Advertisement
E-Paper

নিষ্ক্রিয় খট্টর, দাবি রাষ্ট্রপতি শাসন জারির

চাপের মুখে হরিয়ানা সরকার এ দিন পঞ্চকুলা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার অশোক কুমারকে সাসপেন্ড করেছে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, ১৪৪ ধারা জারি হলেও তিনি তা কার্যকর করতে পারেননি। অস্ত্রশস্ত্র, পেট্রোল-কেরোসিন নিয়ে তাণ্ডব চালিয়েছে গুন্ডাবাহিনী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৭ ০৪:১১
মনোহর খট্টর ও ভূপেন্দ্রসিংহ হুডা

মনোহর খট্টর ও ভূপেন্দ্রসিংহ হুডা

এক সপ্তাহ আগে থেকেই জানা ছিল, ডেরা সচ্চা সৌদার প্রধান গুরমিত রাম রহিম সিংহের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলায় রায় ঘোষণা হবে। তা সত্ত্বেও কোনও প্রস্তুতি নেয়নি হরিয়ানার মনোহরলাল খট্টর সরকার। এবং সেই সুযোগেই পঞ্চকুল্লা থেকে সিরসার মতো বিভিন্ন শহরে তাণ্ডব চালিয়েছে ওই রকস্টার গুরুর ভক্তরা। রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৩৩ জনের। এই অভিযোগ তুলে কংগ্রেস আজ হরিয়ানায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারির দাবি তুলল। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র সিংহ হুডার কথায়, ‘‘এখনই খট্টর সরকারকে বরখাস্ত করে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হোক।’’

চাপের মুখে হরিয়ানা সরকার এ দিন পঞ্চকুলা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার অশোক কুমারকে সাসপেন্ড করেছে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, ১৪৪ ধারা জারি হলেও তিনি তা কার্যকর করতে পারেননি। অস্ত্রশস্ত্র, পেট্রোল-কেরোসিন নিয়ে তাণ্ডব চালিয়েছে গুন্ডাবাহিনী।

আরও পড়ুন: ভূমিশয্যায় রাম রহিম, আপাতত ক্ষান্ত ভক্তরা

গত কালের তাণ্ডবের পরে আজ হরিয়ানায় নতুন কোনও গণ্ডগোল না হলেও মোদী সরকারের দুশ্চিন্তা কাটছে না। সিবিআই আদালত সবে গুরমিতকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। সোমবার তাঁর সাজা ঘোষণা হবে। ফলে নতুন করে হাঙ্গামার আশঙ্কা থাকছেই। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ আজ সকালে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর প্রধান রাজীব জৈন, আধাসেনা বাহিনীগুলির প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ডোভাল, আইবি-প্রধানের সঙ্গে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজেও।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আজ সিরসায় সেনা টহল দিয়েছে। কাঁটাতারে ঘিরে ফেলা হয়েছে পঞ্চকুলা ও সিরসার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। সেনাবাহিনীর ৩৩ আর্মার্ড ডিভিশনের জিওসি রাজপান পুণিয়া জানিয়েছেন, এখনই ডেরায় ঢোকার কোনও পরিকল্পনা তাঁদের নেই। তবে সিরসার ডেরায় ঢোকার পথে বসেছে ব্যারিকেড। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, খট্টর-সরকার কেন আগে থেকে এমন প্রস্তুতি নেয়নি? সূত্রের খবর, পঞ্চকুলায় ভিড় জমার খবর পেয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পঞ্জাবের রাজ্যপাল ভি পি সিংহ বদনৌর উদ্বিগ্ন হয়ে কেন্দ্রের এক মন্ত্রীকে ফোন করেন। অথচ হরিয়ানা সরকার কোনও তৎপরতা দেখায়নি।

হরিয়ানা পুলিশের ডিজি বি এস সাঁধু আজ যুক্তি দেন, পঞ্চকুলাতেই ভিড় আটকানো উচিত ছিল। তা হয়নি। কিন্তু প্রাক্তন আইপিএস অফিসার সুধীর কুমার ঝা-র যুক্তি, ‘‘ওই অভিযুক্ত ব্যক্তি দোষী সাব্যস্ত না হলেও হাজার হাজার লোক যে ওখানে জমা হবে, তা আগেই আঁচ করা উচিত ছিল। পঞ্চকুলা ও সিরসায় ঢোকার আগেই ব্যারিকেড তৈরি করে তাদের আটকে ফেলতে হতো। প্রতিটি গাড়ি তল্লাশি করে ছাড়া উচিত ছিল। বাইরের গাড়ি শহরে ঢুকতে দেওয়াও উচিত হয়নি। এক বার ভিড় জমে গেলে শক্তি প্রয়োগ না করে তাদের নিয়ন্ত্রণ করা মুশকিল। আসলে ভিড় জমতে দেওয়া হয়েছিল।’’ সুধীরের প্রশ্ন, ‘‘কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক, আইবি— এরাই বা কী করছিল?’’

এখানেই মোদী ও খট্টর সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস। দলের মুখপাত্র অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির অভিযোগ, ‘‘রাজ্যে অশান্তি রুখতে এই নিয়ে তৃতীয় বার ব্যর্থ হল খট্টর সরকার। ২০১৪-র নভেম্বরে রামপাল ডেরায় চার দিন ধরে হিংসা চলেছিল। ছ’জনের মৃত্যু হয় তাতে। একই ভাবে ২০১৬-র ফেব্রুয়ারিতে জাঠ আন্দোলনের সময়েও ১০ দিন ধরে হিংসা-লুঠতরাজ চলতে দিয়েছিল খট্টর সরকার। সে বারে ৩২ জন নিহত হন। ২৫ হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। কেন্দ্রীয় সরকারও এ ক্ষেত্রে ব্যর্থ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মূক দর্শকের ভূমিকা পালন করছেন।’’

সাক্ষী মহারাজ ও স্মৃতি ইরানির ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। এক দিকে সাক্ষী গুরমিতকেই সমর্থন করেছেন। স্মৃতি বৈদ্যুতিন মাধ্যমকে উদ্বেগ না ছড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন। সিঙ্ঘভির দাবি, ‘‘রাজনৈতিক ফায়দার কথা ভুলে মোদী এ বার রাজধর্ম পালন করুন। তাঁর যে ৫৬ ইঞ্চি ছাতি রয়েছে, তার প্রমাণ দিন।’’

Manohar Lal Khattar Haryana Chief Minister Gurmeet Ram Rahim Singh গুরমিত রাম রহিম সিংহ মনোহরলাল খট্টর Rape Case Convicted
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy