিজস্ব কায়দায় তিনি বলেন, ‘‘মেয়ে ভাল হলে জাতপাত নিয়ে কোনও সমস্যা হবে না। তেজস্বীর বিয়ে দিয়ে দেব।’’ যাদব পরিবারের ঘনিষ্ঠরা অবশ্য কিছুটা চিন্তিত। বড় ছেলের বিয়ে না হলে ছোট ভাইয়ের বিয়ে হবে কী করে, ভেবে চোখ কপালে তুলছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy