Advertisement
E-Paper

পেশি নয়, বুদ্ধিতে বেশি আস্থা উত্তর-পূর্বের প্রথম মহিলা বাউন্সারের

মেঘালয়ের জেসিকা বরাবরই ব্যতিক্রমী। শিলংয়ের মালকি এলাকার বাসিন্দা জেসিকা ছোট থেকে ছিল গোলগাল।

রাজীবাক্ষ রক্ষিত

শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০১৭ ১৪:৫৬
জেসিকা বামন।—নিজস্ব চিত্র।

জেসিকা বামন।—নিজস্ব চিত্র।

নারীত্বের প্রথাগত ধারণা বারবার ভেঙে দেখিয়েছেন উত্তর-পূর্বের মেয়েরা। পাঁচ বার এভারেস্ট পদানত করা আনসু জামসেমপা, সব প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়ে মুষ্টিযুদ্ধে অলিম্পিকে ব্রোঞ্জ জেতা মেরি কমদের দেখে অনেক মেয়েই এখন বক্সিং, মাউন্টেনিয়ারিংয়ের দিকে ঝুঁকছেন। তীরন্দাজি, ফুটবল, হকিতেও যাচ্ছেন অনেকে। কিন্তু মেয়ে হয়ে বডি বিল্ডিংকে নেশা করা আর নৈশ ক্লাবে বাউন্সারের কাজকে পেশা করার কথা জেসিকা বামোনের আগে, উত্তর-পূর্বের কোনও মেয়ে ভাবতে ও কাজে করে দেখাতে পারেননি।

আরও পড়ুন: দিল্লির অভিজাত এলাকা থেকে ১২ কোটি টাকার গয়না লুঠ

মেঘালয়ের জেসিকা বরাবরই ব্যতিক্রমী। শিলংয়ের মালকি এলাকার বাসিন্দা জেসিকা ছোট থেকে ছিল গোলগাল। বাবার ছিল পেশিবহুল শরীর। তাঁর শরীরচর্চার ধারাটা ছোটবেলা থেকে দেখলেও জেসিকা তখন শুধুই লেখাপড়ায় ব্যস্ত ছিল। মোটা শরীরের জন্য পছন্দের পোশাক পরতে পারত না। স্নাতক হওয়ার পরে রোগা হতে জিমে যোগ দেন জেসিকা। সেই থেকে জিমই হয়ে ওঠে তাঁর ধ্যান-জ্ঞান। কঠোর অনুশীলনের ফলে তরুণী জেসিকার পেশিবহুল দেহ এখন নারী-পুরুষ নির্বিশেষে অনেকেরই ঈর্ষার কারণ। সেই সঙ্গে ক্রিকেট, ফুটবল, বাস্কেটবল-সহ বিভিন্ন খেলায় দক্ষ হয়ে ওঠেন তিনি। ২০১৫ সালে সমাজসেবায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রিও নেন।

কিন্তু শুধু দেহ গঠন করলেই হবে না। পরিবারের ভরণপোষণ, নিজের শরীরচর্চার খরচ আর বিভিন্ন বডি বিল্ডিং প্রতিযোগিতায় নামতে দরকার ছিল রোজগার। তাই ২০১৬ সালে একই সঙ্গে দু’টি চাকরি নেন তিনি। বিভিন্ন দেহসৌষ্ঠব প্রতিযোগিতায় পুরস্কার জেতা জেসিকাকে পরে চাকরির প্রস্তাব দেয় শিলংয়ের ‘ক্লাউড নাইন’ নাইট ক্লাব কর্তৃপক্ষ।

কিন্তু রাত-বিরেতে মদ্যপ যুবক-যুবতীদের সামলানো কি মেয়ের কাজ! জেসিকা বলেন, “ভেবে দেখলাম চ্যালেঞ্জটা নেওয়াই যাক। যে কাজ এতদঞ্চলে অন্য কোনও মেয়ে করেনি, তেমন করা করে দেখানোর কৃতিত্বই আলাদা। কাজ করতে গিয়ে দেখেছি, পেশির জোর নয়, মেজাজ নিয়ন্ত্রণে রাখা আর বুদ্ধি দিয়েই সিংহভাগ পরিস্থিতির মোকাবিলা করা সম্ভব।” ওই নাইট ক্লাবে আগে মদ্যপ যুবক-যুবতীর ঝামেলা লেগেই থাকত। কিন্তু জেসিকা আসার পরে কখনও ঠান্ডা মাথায়, কখনও সামান্য বল প্রয়োগ করে, কয়েক মাসের মধ্যেই পরিবেশে অনেকটা শৃঙ্খলা ফিরিয়েছেন। একই সঙ্গে একটি নেশামুক্তি কেন্দ্রে কাউন্সেলারের দায়িত্বও সামলান জেসিকা।

ইতিমধ্যে মিস ফিটনেস, মিস ফিটনেস নাব্বা, আয়রনম্যান মিস ফিটনেস, মেঘালয় মিস ফিটনেস প্রতিযোগিতায় সেরা হওয়া জেসিকার পরের লক্ষ্য জাতীয় প্রতিযোগিতা। জেসিকার কথায়, শরীরচর্চার সঙ্গেই মনের উপরে নিয়ন্ত্রণও প্রয়োজন। তা হলে অনেকের তুচ্ছ-তীর্যক মন্তব্য গায়ে লাগে না, ব্যতিক্রমী কাজ করার জোর মেলে। আর অন্যদেরও বুঝিয়ে সঠিক পথে আনা যায়।

Jessica Bamon Bouncer Lady Bouncer Meghalaya Shillong North East India
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy