Advertisement
E-Paper

দশ হাজারি স্বপ্ন দেখেন ৮১ বছরের স্টার্টার দাদা

যৌবনে চুটিয়ে দৌড়েছেন। জাতীয় স্তরে ভারতের হয়ে দৌড়েছেন। দৌড়েছেন ‘উড়ন্ত শিখ’ মিলখার সঙ্গেও। দৌড় ছেড়েছেন ১৯৭৫ সালে। কিন্তু ট্র্যাক ছাড়তে পারেননি। এই প্রবাসী বাঙালি ৪২ বছর ধরে ‘স্টার্টার দাদা’।

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৭ ১৪:০০
নারায়ণচন্দ্র দেব। ছবি:পার্থ চক্রবর্তী।

নারায়ণচন্দ্র দেব। ছবি:পার্থ চক্রবর্তী।

আকাশের দিকে তাক করে গর্জে উঠল অশীতিপর বাঙালি, নারায়ণচন্দ্র দেবের এয়ার পিস্তল। রানিং ট্র্যাকে ছিটকে বেরোল একদল ছেলে। শুরু হল দৌড় প্রতিযোগিতা।

স্টার্টার দাদা! নারায়ণবাবুকে সবাই চেনে এই নামেই। যেখানেই দৌড় প্রতিযোগিতা, সেখানেই বন্দুক নিয়ে পৌঁছে যান তিনি। জামশেদপুরের ৮১ বছরের এই বৃদ্ধকে ছাড়া যেন দৌড় প্রতিযোগিতা শুরুই করা যায় না।

যৌবনে চুটিয়ে দৌড়েছেন। জাতীয় স্তরে দৌড়েছেন। দৌড়েছেন ‘উড়ন্ত শিখ’ মিলখার সঙ্গেও। দৌড় ছেড়েছেন ১৯৭৫ সালে। কিন্তু ট্র্যাক ছাড়তে পারেননি। এই প্রবাসী বাঙালি ৪২ বছর ধরে ‘স্টার্টার দাদা’। জামশেদপুরের সিদগোড়ায়, বাড়িতে বসে নারায়ণবাবু বলেন, ‘‘যত দিন সুস্থ থাকব বন্দুক হাতে স্টার্টারের কাজ করতে পৌঁছে যাব। এর জন্য আমার দু’টো এয়ারপিস্তল আছে।’’

স্মৃতির ভাঁড়ারে জমে আছে তাঁর অনেক কথা। আদি বাড়ি ঢাকায়। নারায়নবাবুর বাবা কর্মসূত্রে আসেন কানপুরে। সেখানেই তাঁর বড় হওয়া। নারায়ণবাবু বলেন, ‘‘১৯৬১ থেকে ১৯৭৫ পর্যন্ত বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় দৌড়েছি। মিলখা সিংহের সঙ্গেও দৌড়েছি।’’ দৌড়ের সুবাদেই তাঁর টাটায় চাকরি। চলে আসেন জামশেদপুরে। তাঁর কথায়, ‘‘দৌড় আমার রক্তে। কী ভাবে ট্র্যাক ছাড়ব?’’

এই বয়সেও তিনি খুব কড়া স্টার্টার। জামশেদপুরেই নয়, ভিন‌্‌ রাজ্যের প্রতিযোগিতা থেকেও স্টার্টারের কাজের জন্য নারায়ণবাবুর ডাক আসে। তাঁর কথায়, ‘‘স্টার্টারের কাজ আম্পায়ার বা রেফারির মতোই। স্টার্টারের কথাই শেষ কথা।’’ কড়া মনোভাবের জন্যই আয়োজকরা এখনও তাঁর উপর ভরসা করেন। সম্প্রতি জামশেদপুরের হিল টপ স্কুলে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় তিনিই ছিলেন স্টার্টার। আয়োজকরা জানান, নারায়ণবাবু মানেই দৌড় প্রতিযোগিতা সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হবে। তাই সবাই ওঁকেই ডাকে।

এই কাজের জন্য এই বয়সে সুস্থ থাকাটা নারায়ণবাবুর পক্ষে জরুরি। শৃঙ্খলাপরায়ণ জীবন ও নিয়মিত ব্যায়ামের ফলে তিনি এখনও পুরো সুস্থ। মেয়ে সোনালী জামশেদপুরের একটি স্কুলে শিক্ষকতা করেন। সোনালী বলেন, ‘‘মাঠে বাবার পিস্তল যখন গর্জায়, তখন খুব গর্ব হয়।’’

গত ৪২ বছরে ৬৬৬০ বার স্টার্টারের কাজ করেছেন নারায়ণবাবু। এখনও তিনি স্বপ্ন দেখেন, ‘১০ হাজার’-এর ফলক ছোঁয়ার স্বপ্ন।

নারায়ণচন্দ্র দেব Run Sprint স্টার্টার দাদা Starter
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy