প্রহৃত: গবাদি বিধির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে মার খেয়েছেন মাদ্রাজ আইআইটি-র ছাত্র আর সুরজ। মঙ্গলবার। ছবি: পিটিআই।
হত্যার জন্য গবাদি পশু বিক্রির উপরে নিষেধাজ্ঞায় স্থগিতাদেশ দিল মাদ্রাজ হাইকোর্ট। কেন্দ্রের নয়া গবাদি বিধি নিয়ে এখনও মুখ খোলেনি তামিলনাড়ুর এডিএমকে সরকার। কিন্তু ওই বিধির বিরুদ্ধে পথে নামার হুমকি দিয়েছে বিরোধী দল ডিএমকে। পাশাপাশি এ নিয়ে মাদ্রাজ হাইকোর্টের মাদুরাই বেঞ্চের শরণাপন্ন হয়েছিলেন আইনজীবী ও সমাজকর্মী এস সেলভাগোমতী। আর্জিতে তিনি জানান, এই নিষেধাজ্ঞা জারি করে মানুষের খাদ্যের মৌলিক অধিকারে হাত দিচ্ছে কেন্দ্র। প্রাথমিক সওয়ালের পরে স্থগিতাদেশ দিয়েছে বেঞ্চ। চার সপ্তাহের মধ্যে এই বিষয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারকে নিজেদের মত জানাতে বলেছেন বিচারপতিরা।
ঘটনাচক্রে এ দিন তামিলনাড়ুতেই গবাদি বিধির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোয় হিংসার শিকার হয়েছেন আইআইটি-মাদ্রাজের পড়ুয়া আর সুরজ। রবিবার আইআইটি-তে নয়া গবাদি বিধির বিরুদ্ধে ‘গোমাংস উৎসব’ পালন করেন সুরজ ও তাঁর সহপাঠীরা। সুরজের সহপাঠীদের দাবি, আজ ক্যান্টিনে দুপুরের খাবার নেওয়ার সময়ে সুরজকে ঘিরে ধরেন এয়ারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাত-আট জন পড়ুয়া। তাঁরা একটি সঙ্ঘপন্থী ছাত্র সংগঠনের সদস্য বলে পরিচিত। ওই পড়ুয়ারা সুরজকে মারধর করেন বলে অভিযোগ। সুরজের একটি চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন সহপাঠীরা। পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হবে। অন্য দিকে এই বিধি নিয়ে আজ ভিন্ন সুর শোনা গিয়েছে বিজেপি-র অন্দরেই। উপজাতি ও খ্রিস্টান প্রধান মেঘালয়ের বিজেপি প্রদেশ কমিটির তরফে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে, ওই রাজ্যকে বিধির আওতার বাইরে না রাখলে গণ-দলত্যাগ হতে পারে। বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র নলিন কোহলির বক্তব্য, ‘‘উত্তর-পূর্ব বা দেশের কোনও অংশে গোমাংস খাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি কেন্দ্র। বিরোধীরা অপপ্রচার চালাচ্ছেন।’’
আরও পড়ুন:ষড়যন্ত্রের প্রমাণ রয়েছে, কোর্টে ধাক্কা আডবাণীর
গবাদি বিধির প্রতিবাদ করতে গিয়ে কেরলে তিন কংগ্রেস কর্মী প্রকাশ্যে বাছুরের মাথা কাটায় অস্বস্তিতে পড়েছিল রাহুল গাঁধীর দল। আজ তামিলনাড়ুর ঘটনা ও মেঘালয়ে বিজেপি-র অন্দরের বিক্ষোভের পরে স্বভাবতই সুযোগ ছাড়তে রাজি হয়নি তারা। কংগ্রেস মুখপাত্র মণীশ তিওয়ারির মতে, আইআইটি-মাদ্রাজের ঘটনা বিজেপি তথা সঙ্ঘের আসল চেহারা দেখিয়ে দিয়েছে। উত্তর-পূর্বে অরুণাচলের মতো বিজেপি শাসিত রাজ্যেও এই বিধি আদৌ কার্যকর করা হবে কি না, তা নিয়ে গতকালই প্রশ্ন তুলেছিল কংগ্রেস। আজ মেঘালয় নিয়ে নলিন কোহলির বক্তব্যের জবাবে কংগ্রেস জানিয়েছে, বিজেপি উত্তর-পূর্বের মানুষকে বোকা ভাবছেন।
গবাদি বিধি নিয়ে এ দিন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের পাশে দাঁড়িয়েছে বিহারের শাসক দল জেডিইউ। তাদেরও দাবি, এই বিধি চালু করে রাজ্যের অধিকারে হস্তক্ষেপ করেছে কেন্দ্র। এটা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর উপরে আঘাত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy