Advertisement
E-Paper

ছাত্রীর পাশে বসে ভরা বাসে হস্তমৈথুন!

কোলে রাখা ব্যাগ দিয়ে আড়াল করেই কাজ সারছেন তিনি। যাতে, ওই ছাত্রী ছাড়া অন্য সহযাত্রীদের নজরে বিষয়টি না আসে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ১৫:৩৩
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

বাসে বসেই হস্তমৈথুন করছেন এক ব্যক্তি। একদম পাশের আসনে বসা ছাত্রী ঘটনার প্রতিবাদ করলেও তিনি নির্বিকার। নির্বিকার সহযাত্রীরাও। এমন ভয়ঙ্কর ঘটনার সাক্ষী দিল্লি। গোটা ঘটনার ভিডিও তুলে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রী পুলিশে অভিযোগ করলেও অভিযুক্ত এখনও অধরা।

ছাত্রীটি মোবাইলে তোলা ওই ভিডিও নিজের ফেসবুক পেজে পোস্ট করেছেন। পাশাপাশি তিনি ভিডিওটি ট্যাগ করেছেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল, দিল্লির পুলিশ কমিশনার এবং দিল্লি পুলিশকে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, বাসে মোটামুটি ভিড়। কয়েক জন দাঁড়িয়ে। বাকিরা বসে। সেই বাসে বসেই হস্তমৈথুন করছেন মধ্যবয়স্ক ওই ব্যক্তি। কোলে রাখা ব্যাগ দিয়ে আড়াল করেই কাজ সারছেন তিনি। যাতে, পাশে বসা ওই ছাত্রী ছাড়া অন্য সহযাত্রীদের নজরে বিষয়টি না আসে।

গত ৭ ফেব্রুয়ারি দিল্লিতে এই ঘটনা ঘটে। ৮ তারিখ ওই ভিডিও ছাত্রীটি পোস্ট করেন। কিন্তু, সোমবার গোটা ঘটনা নিয়ে শোরগোল শুরু হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। ছাত্রীটি জানিয়েছেন, ওই দিন সকালে বাসে করে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে যাচ্ছিলেন। বসন্ত বিহারের বেশ কিছুটা আগে তিনি খেয়াল করেন, পাশে বসে থাকা এক মধ্যবয়স্ক পুরুষ সহযাত্রী কেমন একটা চাহনিতে তাঁর দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। এর পরেই তিনি বুঝতে পারেন, ওই ব্যক্তি হস্তমৈথুন করছেন। বিষয়টি বুঝতে পেরে ছাত্রীটি চিৎকার করে তাঁকে বারণ করেন। কাজ না হওয়ায়, কন্ডাকটর-সহ অন্যদের নজরে আনেন বিষয়টি। কিন্তু, হস্তমৈথুন যেমন তাতে থামেনি, তেমনই কেউ এগিয়েও আসেননি প্রতিবাদ করতে। বরং সকলেই চুপ করেছিলেন বলে অভিযোগ।

আরও পড়ুন
খেলতে বেরিয়ে উধাও কুঁদঘাটের পাঁচ কিশোর-কিশোরী

মোবাইলে গোটা বিষয়টির ভিডিও করেন ওই ছাত্রী। তাতেও ভাবলেশহীন ছিলেন ওই ব্যক্তি। নির্বিকার ভাবেই তিনি হস্তমৈথুন করতে থাকেন। এর কিছু ক্ষণ পরে বসন্ত বিহার এলে ছাত্রীটি এক প্রকার বাধ্য হয়ে নেমে যান। প্রথমে তিনি বসন্ত বিহার থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। ভিডিওটি তিনি পুলিশ কর্মীদের দেখান। সেখানে হস্তমৈথুনকারীকে স্পষ্ট ভাবেই দেখা যাচ্ছিল। কিন্তু, সেই ঘটনার পর ৬ দিন কেটে গেলেও এখনও পর্যন্ত কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

কিন্তু, এ ভাবে প্রকাশ্যে হস্তমৈথুন করা নিয়ে কী বলছেন বিশেষজ্ঞেরা?

মনোরোগ চিকিৎসক কেদার বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে হস্তমৈথুন একটি স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় পদ্ধতি। খিদে পেলে খাওয়া বা ঘুম পেলে ঘুমিয়ে পড়ার মতোই স্বাভাবিক। কিন্তু, প্রকাশ্যে এ ভাবে হস্তমৈথুন করাটা কোনও ভাবেই স্বাভাবিক নয়। তাঁর কথায়, ‘‘যৌন তাড়নাকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারাটাই একটা সমস্যা। কোনও ভাবেই এটা স্বাভাবিক আচরণের মধ্যে পড়ে না।’’

কেদারবাবু জানান, কোনও ব্যক্তিকে দেখে উপরিগত ভাবে হয়তো মনে হতে পারে তিনি স্বাভাবিক। কিন্তু, যৌন তাড়না নিয়ন্ত্রণ করতে না পারাটা তো স্বাভাকিকত্বের প্রমাণ নয়। তাঁর কথায়, ‘‘এটা এক ধরনের মনোরোগ। ওই ব্যক্তি কিন্তু প্রকাশ্যে অমন আচরণ করে যৌন সন্তুষ্টি পাচ্ছেন। এবং সেই সন্তুষ্টি পাওয়ার ক্ষেত্রে তার কাছে উচিত-অনুচিত বোধটা কোনও ভাবেই কাজ করে না।’’ তিনি জানান, বাস, ট্রাম, পার্ক— স্থান-কাল-পাত্র মাথায় না রেখেই ওঁরা এমনটা করে থাকেন।

আরও খবর
‘নীতি থাকলে কি এমন জোট করত বিজেপি?’

মনোবিদদের অন্য একটা অংশ জানাচ্ছেন, অনুমতি না নিয়ে কারও সামনে হস্তমৈথুন করাটাই অন্যায়। বিষয়টি কেমন? ধরা যাক, একাধিক বন্ধু বা স্বামী-স্ত্রী বা প্রেমিক-প্রেমিকারা একসঙ্গে পর্নোগ্রাফি দেখছেন। সেই সময় যৌন উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পেরে কেউ হস্তমৈথুনের ইচ্ছে প্রকাশ করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে অন্যদের অনুমতি নেওয়াটা অবশ্য কর্তব্য। কিন্তু, এটা একান্ত ব্যক্তিগত পরিসরেই সম্ভব। প্রকাশ্যে বা কোনও জনবহুল জায়গায় এমনটা করা অনুচিত। তাঁদের মতে, প্রকাশ্যে এ ভাবে হস্তমৈথুন করা কোনও ভাবেই যৌন হেনস্থা নয়, এ এক ধরনের হিংসা।

২০১৬-য় নির্ভয়া-কাণ্ডের আগে এবং পরে রাজধানী দিল্লি এমন বহু ঘটনার সাক্ষী থেকেছে। যৌন হেনস্থা থেকে শ্লীলতাহানি, ধর্ষণ থেকে খুন— কিন্তু, কোনও কিছু থেকেই যে দিল্লি শিক্ষা নেয়নি, আবারও তা প্রমাণ হল। এবং এ ক্ষেত্রে সহনাগরিকদের ভূমিকাও কিন্তু প্রশ্নের ঊর্ধ্বে নয়!

Sexual harassment Masturbate Delhi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy