Advertisement
E-Paper

ফের বেলাইন ট্রেন, উদ্বেগ যোগী-রাজ্যে

আবার ট্রেন দুর্ঘটনা। আবার উত্তরপ্রদেশ। আবার গাফিলতির অভিযোগ। এবং আবার নাশকতার আশঙ্কাও।বুধবার রাতে উত্তরপ্রদেশের মাহোবা জেলায় কুলপাহাড় স্টেশনের কাছে দুর্ঘটনায় পড়ে জবলপুর-নিজামুদ্দিন মহাকোশল এক্সপ্রেস।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৭ ০৩:২৫
দুর্ঘটনা:  উত্তরপ্রদেশের মাহোবা জেলায় কুলপাহাড় স্টেশনের কাছে। ছবি: পিটিআই।

দুর্ঘটনা: উত্তরপ্রদেশের মাহোবা জেলায় কুলপাহাড় স্টেশনের কাছে। ছবি: পিটিআই।

আবার ট্রেন দুর্ঘটনা। আবার উত্তরপ্রদেশ। আবার গাফিলতির অভিযোগ। এবং আবার নাশকতার আশঙ্কাও।

বুধবার রাতে উত্তরপ্রদেশের মাহোবা জেলায় কুলপাহাড় স্টেশনের কাছে দুর্ঘটনায় পড়ে জবলপুর-নিজামুদ্দিন মহাকোশল এক্সপ্রেস। পাঁচটি কামরা শুধু লাইনচ্যুতই হয়নি, ছিটকে পড়েছে এ-দিকে ও-দিকে। আহত হন ৫২ জন যাত্রী।

কয়েক মাসে ওই রাজ্যে পরপর কয়েকটি বড় মাপের রেল-দুর্ঘটনায় রীতিমতো চিন্তিত রেল মন্ত্রক। একই রাজ্যে লাগাতার দুর্ঘটনার বহর দেখে নাশকতার আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছে না রেল প্রশাসন। যদিও বুধবার রাতের দুর্ঘটনার জন্য লাইনের ত্রুটি অর্থাৎ রেলের কর্মী-অফিসারদের গাফিলতিকেই প্রাথমিক ভাবে দায়ী করছেন রেল মহলের বড় অংশ। তাঁদের বক্তব্য নজরদারিতে ফাঁক থেকে যাওয়ায় লাইনের ত্রুটি ধরা পড়েনি। তাই বেলাইন হয়েছে ট্রেন।

প্রাথমিক তদন্তের পরে রেলকর্তারা জানাচ্ছেন, সাধারণ ভাবে ‘ফিশপ্লেট’ দিয়ে দু’টি লাইন জোড়া হয়। কিন্তু গরমে যাতে লাইন বেঁকে না-যায়, সেই জন্য তাপমাত্রা বাড়ার মরসুম শুরু হওয়ার আগেই কিছু দূর অন্তর একটি করে ফিশপ্লেট খুলে বৈদ্যুতিক ব্যবস্থায় ঝালাই করে লাইন পুরোপুরি জুড়ে দেওয়া হয়। তদন্তে জানা গিয়েছে, এ ক্ষেত্রে লাইন জোড়ার সময়ে যথাযথ পদ্ধতি মেনে ঝালাই করা হয়নি। তাই কামরার চাপে লাইন ভেঙে দুর্ঘটনা ঘটেছে।

সাত মাসে সাত*

• ৩০ মার্চ, ২০১৭: উত্তরপ্রদেশ। মহাকোশল এক্সপ্রেস। আহত ৫২

• ২২ জানুয়ারি, ২০১৭: অন্ধ্রপ্রদেশ। হিরাখণ্ড এক্সপ্রেস। মৃত ৪০

• ৬ ডিসেম্বর, ২০১৬: উত্তরবঙ্গের শামুকতলা। ক্যাপিটাল এক্সপ্রেস। মৃত ২

• ২২ ডিসেম্বর, ২০১৬: কানপুর। অজমের এক্সপ্রেস। আহত ৬৩

• ২১ নভেম্বর, ২০১৬: কানপুর। পটনা-ইনদওর এক্সপ্রেস। মৃত ১৪৭

• ৫ অক্টোবর, ২০১৬: জালন্ধর। ঝিলম এক্সপ্রেস। আহত ১০

• ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬: ভুবনেশ্বর। ভদ্রক প্যাসেঞ্জার। মৃত ২

* কবে, কোথায়, কোন ট্রেনের দুর্ঘটনায় কত হতাহত

রেলেরই একাংশ বলছেন, লাইন ভেঙেছে, নাকি তা কাটা হয়েছে, সেটাই বড় প্রশ্ন। লাইন কাটা হয়ে থাকলে সেটা নাশকতার দিকেই আঙুল তোলে। উত্তরপ্রদেশের নতুন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের প্রশাসন এই ঘটনায় খুবই উদ্বিগ্ন। নাশকতারই ছক ছিল কি না, রাজ্য পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেলকে তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছে তারা।

গত সেপ্টেম্বর থেকে রেলে ছোট-বড় সাতটি দুর্ঘটনার মধ্যে অন্তত তিনটির পিছনে নাশকতার ছকই ছিল বলে জানিয়েছে রেল প্রশাসন। কিন্তু নাশকতার ছকই যে ছিল, ওই তিনটি ঘটনার একটিতেও তা প্রমাণ করা যায়নি। প্রাথমিক তদন্তের পরে এ বারেও সেই নাশকতার বিষয়টিকেই সামনে এনে রেল নিজেদের গাফিলতি ঢাকার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ।

আরও পড়ুন: মাংস মিলছে না আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে, অসন্তুষ্ট ছাত্ররা

বারবার নাশকতার তত্ত্ব এনে রেলের গাফিলতি ঢাকার চেষ্টা দেখে রেলের প্রাক্তন কর্তারা দাবি তুলেছেন, অন্যান্য দুর্ঘটনার মতো রেল দুর্ঘটনার তদন্ত রিপোর্টও জনসমক্ষে আনা হোক। তা হলেই সকলের কাছে পরিষ্কার হয়ে যাবে, দুর্ঘটনার কারণ গাফিলতি না নাশকতা। গাফিলতি থেকে থাকলে তার জন্য কে বা কারা দায়ী, তা জেনে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে সহজেই। শাস্তির কিছু দৃষ্টান্ত দেখাতে পারলে কর্মী-অফিসারদের গা-ছাড়া মনোভাব বদলানো যাবে। শুধু তা-ই নয়, তদন্ত রিপোর্ট সকলের সামনে এলে বহু জনের চিন্তাভাবনা ও প্রস্তাব-পরামর্শ থেকে ভবিষ্যতে দুর্ঘটনা ঠেকানোর সমাধানও বেরিয়ে আসতে পারে।

Mahakaushal Express Train Accident
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy